আপনার রক্ত ময়লা হয়ে গেছে নাকি? তাহলে কিন্তু বিপদ!

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস March 13, 2017 1,938
আপনার রক্ত ময়লা হয়ে গেছে নাকি? তাহলে কিন্তু বিপদ!

আমাদের শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি যদি ঠিক না থাকে, তাহলে শরীর ঠিক থাকবে কী করে বলুন! তাই তো রক্তকে সব সময় পরিষ্কার রাখাটা আমাদের প্রথম কর্তব্য। রক্ত যে আর শুদ্ধ নেই, তা অনেক ভাবে বোঝা সম্ভব, যেমন আপনার কি খুব ব্রণ হয়? এও কিন্তু রক্ত দূষিত হয়ে যাওয়ার একটা লক্ষণ।


এছাড়া সোরিয়াসিস নামে এক ধরনের ত্বকের রোগও কিন্তু রক্ত ময়লা হয়ে গলেই হয়ে থাকে। এখানেই শেষ নয়, রক্ত যেহেতু শরীরের প্রতিটি কোণায়, প্রতিটি অংশে পৌঁছে যায়, তাই রক্ত যদি ঠিক না তাকে তাহলে কিন্তু একে একে শরীরের বাকি অংশেও এর প্রভাব পরতে শুরু করে। তাই সাবধান!


চিন্তা নেই, এই প্রবন্ধে এমন কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হল, যা মেনে চললে রক্ত ময়লা হয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগই পায় না। আর একবার রক্ত বিশুদ্ধ হয়ে গেলে দেখবেন ত্বকের রোগ তো দূরে থাকবেই, সেই সঙ্গে শরীরও একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে।


তাহলে অপেক্ষা কিসের চলুন জেনে নেওয়া যাক রক্ত বিশুদ্ধ করার ঘরোয়া উপায়গুলি সম্পর্কে।


▶লেবু:

শরীরে ক্ষতিকর টক্সিনের মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে, তত রক্ত ময়লা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। লেবু নানাভাবে শরীর থেকে এইসব বিষগুলিকে বের করে দেয়। ফলে রক্ত খারাপ হয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগই পায় না। এখানেই শেষ নয়, লেবুর মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরে উপস্থিত বিশেষ কিছু এনজাইমের কর্মক্ষতা বৃদ্ধি করে। এই এনজাইমগুলি শরীরে উপস্থিত টক্সিনগুলিকে দ্রবণীয় উপাদানে পরিবর্তিত করে দেয়। ফলে সেগুলি সহজে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। আর যেমনটা আগেই বলেছি, শরীরে টক্সিনের মাত্রা যত কমবে, তত রক্ত বিশুদ্ধ থাকবে।


▶গুস বেরি:

রক্ত শুদ্ধ করতে এই ফলটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতিতেও এই ফলটি দারুন কাজে আসে। ফলে সার্বিকভাবে যদি শরীর সুস্থ রাখতে চান তাহলে প্রতিদিন খেতেই হবে এই গুস বেরি।


▶আদা:

এই মশলাটি সেই আদি কাল থেকে নানা রোগের চিকিৎসায় ব্য়বহৃত হয়ে আসছে। এতে কার্কিউমিন নামে এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রচুর মাত্রায় রয়েছে, যা রক্তকে শুদ্ধ করার পাশাপাশি একাধিক রোগের প্রকোপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো প্রতিদিন যদি অল্প করে হলুদ খাওয়া যায়, তাহলে কিডনি এবং হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, ফলে শরীর থেকে টক্সিন বেশি মাত্রায় বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।


▶গাজর:

রক্ত ময়লা হয়ে যাওয়ার কারণে সরিয়াসিস সহ যেসব ত্বকের রোগ হয়, সেগুলির প্রকোপ কমাতে গাজরের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। প্রসঙ্গত, গাজরে রয়েছে গ্লটেথিয়ান নামে একটি উপাদান, যা একপ্রকার ক্লিনসিং এজেন্ট, অর্থাৎ রক্তকে পরিষ্কার করতে এই উপাদানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া এই সবজিটিতে রয়েছে বিপুল পরিমাণে ভিটামিন- এ, বি, সি এবং কে এবং পটাশিয়াম। এই সবকটি উপাদানই শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে দারুন কাজে আসে। তাই যখনই বুঝবেন রক্ত ময়লা হতে শুরু শুরু কেরেছে, গাজর খাওয়া শুরু করবেন, দেখবেন দারুন ফল পাবেন।


▶ব্রকলি:

এতে প্রচুর মাত্রায় ডিটক্স এজেন্ট বা ময়লা বের করে দেওয়ার উপাদান রয়েছে। তাই তো প্রতিদিন এই সবজিটি খেলে রক্ত ময়লা হয়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। প্রসঙ্গত, রক্তের কোণায় কোণায় লুকিয়ে থাকা ময়লাকে টেনে বার করতে ব্রকলি দারুন কার্যকরী, তাই তো রক্ত বিশুদ্ধ করতে ব্যবহৃত ঘরোয়া চিকিৎসাগুলির মধ্য়ে এটি এত জনপ্রিয়।


▶করলা:

আমার মতই আপনারা নিশ্চয় ছোট বেলা থেকে শুনে আসছেন তেঁতো খেলে শরীর ভাল থাকে! একথাটি বাস্তবিকই সত্যি যে করলা জাতীয় তেঁতো খাবার খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়, ফলে নানা রোগের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর বেঁচে থাকে। প্রসঙ্গত, করলায় প্রচুর মাত্রায় ডিটক্সিফাই এজেন্ট রয়েছে, যা রক্ত থেকে ক্ষতিকর উপাদানকে টেনে টেনে শরীর থেকে বার করে দেয়। ফলে সোরিয়ায়িস এবং ব্রণর মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ যেমন কমে, তেমনি নানা ধরনের জটিল শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও কমে।


▶বিটরুট:

এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ, যা শরীরকে নানা ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, লিভারের কর্মক্ষমতা বারাতেও বিটরুট দারুন কাজে আসে। আর একবার লিভার চাঙ্গা হয়ে গেলে শরীর থেকে বিনা বাঁধায় ক্ষতিকর সব বিষাক্ত উপাদানগুলিও খুব সহজে বেরিয়ে যায়।


সূত্রঃ বোল্ডস্কাই