ত্বক ও চুলের সজীবতায় করণীয়

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস January 24, 2017 1,308
ত্বক ও চুলের সজীবতায় করণীয়

সজীব, সতেজ অনুভূতি সৌন্দর্যের প্রতীক। আর এই সজীবতা আর সতেজতা টিকিয়ে রাখতে আমাদের শরীরের একটু বাড়তি যত্ন নিতে হয়। শীত চলে এলে ত্বকের যে বিশেষ যত্ন দরকার তা আমাদের সবারই জানা। তবে অনেকে হয়তো জানেন না কখন কীভাবে নেবেন ত্বক ও চুলের যত্ন। চুল সবসময় ঠাণ্ডা পানিতে ধোয়া উচিত (যতটুকু ঠাণ্ডা আপনি সহ্য করতে পারেন)।


ঠাণ্ডা পানিতে চুল ধোয়া হলে চুলের আর্দ্রতা রক্ষা হয়, চুল ফ্রিজ হয় না। ঠাণ্ডা পানি শুধু চুলকে ফ্রিজ হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়, তা নয়, আপনার চুলে যদি রঙ করা থাকে, সেই রঙের স্থায়িত্বও বাড়ায়। ব্লো-ডাই করার সময় তাপমাত্রা সবচেয়ে কম রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দুপুরে গোসলের পরে তো বটেই, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও ত্বকের দরকার বিশেষ পরিচর্যা। শীত শুরুর এ সময়টায় বাতাস থাকে শুষ্ক। হয়তো কারও কারও এখনই শুরু হয়েছে ত্বক ফাটা, মৃত কোষ জমে ত্বকের রংও মলিন হতে শুরু করেছে।


অনেকেই শীতের প্রসাধনী যেমন পেট্রোলিয়াম জেলি, কোল্ড ক্রিম, পমেড ব্যবহার শুরু করেছেন। তবে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যাদের নানা কাজে সকালে বের হতে হয়, তাদের হালকা মেকআপ নিতেই হয়। এ জন্য ত্বক সুন্দর রাখা জরুরি, প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন। নিয়মিত যত্নে শীতেও ত্বক হয়ে উঠবে মসৃণ এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।


শীতে শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য ত্বক স্বাভাবিক আর্দ্রতা দ্রুত হারিয়ে ফেলে। তাই শীতকালে গোসলে সাবান কম ব্যবহার করুন। আর করলেও ময়েশ্চারাইজার যুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। শীতেও রোদে গেলে সানবার্ণ হতে পারে তাই সাধারন ক্রিম না মেখে অবশ্যই সানব্লকযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করবেন। খেয়াল রাখবেন, এতে যেন এসপিএফ অন্তত ১৫ হয়।


শীতে ত্বকের যত্নের শুরুতে একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। বাজার থেকে বাদাম তেল বা এভাকাডো সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার কিনুন। এগুলো ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন অন্তত দু’বার অথবা যতবার ত্বক শুষ্ক মনে হবে ততবার ব্যবহার করুন।


এ সময়ে কিছু টিপস মেনে চললে ত্বকের সতেজতা ধরে রাখতে পারবেন; শুষ্ক ত্বকের প্রধান কাজ হল ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখা। ভিটামিন-ই অয়েল ১-২ চামচ, ১-২ চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে প্রতিদিন লাগাতে পারেন। ত্বকে পুষ্টি জোগাতে ডিমের কুসুম, ১ চা চামচ মধু, আধা চামচ অলিভ অয়েল ও গোলাপজল মিশিয়ে সারা মুখে লাগিয়ে ১৫ মি. রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করতে পারেন।


যাদের ত্বক খুব তৈলাক্ত তারা ক্লিনজিং ও ময়েশ্চারাইজিংয়ের ক্ষেত্রে অয়েল ফ্রি প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এ ক্ষেত্রে টমেটোর রস খুব কার্যকর। ক্লিনজিং ও টোনিংয়ের পর লেটুস পাতার রস, মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে লাগাতে পারেন। আনারস, আপেল, পাকা পেঁপের সঙ্গে মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখলে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়।


এ সময়টায় ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার শুরু করবেন নিয়মিত, আর তা যেন ঘন ময়েশ্চারাইজিং লোশন বা ক্রিম হয়। রাতে ঘুমানোর আগে যাদের বয়স কম, তারা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। বয়স ত্রিশের কোঠা ছাড়ালে নাইট ক্রিম ব্যবহার করা ভালো।


হাতে-পায়েও খুব ভালোমতো ময়েশ্চারাইজিং লোশন মেখে ঘুমাবেন। সকালে উঠে ত্বকের উপযোগী ফেসওয়াশ বা কোমল ময়েশ্চারযুক্ত সাবান দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবেন। এ সময় নিয়মিত বা একদিন অন্তর স্ক্রাব করা ভালো।


অনেকের ধারণা, নিয়মিত ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলে বা স্ক্রাব করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। কিন্তু ত্বক পরিষ্কার করতে ও মৃত কোষ সরিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে এর বিকল্পও নেই। মাঝে মাঝে স্ক্রাবিংয়ের পর দুধের সর ও মধু মেখে একটু পর ধুয়ে ফেলবেন। অথবা গাজরের রস মুখে মেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলবেন। যদি নিয়মিত ওপরের নির্দেশনাগুলো ঠিকমতো মেনে চলেন তাহলে এই শীতেও আপনি থাকবেন সজীব ও প্রাণবন্ত।


চুল সুন্দর রাখার উপায়

একটি কলা এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল দিয়ে মিহি করে পেস্ট করুন। প্রয়োজনে অল্প পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে পিষে নিন। এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। দেখবেন চুল হয়ে উঠেছে নরম আর মোলায়েম।