শরীরের যে ১০ লক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস February 7, 2017 1,020
শরীরের যে ১০ লক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি

মানবদেহ এক বিশেষ ধরনের যন্ত্র মাত্র। আধুনিক যেকোনো যন্ত্রের চেয়েও অনেক বেশি বাস্তববুদ্ধি সম্পন্ন এই যন্ত্র তার অভ্যন্তরীণ যেকোনো ধরনের সমস্যার কথা বিশেষ বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে জানান দেয় প্রতিনিয়তই।


কিন্তু আমরা প্রায়ই আমাদের দেহযন্ত্রের সেইসব সতর্কতা সংকেত এড়িয়ে যাই তাচ্ছিল্যভরেই। এই এড়িয়ে যাওয়া ডেকে আনতে পারে ভয়ংকর বিপদ। তাই সময় থাকতেই সচেতন হওয়া জরুরি। এজন্য জানা দরকার সেইসব সতর্কতা লক্ষণ সম্পর্কে।


চোখের নিচের কালো দাগ : পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে পারে। ডাক্তাররা প্রতিরাতে অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে চোখের নিচের কালো দাগের আরেকটি কারণ হতে পারে ‘অ্যনেমিয়া’। অর্থাৎ যখন আপনার শরীর প্রয়োজন মাফিক রক্তকোষ তৈরি করতে পারে না, তখন চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে।


আঙুলের রঙ পরিবর্তন : যদি আপনি আঙুলের রঙ যদি প্রায়ই পরিবর্তিত হতে দেখেন, তবে এখনই আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ এটি রেইনড্‌’স সিনড্রম এর বহিঃপ্রকাশ। অর্থাৎ যখন কম তাপামাত্রার কারণে ধমনীতে সংকোচন হয় তখনই আঙুলের রঙ প্রায়শঃই পরিবর্তিত হতে থাকে।


ঘোলা দৃষ্টি : যদি প্রায়ই চোখে ক্লান্তি অনুভূত হয় এবং একদম কাছাকাছি দূরত্বেও দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে তবে এটা নিশ্চিতভাবে ‘স্বল্পদর্শিতা’ অথবা ‘বিষমদৃষ্টি’-র লক্ষণ। এক্ষেত্রে দেরি না করে চোখের ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।


চোখের কোণে পানি আসা : উজ্জ্বল সাদা আলোর প্রভাবে কিংবা হঠাৎ করেই চোখের কোণে যদি বিন্দু বিন্দু পানি জমে এবং এই অবস্থা যদি এক সপ্তাহ বা তার অধিককাল সময় ধরে চলতে থাকে তবে এটা হতে পারে চোখে ছানি পড়া কিংবা চোখের অন্য কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ। এক্ষেত্রেও যতটা সম্ভব দেরি না করে চোখের ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।


পেটের ভেতরে শব্দ হওয়া : অন্ত্রে খাদ্য পরিপাকের সময় পেটের ভেতরে শব্দ হতে পারে। যদি মাঝে মাঝে এমন শব্দ শোনা যায় তবে চিন্তার কিছু নেই। তবে যদি প্রায়ই এমন শব্দের সঙ্গে পেটে ব্যথাও অনুভূত হয় তবে অন্য কোনো কিছু না ভেবে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।


ত্বকে ফোসকা পড়া : ত্বকের ছোট ছোট ব্রণের মতো ফোসকা পড়াকে ভিটামিনের অভাব বলে গণ্য করা হয়। সুষম খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। তবে ফোসকার ভেতরে চুলকানি অনুভূত হলে সেটা ফাংগাল ইনফেকশনের কারণও হতে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


ঘ্রাণশক্তির আংশিক হ্রাস : বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত ঘ্রাণশক্তির প্রখরতা কমে যাওয়া স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলাফল। এটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে তরুণ বয়সে যদি এমনটা হয় তবে তা হতে পারে কোনো ভাইরাসজনিত আক্রমন অথবা ঠান্ডার কারণে। এক্ষেত্রেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই শ্রেয়।


চোখের পাতা পিটপিট করা : দীর্ঘ সময় ধরে চোখের পাতা পিটপিট করার কারণ হচ্ছে, দীর্ঘক্ষণ ধরে চোখের বিশ্রামহীনতা। পরিষ্কার তুলার প্যাড ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে তা দিয়ে চোখ মুছে নিলে এই সমস্যার উপশম হয়। যদি এতে কাজ না হয় এবং পিটপিট করা না থামে তবে একজন নিউরোপ্যাথলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ক্রমাগত এমন উপসর্গ স্নায়ুতন্ত্রে মারাত্মক সমস্যার লক্ষণ।


কানে শোঁ শোঁ করা : কানে শোঁ শোঁ শব্দ করার উপসর্গটিকে অনেকেই তেমন গুরুত্ব দিতে চান না। তারা মনে করেন, এটা তাদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঝুঁকির লক্ষণ না। কিন্তু এটি একটি ভয়ানক রোগের উপসর্গ। তবে ক্রমাগত এমন হওয়াটা উচ্চ কোলাহলপূর্ণ কোনো জায়গায় নিয়মিত কাজ করার প্রভাবে হতে পারে।


কাঁধের বন্ধনীর অবস্থান চ্যুতি : কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের কাঁধ যেন সঠিক অবস্থানে নেই। জন্মগতভাবে নমনীয় লিগামেন্টের অধিকারী হওয়া কিংবা স্পোর্টস ইনজুরির কারণে এমন হতে পারে। এমন অবস্থা দেখা গেলে তার প্রতিকার গ্রহণ করা উচিত। অন্যথায় ভবিষ্যতে বড় ধরনের শারীরিক বিকলঙ্গতা ঘটতে পারে।