স্কুলজীবনে ক্লাস ক্যাপ্টেনের কিছু কমন বৈশিষ্ট্য

মজার সবকিছু February 13, 2017 3,468
স্কুলজীবনে ক্লাস ক্যাপ্টেনের কিছু কমন বৈশিষ্ট্য

স্কুলজীবনে স্যারদের পরেই আতঙ্কের নাম ক্লাস ক্যাপ্টেন। এরা বন্ধু হলেও নিজেকে সৎ ও যোগ্য নেতা হিসেবে প্রমাণ করতে সর্বদাই মরিয়া। প্রত্যেক ক্লাস ক্যাপ্টেনই কিছু কমন বৈশিষ্ট্য নিয়ে স্কুলজীবনে বাকিদের জীবন প্রায় বরবাদ করে দেয়। চলুন দেখে নেই ক্লাস ক্যাপ্টেনদের কমন কর্মকাণ্ডের তালিকা-


l ক্লাসের সামনের বেঞ্চের কোনার দিকের সিটটা তাদের অঘোষিত সম্পদ। যত পরেই ক্লাসে আসুক, একদম সামনের বেঞ্চের ওই সিটটাতে ক্লাস ক্যাপ্টেনরাই বসবে।


l ক্লাস ক্যাপ্টেনরা ‘নাম লেখা’র ব্যাপারে নিজের ভাইকেও চেনে না। স্যার না থাকা অবস্থায় কোনো ছেলে একটা কথা বললেও বিপদ। বেচারার নাম খাতায় লিখে রাখতে ক্লাস ক্যাপ্টেনের হাত একটুও কাঁপবে না। আর স্যার আসামাত্রই সেই কাগজ হস্তান্তর করতেও এরা সময় নেয় না।


l ক্লাসের ফাঁকে কেউ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে চাইলেই এদের শ্রবণজনিত সমস্যা দেখা দেয়। শুনেও শোনে না, বুঝেও বোঝে না। অনেকক্ষণ পর হয়তো গম্ভীর গলায় বলে, ‘সিটে গিয়ে বস, বের হতে দেওয়া যাবে না। বের হলেই নাম লিখে দেব।’


l কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এদের পেলে চাকরি দিয়ে দিত। কারণ, এরা ব্যাগ চেক করতে পটু। ব্যাগে কোনো বন্ধু ফোন নিয়ে এসেছে কি না, পাঠ্যবই বাদে কোনো গল্প-উপন্যাসের বই আছে কি না—এসব পরীক্ষা করে সুনির্দিষ্ট অপরাধী চিহ্নিত করতে এদের জুড়ি মেলা ভার। আর তেমন কাউকে পেলে তো কথাই নেই; শ্রেণিশিক্ষকের হাতে সোপর্দ করার দায়িত্বটুকু পালন করা চাই-ই চাই।


l রোল কলের সময় শ্রেণিশিক্ষকের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকে ক্লাস ক্যাপ্টেন। অন্য কেউ কারও প্রক্সি দিচ্ছে কি না, তা খেয়াল করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে এরা নিজেরাই ‘ইয়েস স্যার’ বলতে ভুলে যায়!


l টিফিন আওয়ারের পর ক্লাস করতে ইচ্ছে করে না অনেকেরই। তাই কেউ কেউ বিরতির সময় দেয়াল টপকে স্কুল পালায়। ওই অভাগাদের নাম ক্যাপ্টেন সাহেব বিরতির আগেই টুকে রাখে। অভিজ্ঞতার আলোকেই ক্যাপ্টেনরা জানে, ঠিক কোন কোন ছেলে টিফিন আওয়ারে স্কুল পালায়।


l ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ক্রিকেট, ফুটবলের দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে এরা কিছুটা হলেও স্বজনপ্রীতি দেখায়। কাছের বন্ধুদের নাম রাখে তালিকার ওপরের দিকে। অথচ ওই বন্ধুরা হয়তো ক্রিকেট খেলার চেয়ে ফেসবুকিংয়েই বেশি পারদর্শী।


l কোনো অনুষ্ঠানের জন্য টাকা তোলার দায়িত্ব পড়ে ক্লাসের ক্লাস ক্যাপ্টেনদের ওপর। এ ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে বেঁচে যাওয়া টাকা ক্লাস ক্যাপ্টেনদের পকেটেই ঢোকে। স্কুল শেষে সেই টাকা দিয়ে এরা দিব্যি ঝালমুড়ি কিনে খায়।


l কিছু স্কুলে কর্তৃপক্ষ টিফিন দেয়। সেটা বণ্টন করার দায়িত্ব পড়ে ক্লাস ক্যাপ্টেনের ওপর। এরা অতিশয় সৎ হলেও বন্ধুর নামে নেওয়া টিফিন দিয়ে নিজের উদর পূর্তি করার শপথ নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসে।


l ডাস্টার দিয়ে বোর্ড মোছার ক্ষেত্রে ক্যাপ্টেনরা প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে। উচ্চতায় খানিকটা ছোট হলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বোর্ডের সবটুকু লেখা মুছে ঝকঝকে করে এরা সবাইকে দেখিয়ে দেয়, ক্লাস পরিচ্ছন্ন রাখতে এরা কতটা নিষ্ঠাবান।


l ভারোত্তোলনে এদের আলাদা করে কোনো ব্যায়াম করতে হয় না। প্রতিটি ক্লাসের শুরুতে এরা সবার বাড়ির কাজ তুলে স্যারের ডেস্কে জমা দেয়। এর ফলে প্রতিদিন ভারোত্তোলনের মতো ব্যায়ামও হয়ে যায় এদের।


l কষ্টও আছে ক্লাস ক্যাপ্টেনদের। নিজে সামনের বেঞ্চে বসে বলে পেছনে বসা কাছের বন্ধুদের দুষ্টামিতে অংশ নিতে পারে না তারা।


তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট