আন্দোলন হলে যাঁদের লাভ

মজার সবকিছু March 13, 2017 1,376
আন্দোলন হলে যাঁদের লাভ

বাংলাদেশে আন্দোলন খুব জনপ্রিয় একটা শব্দ। পরিবার থেকে শুরু করে রাজনীতির ময়দান—সুযোগ পেলে সব জায়গায় আমরা আন্দোলন করি। কখনো যৌক্তিক, আবার কখনো অযৌক্তিক কারণে এই আন্দোলনগুলোর ফলাফল যা-ই আসুক না কেন, সমাজের কয়েক শ্রেণির মানুষের কিন্তু খুব ফায়দা হয়। যদিও তারা আন্দোলনের ধারেকাছেও থাকেন না। প্রিয় পাঠক, আসুন কাল্পনিক তদন্তের মাধ্যমে দেখে নিই যে আন্দোলন করলে কাদের কাদের লাভ হয়!


রিকশাওয়ালা

দেশে আন্দোলন শুরু হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন রিকশাচালকরা। ভাবটাই এমন, তখন তাঁরা মুকুটহীন সম্রাট। কেননা, অন্য বড় যানবাহন যখন আন্দোলনে গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হবে ভেবে ঝুঁকি নিতে সাতপাঁচ ভাবে, ঠিক তখনই ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে রাস্তায় থাকেন রিকশাচালকরা। বুঝতেই পারছেন, ফাঁকা মাঠে গোল দিতে তখন তাঁরা ভাড়াটাও অনায়াসে দু-তিন গুণ বাড়িয়ে হাঁকান। আর কোনো উপায় না পেয়ে যাত্রীদেরও সেটা গোনা ছাড়া উপায় থাকে না।


রম্যলেখক

রম্যপাতার সম্পাদক সাহেব সাধারণত নতুন নতুন আইডিয়া তৈরি করার জন্য রম্যলেখকদের চাপ দেন। এদিকে বিভাগীয় সম্পাদকের চাপ লেখকরা না পারেন সইতে, না পারেন বলতে। কিন্তু যখনই দেশে আন্দোলন শুরু হয়, তখন রম্যলেখকদের আকাশে অনেকটা আশীর্বাদ নেমে আসে। কেননা, এই আন্দোলনকে পচিয়ে একের পর এক রম্য লিখে নিজেদের ব্যাংক ব্যালান্স ভারি করা যায় তখন। তখন অবশ্য তাঁদের ভাবটাও কয়েক ডিগ্রি বেড়ে যায়।


ফেসবুক সেলিব্রেটি

আগে বাংলাদেশে কাকের চেয়ে কবি বেশি ছিল, আর এখন বেশি ফেসবুক সেলিব্রেটি। এই ফেসবুক সেলিব্রেটিরা নানা সময় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ইস্যু তৈরি করে পক্ষে-বিপক্ষে লিখে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছেন। কেননা, আর কেউ থাকুক আর না থাকুক, তাঁরা চব্বিশ ঘণ্টা ফেসবুকে থাকবেনই। সে জন্য দেশে আন্দোলন হলে তাঁদের লাভ হয়। তাঁরা ইস্যু পান। তারপর সেটা নিয়ে প্যাঁচপ্যাঁচ করেন। যে যত বেশি প্যাঁচপ্যাঁচ করবেন, তাঁর তত বেশি ফলোয়ার বাড়ে। অবশ্যি সে জন্য স্রোতে কথা বলতে হয়।


বুদ্ধিজীবী

টিভি টক শোতে ইদানীং প্রচুর বুদ্ধিজীবী অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা জাতিকে লাখ লাখ বুদ্ধি দেন। যদিও তা কেউ দেখে কি না, তাঁরা সে খবর রাখেন না। কোনোরকম একটা আন্দোলন দেশে শুরু হলে বুদ্ধিজীবীরা নিজেরাই দুই ভাগে ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে প্যাঁচাল শুরু করে টক শো গরম করে তোলেন। সঙ্গে টিআরপির ব্যাপারটা তো থাকেই!