শীতেও সতেজ ত্বক

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস January 24, 2017 605
শীতেও সতেজ ত্বক

শীতের এই সময়ে শুষ্ক থাকে আবহাওয়া। তাই ত্বকও হয়ে পড়ছে নির্জীব। কারণ শীতের রুক্ষ হাওয়া কেড়ে নেয় ত্বকের আর্দ্রতা। তাই এই সময়ে আপনার ত্বকের জন্য চাই বিশেষ পরিচর্যা।


শীতের এ সময়টায় শুষ্ক ভাব আমাদের ত্বকে বেশ প্রভাব ফেলে। শুষ্ক আবহাওয়া এবং ধুলো-ময়লায় ত্বক হয়ে ওঠে রুক্ষ এবং শুষ্ক। তাই ত্বক থেকে ময়েশ্চারাইজার কমে যায়। এর ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়। এই সময় ত্বকে ঘন ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে, যেন ত্বক শুষ্ক হয়ে না ওঠে। এছাড়া শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলো-ময়লা বেশি থাকে। ফলে ময়লা জমে ত্বকে মৃত কোষের সৃষ্টি হয়। অনেকে প্রতিদিন গোসল করতে চায় না। এটা ঠিক নয়। গোসল না করলে ধুলো-ময়লা জমে আমাদের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ত্বকে ব্রণ হয় এবং নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়। প্রয়োজন হলে হালকা কুসুম গরম পানির সঙ্গে নিমপাতা সিদ্ধ পানি মিশিয়ে প্রতিদিন গোসল করতে হবে।


ফেসিয়াল ত্বকের যত্নের জন্য জরুরি; কিন্তু তা হওয়া চাই সঠিক উপায়ে। এজন্য নিজে না করে বিউটি স্যালুনগুলোতে ফেসিয়াল করানো ভালো। ত্বককে সজীব রাখতে শুষ্ক আবহাওয়ায় ১৫ দিন পর পর ফেসিয়াল এবং মেনিকিউর-পেডিকিউর করা উচিত। তৈলাক্ত ত্বকে ময়লা বেশি জমে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা প্রতিবার ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে লোশন লাগাবেন। যাদের ত্বক কিছুটা শুষ্ক তাদের একটু ভারী ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।


এ সময় ধুলোবালি থেকে চুল খুব তাড়াতাড়ি রুক্ষ হয়ে ওঠে। চুলের ত্বকে ময়লা জমে সৃষ্টি হয় খুশকির সমস্যা। ফলে ত্বকে অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না এবং চুল ভঙ্গুর হয়ে ওঠে। নির্জীব হয়ে ঝরে পড়তে শুরু করে চুল। তাই একদিন পর পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়া উচিত। খুশকি বেশি হলে তা মাথার ত্বকে ছত্রাকের মতো জমে যায়। এ থেকে ত্বকের ওপর ব্রণ ও পাঁচড়া হতে পারে। যাদের খুশকির সমস্যা আছে তাদের অ্যান্টি ডেনড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া চুলের রুক্ষতা কমাতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার চুলে তেল ম্যাসাজ করে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে এবং ১৫ দিন পর পর পার্লারে গিয়ে হেয়ার ট্রিটমেন্ট করালে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।


• টিপস...

* গোসলের সময় অত্যধিক গরম পানি ব্যবহার করবেন না। গরম পানি ত্বকের তেল শোষণ করে ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। তাই এই শীতে গোসলের সময় ত্বকের জন্য সহনীয় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন।


* মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে সাবানের পরিবর্তে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার ব্যবহার করুন। দুধ, ময়দা এবং ঘিয়ের মিশ্রণ একটি ভালো ক্লিনজার, যা আপনার ত্বককে রুক্ষতা থেকে বাঁচাবে।


* ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পেতে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মধু এবং গ্লিসারিন একসঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান।


* প্রতিদিন গোসলের আগে অয়েল ম্যাসাজ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নারকেল তেল, বাদাম তেল (আমন্ড অয়েল), তিলের তেল বা যেকোনো ভালো মানের হারবাল তেল ব্যবহার করতে পারেন। সম্ভব হলে অয়েল ম্যাসাজের আধ ঘণ্টা পর গোসল করুন, যাতে ত্বক তেলটুকু শোষণ করে নিতে পারে।


* পাকা কলা, পাকা পেঁপে, সয়াবিনের গুঁড়া অথবা ময়দা পেস্ট করে মুখে লাগান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে টানটান ভাব আসবে।


* খাবারের তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি এবং ফলমূল রাখুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।


* এ সময় চুলের দরকার বিশেষ যত্ন। সপ্তাহে একদিন হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। নারকেল তেল গরম করে স্ক্যাল্পে হাল্কা হাতে ঘষুন। গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে নিংড়ে নিন। তারপর তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। সহজে তেল চুলের গোড়ায় ঢুকে যাবে। পরের দিন শ্যাম্পু করে নিন।


* আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় এ সময় খুশকি বাড়ে। খুশকি কমাতে লেবুর রস চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করতে পারেন। তেলের সঙ্গে আমলকি মিশিয়ে লাগান। বেশি কেমিক্যালসমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। হেনা, লেবুর রস, ডিম মিশিয়ে চুলে এক ঘণ্টা লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে নিন।