ক্যারিয়ারে সাফল্য পেতে ছুড়ে ফেলুন অজুহাতসহ ৭টি দোষ

লাইফ স্টাইল February 3, 2017 911
ক্যারিয়ারে সাফল্য পেতে ছুড়ে ফেলুন অজুহাতসহ ৭টি দোষ

ক্যারিয়ারে সফল হতে হলে বেশকিছু ভালমন্দ বিষয়ে আপনাকে নজর রাখতে হবে। এর মধ্যে ভাল অনেক কিছু হয়তো অনুসরণ করা সম্ভব হয় না তবে মন্দ বিষয়গুলোকে এড়াতে জানতে হবে আপনাকে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এই বিষয়গুলো অভ্যাস করে নিলে তা আপনাকে বাদবাকি কর্মজীবনে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো সহায়ক হবে।


তবে প্রথম দিকে এসব অভ্যাস না হয়ে থাকলেও আপনি যে কোনো সময়েই শুরু করতে পারেন- কারণ সৎ প্রচেষ্টার সুফল আসবেই। আসুন দেখে নেই এ ধরনের সাতটি বিষয় যা আপনাকে সহায়তা করবে ক্যারিয়ারকে নির্বিঘ্ন করতে।


১. অ্যালার্ম: দরকার মতো সকালে ঘুম ভাঙার জন্য অ্যালার্ম সবাই দেই সত্য কিন্তু সেই অ্যালার্ম শুনে ঘুম ভাঙার পর বিছানা ছেড়ে উঠি খুব কম জনই। দেখা যায়, অ্যালার্ম বন্ধ করে দিয়ে ফের ঘুমের আলস্যে আশ্রয় খুঁজতে চেষ্টা করি বেশির ভাগ মানুষ। এতে সময় পেরিয়ে যায়। তাই আলস্য না করে প্রথম অ্যালার্মেই জেগে উঠে টুথ ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে শুরু করে দিন দিনের বাকি কাজ।


২. খাওয়া-দাওয়া: সুস্থ শরীরে সুস্থ মন- অনেক পুরনো কথা। ক্যারিয়ারে সফল হতে হলে সুস্থ দেহের সঙ্গে সুস্থ মন-মেজাজ থাকতে হয়। এই সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে আজে বাজে খাবার ত্যাগ করতে হবে। আর দীর্ঘ সময় পেট খালি রাখা যাবে না। কাজের সফলতার জন্য যখন একটানা ব্যস্ত থাকতে হয় বেশ কয়েক ঘণ্টা- তখন মাঝে মধ্যে হাল্কা ধরনের এবং অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন অল্প অল্প। এটা আপনার শরীরকে সতেজ আর সুস্থ রাখবে- সুস্থ থাকবে আপনার মনও। তবে অতি সুস্বাদ, পুষ্টিকর বা ফ্রি যাই হোক না কেন- বেশি খেতে যাবেন না কখনোই।


৩. বাজে খরচ: বাজে খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সম্ভব হলে একদম বন্ধ করে দিন। যদি তা না করেন- দীর্ঘ ক্যারিয়ার জীবনের বাঁকে বাঁকে এর কুফল আপনাকে ভোগ করতে হবে। বাজে খরচের জন্য অনেক সময়েই আপনাকে ধারদেনা করতে হতে পারে যা অন্যের কাছে আপনার বক্তিত্ব, মর্যাদা আর আত্মবিশ্বাসের হানি করবে। এর নেতিবাচক ধাক্কা সামলানো খুব কঠিন। তাই ত্যাগ করুন আজেবাজে খরচের বাতিক।


৪. বিবেকের বাধা মানা না মানা: বিবেক বাধা দেয় এমন কাজ করবেন না। ‘উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সকল কর্মপন্থাই বৈধ’ ম্যাকিয়বেলির এই তত্ত্ব প্রায় সবাই খাটাতে চাইবে হয়তো- তবে ক্যারিয়ারের সফলতার শেষ কথা হচ্ছে আপনি নিজে একান্তে ঠিক কতোটা সুখী হলেন? বিবেকের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করে সাময়িক সফল হলেও তা কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্য নয়। তাই বিবেকের অনুসরণে প্রয়োজনে অধিক পরিশ্রম আর সময় ব্যয় হলেও তা মেনে নেওয় উচিৎ। মন আর বিবেকের সতর্কতাকে মূল্যায়ন করুন।


৫. বিলম্ব করা: সময়ানুবর্তিতা ক্যারিয়ারে সাফল্যের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। কোথাও যদি নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানোর কথা থাকে তবে অন্তত দশ মিনিট আগেই সেখানে হিাজির থাকার চেষ্টা করুন। আপনি যদি ‘লেট লতিফ’ স্বভাবের বাবুসাব হয়ে থাকেন তবে নিজ ক্যারিয়ারের স্বার্থে এখনি তা ত্যাগ করুন।


৬. অজুহাত: বিদ্রুপাত্মক অর্থে অনেক সময়েই আমরা বলে থাকি- বাঙালির হাত তিনটি। ডান হাত, বাম হাত আর অজুহাত। সেই অজুহাতকে এখনি ঝেড়ে ফেলতে আপনার ভেতর থেকে। যদি কাজে কর্মে কোনো ভুলচুক হয়ে যায় তবে তা সহজে মেনে নিন এবং স্বীকার করুন। প্রয়োজনে বিনয়ের সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করুন, ক্ষমাও চাইতে পারেন। এটা আপনাকে মোটেই ছোট করবে না- বিশাল অন্তর আর মনের একজন মানুষ হিসেবে সহকর্মী-বন্ধু-স্বজনের মাঝে দুর্লভ এক পরিচিতি এনে দেবে উল্টো। এটা আপনার ক্যারিয়ারের অন্যতম এক পুঁজি হয়ে থাকবে।


৭. সন্দেহ বাতিক: যাহা দেখি না নিজ নয়নে বিশ্বাস করি না গুরুর বচনে- এমন মনোভাব ত্যাগ করুন। লাইফস্টাইলের এই সমস্যাটা আপনার ক্যারিয়ারকে বার বার বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সবকিছুতে সন্দেহ করা ত্যাগ করুন, এখনি। অহেতুক সন্দেহ না করে ঠাণ্ডা মাথায় যুক্তি খাটিয়ে সমস্যা বিশ্লেষণ করুন- দেখবেন অনেক কিছুই আপনি যতো জটিল মনে করছেন আসলে ততটা না। অনেক সময় সম্ভাবনাকেও আমরা ভুলবশত সমস্যা বলে ধরে নেই। তাই সব বিষয়ে কিছু একটা ধরে না নিয়ে বিচার বুদ্ধির প্রয়োগ করুন- এটা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে যা ক্যারিয়ারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।