শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে চাইলে সাতটি শব্দ ব্যবহার করবেন না

লাইফ স্টাইল February 11, 2017 1,121
শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে চাইলে সাতটি শব্দ ব্যবহার করবেন না

দুনিয়া ক্ষমতা ধারণ করে। আপনি প্রতিদিন যেসব শব্দ ব্যবহার করেন এর মধ্যে এমন কিছু শব্দ থাকে যেগুলো সবচেয়ে শক্তিশালী। এই শব্দগুলি আপনি যে বার্তাটি দিতে চান এবং যে অভিপ্রায় প্রকাশ করতে চান তাকে সহজেই এবং আপনার অজান্তেই নষ্ট করে দিতে পারে। শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের লোকরা জানেন যখন ভাষার ক্ষেত্রে কমই বেশি।


এখানে এমন সাত ধরনের শব্দের উল্লেখ করা হলো যেগুলোর ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে আপনি আপনার ব্যক্তিত্বের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন।


১. 'শুধু' (রক্ষক শব্দ)

'শুধু' শব্দটি এর নিজের পেছন যে অভিপ্রায় বা বিষয়বস্তু অনুসরণ করে আসে তা নষ্ট করে। আর এই শব্দটি আপনি যা অর্জন করতে চান তার আকাঙ্ক্ষাকে নরম করে আনে। আপনি যখন 'আমি শুধু আমার…' এভাবে কোনো বিষয়ের কথা বলেন, তখন আপনি সে বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করে তোলেন।


২. 'খুব', 'একেবারে' ও 'পুরোপুরি' (নাটকীয় শব্দ)

এই ধরনের শব্দ আপনি যে বিশেষ্যটি বর্ণনা করেন বা সবার দৃষ্টিগোচর করতে চান তাতে কোনো অতিরিক্ত মূল্য যোগ করে না। আপনার বলার এমন দরকার নেই- 'আমি খুবই উৎফুল্ল'। তারচেয়ে বরং 'আমি উৎফুল্ল' বললেই যথেষ্ট। অতিরিক্ত বিশেষণ ব্যবহার করলে অপ্রয়োজনীয় নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়। আপনি যখন কম শব্দ ব্যবহার করবেন তখন প্রতিটি শব্দ আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং অন্যদের কাছে আরো বেশি মূল্যায়ন পাবে।


৩. 'আমার ধারণা…' বা 'তর্কসাপেক্ষে' (রক্ষক শব্দ)

আপনি যে প্রতিটি চিন্তা প্রকাশ করেন তার সবক'টিই আপনার মতামত। সুতরাং কোনো মতামত প্রকাশ করার আগে আপনার বলার দরকার নেই 'আমার ধারণা'। 'শুধু', 'আমরা ধারণা' ও 'তর্কসাপেক্ষে' এগুলো হলো প্রতিরক্ষামূলক শব্দ। এসব শব্দ ব্যবহার করলে লোকে ভাববে আপনি হয়ত ভুল বলতে পারেন কিন্তু তাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ আপনি যে মতামত প্রকাশ করছেন তা শুধুই আপনার নিজস্ব ভাবনা মাত্র। এটা হলো নিজেকে হামলার হাত থেকে রক্ষার একটি কৌশল। অন্যরা নিশ্চয় কোনো ভিন্ন মত ধারণ করতে পারেন।


আপনি যেসব শব্দ ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন সেসব হয়ত আপনার ক্ষমতাকে হেয় করছে। আপনি আপনার মতের ধারক। সুতরাং নিজের কর্তৃত্ব খর্ব করবেন না। এ জন্য নিজের মতামত কোনো দ্বিধা ছাড়াই প্রকাশ করুন। এমনকি অন্যরা এতে দ্বিমত পোষণ করলেও ভয় পাবেন না। এতে আপনি বরং আরো বেশি সম্মান পাবেন।


৪. 'আমি চেষ্টা করব' এবং 'বিষয়টি নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন হবেন না' (সক্ষমতা প্রকাশক শব্দ)

আপনি কোনো কিছু করার চেষ্টা করবেন বলার মানে হলো আপনি নিজের সক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত নন। কিন্তু আপনি যদি বলেন আপনি কোনো কিছু করবেন তাহলে লোকে জানবে যে আপনি চেষ্টাও করবেন। সুতরাং লোককে বলেন আমি চেষ্টা করব তাহলে লোকে স্নায়বিক দৌর্বল্য অনুভব করবে।


আবার আপনি যখন অতি বেশি আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন এবং বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন হবেন না' তখন আপনি আসলে কী করেন সে ব্যাপরে লোকে অন্ধকারে নিপতিত হয়। আর এর মধ্য দিয়ে এমন মনোভাবও প্রকাশ হয় যে আপনি লোককে হেয় করছেন এবং ভাবছেন তারা হয়ত কোনো কিছু করতে পারেন না।


৫. 'দুঃখিত' (ক্ষমা প্রার্থনার শব্দ)

আপনি যত বেশি ক্ষমা চাইবেন ততই আপনার ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি আরো দুর্বল হয়ে পড়বে। সুতরাং 'দুঃখিত' শব্দটি যত কম সম্ভব ততই কম ব্যবহার করুন। শুধু এমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করুন যা পেছনে সরাসরি আপনার ভূমিকা ছিল। কিন্তু আপনার নিয়ন্ত্রণে ছিল না এমন কোনো ঘটনার জন্য 'দুঃখিত' বলতে যাবেন না।


উদাহরণত, অফিসের মিটিংয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় দুর্ঘটনার কারলে আপনার দেরি হয়ে গেছে। অফিসে পৌঁছে আপনার দেরি হওয়ার কারণটি ব্যাখ্যা করে বলুন। কিন্তু এর জন্য আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে না।


৬. 'মতো', 'যাই হোক', 'ইত্যাদি' এবং '…এবং তাই এবং তাই ঘোষণা' (পরিপূরক শব্দ)

এই ধরনের শব্দ যত কম ব্যবহার করবেন তত ভালো। এগুলো হলো সচরাচর পরিপূরক শব্দ। লোকে এসব শব্দ ব্যবহার করে যখন তারা পরে কী বলবেন সে ব্যাপারে ভাবার চেষ্টা করেন। এসব শব্দ আপনার বক্তব্যকে হালকা করে দেয়। তারচেয়ে বরং এক মুহূর্ত থেমে চিন্তা করুন এবং চিন্তাগুলো গুছান।


৭. 'বাস্তবে' ও 'স্পষ্টত' (উচ্চতর শব্দ)

এর মানে হলো আপনি ভাবছেন অন্যরা ইস্যুটি বা পরিস্থিতি বুঝতে পারছে না। আর আপনিই সঠিক। বা আপনি যা বুঝছেন অন্যরা তা বুঝতে পারছে না। এতে লোকে জ্বালাতন বোধ করতে বা হতাশ হতে পারেন এবং আপনাকে অসম্মান করতে পারেন।