ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ১১ টি উপায়

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস February 6, 2017 889
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ১১ টি উপায়

সারা বিশ্বে প্রতি ৪ জন মানুষের মধ্যে ১ জনের ডায়াবেটিস আছে এবং এই সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু জীবন যাত্রার সামান্য কিছু পরিবর্তনই পারে আপনার ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। চলুন তাহলে জেনে নিই সেই পরিবর্তন গুলোর বিষয়ে যার মাধ্যমে আপনি আপনার ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।


১। আপনি হয়তো ভাবছেন টাইপ ২ ডায়াবেটিস টাইপ ১ এর মত মারাত্মক সময়

এটি আসলে সত্যি নয়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।


২। অতিরিক্ত ওজন মানে শরীরের কোষে ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করছেনা

একে ইনসুলিন প্রতিবন্ধকতা বলে। নারীদের কোমরের মাপ ৩৫ ইঞ্চির বেশি এবং পুরুষের কোমরের মাপ ৪০ ইঞ্চির বেশি হলে তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শরীরের মাঝামাঝি অংশে অতিরিক্ত চর্বি জমার কারণে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতার উপর প্রভাব পড়ে।


৩। মাঝেমাঝে রক্তের চিনির মাত্রা কমতে বা বৃদ্ধি পেতে পারে

একেবারে সঠিক নিয়ন্ত্রণ বলে কিছু নেই। যদি আপনার রক্তের চিনির মাত্রা পুরুপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার ডায়াবেটিস নেই। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে সব সময় রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাটা সহজ নয়। যদি আপনার বারবার সংক্রমণের সমস্যা হয় বা বিষণ্ণতায় ভুগেন অথবা ব্রিটল ডায়াবেটিস (যা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই কঠিন) হয় যদি আপনার তাহলে রক্তের চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।


৪। মধ্যম মানের ব্যায়াম বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে

ডায়াবেটিক রোগীদের ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। ব্যায়াম করার ক্ষমতা অর্জন করলে তা ধীরে ধীরে কার্ডিভাস্কুলার স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম করুন পেশীকে শক্তিশালী করার জন্য এবং পেশীর ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।


৫। ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানুন

এই জানার ফলে আপনি আপনার সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আমরা জানি যে, অতিরিক্ত ওজন, ব্যায়াম না করা এবং ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটাতে পারে স্বাস্থ্যকর খাবার, সপ্তাহে কয়েকবার ব্যায়াম করা এবং ধূমপান বাদ দেয়া।


৬। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে যাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রবণতা থাকে তাদের রক্তের চিনির মাত্রা বেশি থাকে

ডায়াবেটিসের ফলে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে উদ্বিগ্ন অনুভব করাটা স্বাভাবিক। কেন আপনি উদ্বিগ্ন অনুভব করছেন তা নির্ণয় করার চেষ্টা করুন এবং এর থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় খুঁজে নিন।


৭। শারীরিক স্বাস্থ্যের মত মানসিক স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ

মস্তিস্কের কাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য গ্লুকোজের প্রয়োজন। কিন্তু গ্লুকোজের মাত্রার আধিক্য এবং কমে যাওয়া আচরণ এবং ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব ফেলে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের বিষণ্ণতায় ভোগা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। যদি আপনি বিষণ্ণতায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।


৮। অতিরিক্ত ব্যায়াম রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর চেয়ে বৃদ্ধি করে বেশি

মাত্রাতিরিক্ত ব্যায়াম যকৃতে সঞ্চিত গ্লুকোজকে বের করে দেয় পেশীতে জ্বালানী সরবরাহের জন্য। ফলে শরীরে গ্লুকোজের উৎপাদন অনেক বেশি হয়, এর শুধুমাত্র অর্ধেক ব্যবহৃত হয় পেশীতে। যদি আপনি তীব্র ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে আপনাকে ইনসুলিনের ব্যবস্থা রাখতে হবে (আপনি যদি ইনসুলিন নিয়ে থাকেন)।


৯। ডায়াবেটিক ডায়েটের ক্ষেত্রে ১ সারভিংস কার্বোহাইড্রেট সমান ১৫ গ্রাম

ভিন্ন ভিন্ন খাবারে একই পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকতে পারে যা রক্তের চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি করে একইভাবে। যেমন- দুটি মাঝারি আকারের আলুতে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে ঠিক একই পরিমাণ থাকে ১ কাপ ভ্যানিলা আইসক্রিমে যা প্রায় ৬০ গ্রাম। তাই কার্বোহাইড্রেটের ধরণ নয় বরং এর পরিমাণটাই গুরুত্বপূর্ণ।


১০। কিছু কার্বোহাইড্রেট অন্যদের তুলনায় দ্রুত রক্তের চিনির মাত্রা বৃদ্ধি করে

হোলমিল ব্রেড কার্বোহাইড্রেট মুক্ত করে ধীরে ধীরে। কাঁচা অথবা পাকা শুরু করেছে এমন ফল খান, যেহেতু এগুলোতে চিনির পরিমাণ কম থাকে। বাসমতি চালের তুলনায় বড় দানার চালে অনেক বেশি কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই কোন খাবার কেনার পূর্বে এর লেবেলটি ভালো করে পড়ুন।


১১। ধূমপান এবং ডায়াবেটিস একে অপরের সাথে জড়িত

ধূমপান করলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং রক্তসংবহনের সমস্যা দেখা দেয় এবং ডায়াবেটিস আক্রান্তদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি থাকে।