স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে করণীয়

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস February 28, 2017 1,219
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে করণীয়

চুলের যত্ন নিতে হয় সারা বছরই, কিন্তু এ ফাল্গ–নে একটু বেশি। কারণ এ সময় চুল হয়ে যায় খসখসে এবং চুল পড়ে যায়। তাই এমন যত্ন নেয়া উচিত যা চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নরম রেশমি হবে। নাগর মোথা বাটা ২ টেবিল চামচ, ১ টেবিল চামচ তিলের তেল, ১টি ডিম মিশিয়ে ২০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার দিতে হবে।


এ সময় প্রচুর খুশকির সমস্যা তাই লেবুর বাকলসহ বাটা ১ টেবিল চামচ সরিষার তেল ও টক দই ১ কাপ ভালো করে মিশিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন। চুলের আগা ফেটে যাওয়া বড় সমস্যা। তাই লেভেন্ডার ওয়েল ২ টেবিল চামচ, ১ কাপ পাকা পেঁপে ও ১টি ডিম দিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে দিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে নিতে হবে।


এই সময়ে চুলের ডগা ফেটে যাওয়া আরেকটা বড় সমস্যা। কারণ স্ক্যাল্পের ময়েশ্চারাইজারের লেবেলটা খুব কমে যায়। এর প্রধান কারণ সানবার্ন। অতিরিক্ত রোদের তাপেও চুলের ডগা ফেটে যায়। সঙ্গে সঙ্গে চুলের উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। তাই প্রথমেই ময়েশ্চারাইজারের লেবেটা ঠিক রাখতে হবে।


এখন ঘরে বসেই প্রাকৃতিক উপায়ে যত্ন নিলে ময়েশ্চারাইজড করা যায়। যেমন- গ্লিসারিন কয়েক ফোঁটা, পাকা কলা ও পেঁপে, মেথিবাটা, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে চুলে ২৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এরপর কন্ডিশনার লাগাতে হবে।


অনেকের আবার মাথার খুশকির প্রবণতা বেশি। সেই সঙ্গে মরা চামড়া, ছোট ছোট গোটাও হয়ে থাক। এ সব সমস্যার জন্য নিমপাতা। নিমপাতা সেদ্ধ পানি খুব উপকারী। যাদের চুল বেশি ঘামে তাদের সাধারণত এ সব সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।


তাই ১ কাপ পানিতে আধা কাপ নিমপাতা বাটা মিশিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে ছেঁকে নিতে হবে। এরপর ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে আইসকিউব করে রাখুন। এই আইসকিউব চুলে বিলি কেটে আস্তে আস্তে ঘষে লালিয়ে নিন।


চুলের খুশকির কারণে অনেকের কপালে, পিঠে ও গলায় ব্রণও হয়ে থাকে। তাই আইসকিউব চুলের পাশাপাশি কপাল, পিঠ ও গলায় লাগাতে হবে। এতে করে খুশকি কমে যাবে এবং ত্বকের ব্রণও কমে যাবে। এরপর একটা প্যাক লাগাতে হবে।


প্যাক : রিঠা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই রিঠা একটা বাটিতে পানি নিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। এরপর রিঠার বিচি ফেলে ভালোভাবে কোল্ড করে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি ভালো করে মাথা ও চুলে লাগিয়ে নিন।


এটা চুলের স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে প্রোটিনও পাওয়া যায়। আর এই মিশ্রণটি ঘন করার জন্য মুলতানি মাটি ও শঙ্খের গুঁড়া মিশিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট মাথায় রেখে ধুয়ে ফেলুন।


এই প্যাকটি যাদের মাথায় ফুসকুড়ি, গোটা বেশি হয় তাদের জন্য খুবই উপকারী। এ সব ট্রিটমেন্ট ঘরে বসে একটু সময় নিয়ে শুরু করলে চুল পড়া রোধ, খসখসে ভাব দূর এবং চুলের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পেয়ে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।


এ ছাড়া আমলকি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে প্রচুর কাজ করে। যাদের চুল খুব বেশি পড়ে তাদের জন্য খুবই উপকারী। এ ছাড়া জিংকের অভাবে চুল বেশি পরিমাণে পড়ে। এ ছাড়া খাবারের প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। শাফিতে প্রচুর পরিমাণে জিংক আছে। ৩ মাস পরপর শাফি খেলে জিংকের ঘাটতি কমে আসবে।


এ ছাড়া মটরডাল, চিড়া, কচুরলতি আয়রনের অভাব পূরণ করে। মেয়েদের পিরিয়ডিক্যাল সমস্যার কারণেও চুলের ক্ষতি হয়। তাই সপ্তাহে একদিন যদি কচুরলতি খাবারের রুটিনে আনা হয় তাহলে আয়রনের ঘাটতি কমে আসবে। তাই খাবারের ব্যাপারেও যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে।


বেশি পরিমাণে পানি পান করুন। ভাজা-পোড়া খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই সৌন্দর্যের মূল কথা। সব সময় নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। পরিষ্কার রাখলেই চুলের নানা সমস্যা কমে যায় অনেকটাই। সেই সঙ্গে চুলের রুক্ষতা কমে গিয়ে আপনি পাবেন ঝলমলে আর সুন্দর চুল।