স্বাদে-ঐতিহ্যে বাঙালির শীতের পিঠা!

রেসিপি টিপস January 15, 2017 1,288
স্বাদে-ঐতিহ্যে বাঙালির শীতের পিঠা!

বাঙালির শীতে মানেই পিঠা-পুলির উৎসব। তবে গ্রাম-বাংলার সেই রসাল পিঠা-পায়েস এখন হারিয়ে যাচ্ছে। আজকাল আমাদের খুব পিঠা খেতে ইচ্ছে হলে ছুটে যাই পিঠার দোকানে।


কিন্তু আমরা যদি একটু কষ্ট করে ঘরে পিঠা তৈরি করি, তবে তার আনন্দ কিন্ত অনেক বেশি। তাই এবার শীতের কয়েকটি সুস্বাদু পিঠার রেসিপি-


দুধ চিতই


উপকরণ: আতপ চালের গুঁড়া ২ কাপ, সিদ্ধ চালের গুঁড়া ২ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, কুসুম গরম পানি পরিমাণমতো, তরল দুধ ৩ লিটার, পাটালি গুড় ২ কাপ (গুঁড়া করা), চিনি আধা কাপ, এলাচ ৩টি, দারুচিনি ৩ টুকরো, নারিকেল কোড়ানো ১ কাপ, পানি ১ কাপ।


প্রণালি: আধা কাপ চালের গুঁড়া ১ কাপ পানি দিয়ে ফুটিয়ে নরম কাই করে নিন। এবার ওই কাই ঠাণ্ডা করে বাকি চালের গুঁড়া, লবণ ও পরিমাণমতো পানি দিয়ে গোলা তৈরি করে ২ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। এবার পিঠার খোলায় সামান্য তেল মুছে নিন। তারপর ডালের চামচের ১ চামচ গোলা নিয়ে খোলায় দিন। তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে সাইডে সামান্য পানির ছিটা দিন। ৪/৫ মিনিট পর পিঠা তুলে নিন। সব পিঠা তৈরি শেষ হলে পাটালি গুড় ১ কাপ পানি দিয়ে জ্বাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন।


এবার একটি হাঁড়িতে তরল দুধে চিনি, এলাচ ও দারুচিনি দিয়ে জ্বাল করে ২ লিটার করুন। এবার পিঠা দুধে দিয়ে চুলা বন্ধ করে দিন। এবার জ্বাল দেওয়া খেজুরের গুড় দিন। নারিকেল কোড়ানো দিন। সারারাত কিংবা ৬-৭ ঘণ্টা দুধে ভিজিয়ে রাখুন। নরম হলে পরিবেশন করুন।


খেজুরের গুড়ের পায়েস


উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ১ কাপ, তরল দুধ ২ লিটার, গুঁড়া দুধ ১ কাপ, খেজুরের গুড় ২৫০ গ্রাম, এলাচ ৩টি, দারুচিনি ২ টুকরো, কাজু বাদাম ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ ২ টেবিল চামচ, চিনি সিকি কাপ, পানি ১ কাপ, নারিকেল কোড়ানো ১ কাপ।


প্রণালি: পোলাওয়ের চাল ২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে আধা ভাঙা করে নিন। খেজুরের গুড় ১ কাপ পানি দিয়ে জ্বাল করে রাখুন। এবার একটি হাঁড়িতে দুধ ও পোলাওয়ের চাল একসাথে নিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। চাল সিদ্ধ হলে এলাচ, দারুচিনি ও চিনি দিন। এবার গুঁড়া দুধ দিন। ভালো করে নাড়ুন। ঘন হয়ে এলে গুড়, নারিকেল কোড়ানো দিয়ে নেড়ে কাজুবাদাম ও কিশমিশ দিন। এবার চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন ডিশে ঢেলে নিন। ঠাণ্ডা হলে কিশমিশ ও কাজু দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।


পাটি সাপটা


উপকরণ: সিদ্ধ চালের গুঁড়া ৩ কাপ, ময়দা সিকি কাপ, ডিম ১টি, লবণ সামান্য, গুড় আধা কাপ, তরল দুধ পরিমাণমতো।


প্রণালি: উপরের সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে গোলা তৈরি করুন। এবার ২ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন।


পুরের জন্য: তরল দুধ ২ লিটার, গুঁড়া দুধ ১ কাপ, পোলাওয়ের চালের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সিকি চা চামচ, খেজুরের গুড় ১ কাপ (গ্রেট করা)।


প্রণালি: তরল দুধ জ্বাল দিয়ে ১ লিটার করুন। এবার এর সাথে গুঁড়া দুধ, চালের গুঁড়া, এলাচ গুঁড়া ও গুড় দিয়ে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে হাঁড়ির গা ছেড়ে এলে পুর নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন।


এবার একটি ফ্রাইপ্যানে তেল মুছে ডালের চামচের ১ চা চামচ গোলা দিয়ে ছড়িয়ে দিন। তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা উঠিয়ে রান্না করা পুর দিয়ে ডিম ভাজির মতো ভাঁজ করে নিন। এবার পরিবেশন পাত্রে রেখে ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।


নকশি পিঠা


উপকরণ: চালের গুঁড়া ৪ কাপ, পানি তিন কাপ, লবণ সামান্য, ঘি ১ টেবিল চামচ, ভাজার জন্য তেল ৫০০ গ্রাম।


সিরার জন্য: গুড় ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, পানি ২ কাপ জ্বাল দিয়ে সিরা বানাতে হবে।


প্রণালী: পানিতে লবণ ও ঘি দিয়ে চুলায় দিন। ফুটে উঠলে চালের গুঁড়া দিয়ে সেদ্ধ করে কাই বানাতে হবে। আধা ইঞ্চি পুরু করে রুটি বানিয়ে পছন্দমতো আকার দিয়ে কেটে নিন। খেজুর কাঁটা দিয়ে রুটিতে পছন্দমতো নকশা করুন। এবার প্রথমে ডুবোতেলে ভেজে নিন। কিছুক্ষণ পর আবার তেলে ভেজে সিরায় দিয়ে ১ মিনিট রেখে তুলে নিন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।


ভাপা পিঠা


উপকরণ: সিদ্ধ চালের গুঁড়া আধা কেজি, আতপ চালের গুঁড়া আধা কেজি, পাটালি গুড় ৫০০ গ্রাম, নারিকেল কোড়ানো ২টি, লবণ পরিমাণমতো, তরল দুধ পরিমাণমতো (চালের গুঁড়া মাখানোর জন্য), পাতলা কাপড়ের টুকরো, পিঠার জন্য বাটি।


প্রণালি: চালের গুঁড়া, লবণ ও কুসুম গরম দুধ একসঙ্গে মাখাতে হবে ঝুরঝুরা করে। এবার বাঁশের চালনিতে চেলে নিন। এবার বাটিতে চালের গুঁড়া দিয়ে গর্ত করে দুধ ও নারিকেল কোড়ানো দিয়ে উপরে চালের গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিন। এবার পাতলা কাপড় ভিজিয়ে পিঠা ঢেকে দিয়ে বাটির নিচ পর্যন্ত কাপড় ধরে উল্টে দিয়ে ফুটন্ত পানির ওপর ছিদ্র করা ঢাকানার উপর বসিয়ে বাটি উঠিয়ে নিন। এবার কাপড় দিয়ে ঢেকে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ৭/৮ মিনিট পর পিঠা উঠিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।