সপ্তাহে ৩ বার ফুলকপি খাবেন কেন?

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস February 6, 2017 1,140
সপ্তাহে ৩ বার ফুলকপি খাবেন কেন?

ফুলকপি শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি; যা রান্না কিংবা কাঁচা যে কোন প্রকারে খাওয়া যায়। সবজিটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমন উপকারীও। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রভৃতি রয়েছে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।


সম্প্রতি গবেষকরা বলেছেন, ফুলকপি খেলে মূত্রথলির ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমে যায়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের রসওয়েল পার্ক ক্যান্সার ইনস্টিটিউট সপ্তাহে অন্তত ৩ বার ফুলকপি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।


• এবার জেনে নিন সপ্তাহে ৩ বার ফুলকপি খাবেন কেন...


ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

ক্যান্সার প্রতিরোধে ফুলকপির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এটি ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে। এছাড়া পাকস্হলী, প্রোষ্টেট, স্তন ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে ফুলকপি।


রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

ফুলকপিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফুলকপি খাওয়া প্রয়োজন। তবে ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, প্রোটিন ও পটাসিয়াম থাকায় এটি কিডনি রোগীদের জন্য উপযোগী নয়। সুতারং যারা কিডনির জটিলতায় ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফুলকপি খাবেন।


ফুসফুসকে রক্ষা করে

ফুলকপি ফুসফুস রক্ষায় সহায়তা করে। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, ভয়াবহ ফুসফুস রোগের জন্য যেসব কারণ দায়ী তা প্রতিরোধে ফুলকপি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তনালীর যে ক্ষতি হয় সবজিটি তা প্রতিরোধেও সহায়তা করে। এছাড়া ফুলকপি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।


ভিটামিন ও খনিজের ভালো উৎস

নিয়মিত ফুলকপি খেলে শরীরের পুষ্টির অভাব পূরণ হয়। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন কে, প্রোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার ভিটামিন বি৬, ফলেট, পটাশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজেরও ভালো উৎস ফুলকপি।


মস্তিষ্ক ভালো রাখে

ফুলকপিতে ভিটামিন বি রয়েছে যা মস্তিষ্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। গর্ভাবস্থায় এ সবজি একটি ভালো খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। নবজাতকের মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করতে কাজ করে সবজিটি।


হজমে সাহায্য করে

ফাইবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হওয়ায় ফুলকপি হজমে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, সবজিটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সুস্থ থাকতেও ভূমিকা রাখে।


চোখ ভালো রাখে

ফুলকপিতে ভিটামিন এ-এর পরিমাণ বেশি থাকায় চোখকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এমনকি দেহের কোথাও কেটে গেলে ফুলকপির কচি পাতার রস লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।


চুলকানি প্রতিরোধ করে

শীতকালে ঠাণ্ডায় ত্বকে লালচে হয়ে ফুলে যাওয়া এবং চুলকানি হতে পারে। সেক্ষেত্রে ফুলকপির কচি পাতা বেটে লাগালে চুলকানি ভালো হয়। এছাড়া ফুলকপিতে ভিটামিনি এ ও সি রয়েছে, যা শীতকালে জ্বর, সর্দি, কাশি প্রতিরোধ করে। এর আয়রন, পটাশিয়াম, সালফার ও ক্যালসিয়ামও শরীরের জন্য খুবই উপকারী।


দাঁতকে সুরক্ষা করে

অকালে দাঁত লালচে হয়ে যাওয়া ও দাঁতের মাড়ি দুর্বল হওয়ার হাত থেকে বাঁচায় ফুলকপি। কারণ এতে রয়েছে দাঁত-মাড়ির উপকারী ক্যালসিয়াম ও ফ্লুরাইড। উপাদানগুলো দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি ও বাড়ন্ত শিশুদের দাঁতের পূর্ণ বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


সতর্কতা

উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিসের রোগীরা নিঃসঙ্কোচে ফুলকপি খেতে পারেন। কেননা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং কোলেস্টেরল কমাতে এই সবজিটি আমাদের বন্ধু। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে; যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে বিশেষ সহায়ক। তবে যারা কিডনি ও থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ফুলকপি বেশি না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও কেউ খেতে চাইলে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।