ত্বকের যত্নে প্রয়োজনীয় খাবার

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস February 22, 2017 737
ত্বকের যত্নে প্রয়োজনীয় খাবার

নিজেকে সুন্দর, পরিপাটি স্মার্ট করতে কার না মন চায়। বিধাতার দেয়া জীবন-যৌবনকে আরও দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এ চেষ্টায় পুরুষের তুলনায় নারীরাই এগিয়ে। খালি পেটে মেথির শরবত, ভরা পেটে কোথিলার পানি, বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের বিউটি প্রোডাক্ট কোনো কিছুই বাদ যায়নি।কিন্তু ফল উল্লেখ করার মতো তেমন কিছুই না। বেড়েছে শুধু হতাশা।


প্লানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটের সহযোগী গবেষণা পরিচালক মোস্তফা ফারুক আল বান্না বলেন, সঠিক নিয়ম মেনে চললে কঠিন সমস্যার সমাধান হতে পারে। আমরা মুখে বা ত্বকে বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। এবার ত্বকের যত্নে ভিন্ন রকম উপায় অবলম্বন করে দেখা যাক। মুখে বিভিন্ন খাবার জিনিস লাগানোর বদলে এবার খেয়ে দেখুন। উপকার হাতে হাতে পাবেন। কিন্তু কী কী খাবেন। সে তালিকা নিয়েই আজকের এ আয়োজন।


লাল ক্যাপসিকাম : রান্না করা লাল ক্যাপসিকাম কিংবা কাঁচা যে কোনোভাবে খেতে পারেন। এতে ৩০ ক্যালোরি রয়েছে। প্রতিদিনের ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণ করে লাল ক্যাপসিকাম। এ ছাড়া এতে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন বি-৬ আছে। এতে থাকা ক্যারোটিনেড ত্বকের কুঁচকে যাওয়া রোধ করে ও ত্বকের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে। ফলে আপনাকে অনেক বেশি সতেজ ও সজীব দেখাবে।


ডার্ক চকোলেট : চকোলেট-প্রিয় মানুষের কাছে বোধ হয় এটাই সবচেয়ে সুখবর হতে পারে। প্রতিদিন ডার্ক চকোলেট খান। এতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্টস, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফ্লেভানলস থাকে। ডার্ক চকোলেটের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের রুক্ষতা দূর করে উজ্জ্বল করে তোলে। সূর্যের প্রখর আলট্রাভায়োলেট রশ্মির হাত থেকেও রক্ষা করে। চকোলেটে থাকা কোকোয়া ত্বকের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে।


স্যামন মাছ : দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ ও হতাশা থেকে দূরে থাকার জন্য সেরা খাদ্য স্যামন মাছ। আর মন সুস্থ থাকলেই শরীর সুস্থ থাকে এ কথা কে না জানে। এ ছাড়া স্যামনে প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।ভিটামিন ডিতে হৃৎপিণ্ড, হাড়, কোলন এবং স্নায়ুকে সুস্থ রাখে। স্যামন মাছ খেলে কোলনে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও বর্তমান যা আপনার ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট করে। স্যামন খেলে চুলও ঘন হয়।


নারিকেল তেল : এতে প্রচুর পরিমাণে সম্পৃক্ত ফ্যাট থাকে। এতে থাকে লিউরিক অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন-ই। ফলে এটি খেলে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে, ত্বক নরম থাকে। ত্বক থাকে দাগমুক্ত। এ ছাড়া নারিকেল তেল খেলে ওজন কমানো যায়। নারিকেল তেলকে যদি বডি ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে ১ টেবিল চামচ নারিকেল তেল প্রতিদিন শরীরে মাখুন।


গ্রিন টি : সাধারণত সবাই দুধ চা খেতেই পছন্দ করেন। এবার গ্রিন টি খেয়ে দেখুন। এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, অ্যামাইনো অ্যাসিড ও লিথানাইন রয়েছে। এগুলো শরীরকে খুবই রিল্যাক্স করে ও স্ট্রেস দূর করে। যার প্রভাব আপনার ত্বকে পড়বেই। এ ছাড়া গ্রিন টি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।


গাজর : গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। আর এ ভিটামিন ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এ রোগে একটিভ কোষগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।


পেঁপে : যারা ওজন কমাতে চান বেশি বেশি পেঁপে খান। পেঁপে ওজন কমানোর সেরা উপকরণ। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ইত্যাদি বিদ্যমান যা আপনার ত্বককে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করবে। পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকে, তাই ওজন কমাতে সফল উপায় পেঁপে। প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে ৩৯ ক্যালোরি রয়েছে এবং এটি সম্পূর্ণরূপে কোলেস্টেরলমুক্ত।


শাক : আপনার প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় শাক-পাতা থাকা বাধ্যতামূলক। শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, সি, এ, উদ্ভিদ প্রোটিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উপকরণ, ক্লোরোফিল, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এগুলো আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলবে। প্রতিদিন কিছু না কিছু শাক খান। শাকের পুষ্টিগুণ আপনার ত্বককে লাবণ্যময় করে তুলবে।


ইতিকথায় বলতে হয়- রূপ, যৌবন, সৌন্দর্য, লাবণ্য সবই বিধাতার দান। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জীবন অতিবাহিত করলে সহজে সুস্থ ও সুন্দর থাকা যায়। শরীর মন সুস্থ ও সুন্দর রাখতে আমাদের অবশ্যই যথাযথ নিয়ম মেনে ও চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী চলতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মুক্ত বাতাস গ্রহণ করলে জীবন সজিব ও শরীর সতেজ থাকবে।


আপনার সব চাওয়া-পাওয়ার জন্য স ষ্টার সাহায্য প্রার্থনা করুন। জীবনের সব ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি মেনে চললে সুখ ও সৌন্দর্য আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।