বন্ধ হয়েছে গুগলের আটটি সেবা

ইন্টারনেট দুনিয়া January 8, 2017 1,825
বন্ধ হয়েছে গুগলের আটটি সেবা

: গুগল প্রতি বছরের মত গত বছরও নিত্য নতুন প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছিল। ওই বছর অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর পিক্সেল ফোন থেকে শুরু করে ভিআর ডেড্রিম, এমন কি ভিডিও অ্যাপ ডুয়ো ও বার্তা আদানপ্রদানকারী অ্যাপ অ্যালো নিয়ে বাজার মাতিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।


তবে এই নতুনের ভিড়ে বাজার হারানো অনেক পণ্য বা সেবা বন্ধ করে দিয়েছে গুগল। গুগলের বন্ধ হওয়া সেইসব পণ্য বা সেবাগুলো এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো।


গুগল হ্যাংআউটস অন এয়ার

ইউটিউব, ফেইসবুকের মত মিডিয়ার লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সাথে বাজারে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে গুগল হ্যাংআউটস অন এয়ার সেবা। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকে এই সেবাটির গ্রাহকসংখ্যা। তাই চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে সেবাটির ইতি টানে গুগল।




নেক্সাস ফোন বন্ধ

গুগল ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন ফোন নিমার্তা প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে নেক্সাস ডিভাইস তৈরি করতো। কিন্তু চলতি বছর গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে নেক্সাস ডিভাইস আর তৈরি হবে না। প্রথমে এই খরব শুনে অনেকেরই ধারণা করা হয়েছিলো তাহলে কি স্মার্টফোন তৈরি থেকে সরে আসছে গুগল? কিন্তু না সরে আনা নয়, বরং আরও পাকাপোক্তভাবে নিজের পিক্সেল ফোন নিয়ে হাজির হলো গুগল।


উলেখ্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে নেক্সাস ৬পি ও নেক্সাস ৫এক্স নামে দুটি মডেলের স্মার্টফোন ছেড়েছিল গুগল। এর মধ্যে গুগলের জন্য নেক্সাস ৬পি তৈরি করে হুয়াওয়ে এবং নেক্সাস ৫এক্স তৈরি করে এলজি।




পিকাসা বন্ধ

গুগল চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ করে ছবি ও ভিডিও শেয়ারিং ক্লাউড প্লাটফর্ম পিকাসার। মূলত গুগল ফটোজ সেবাটিকে অধিক গুরুত্ব দিতে পিকাসা সেবাটিকে বন্ধ করে দিয়েছিলো গুগল। পিকাসাতে যাদের অনলাইন ছবি ও ভিডিও অ্যালবাম আছে, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুগল ফটোজ অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিলো।

সেই সময় গুগলের ফটোজের প্রধান জানিয়েছিলো, গুগল ফটোজ হচ্ছে নতুন ও স্মার্ট সেবা। আমরা স্থানান্তর প্রক্রিয়াটির জন্য ক্ষমা চাইছি। নিশ্চিত করে বলতে চাই, আমাদের লক্ষ্য আরও উন্নত অভিজ্ঞতা দেওয়া।


প্রজেক্ট অ্যারা

প্রযুক্তি বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিলো গুগলের প্রজেক্ট অ্যারা। পরিবর্তনযোগ্য হার্ডওয়্যারের ফোনটি নিয়ে স্মার্টফোন প্রেমীদের আগ্রহ ছিলো অনেক। তবে প্রজেক্ট অ্যারা ভক্তদের আশাহত করে গুগল চলতি বছর সেপ্টেম্বরে ঘোষণা দেয় এই ফোন কখনো বাজারে আলোর মুখ দেখবে না।


অ্যারা প্রজেক্টের আওতায় তৈরি স্মার্টফোনগুলোতে থাকে পরিবর্তনযোগ্য ছয়টি মডিউল। গুগলের একদল গবেষক এমন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন অনেক দিন থেকে। এ প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছিলো ‘প্রজেক্ট অ্যারা’।



২০১৩ সালে থেকে শুরু হয়েছে এই প্রজেক্ট অ্যারার কাজ। ‘ফোনব্লকস’ নামের একটি স্টার্টআপ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাস্টোমাইজ সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোন তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল গুগল।


গুগলের এরূপ ঘোষণায় স্মার্টফোন প্রেমীরা হতাশা প্রকাশ করেছিলো। সবার একটাই প্রশ্ন, কেনো গুগল এই ফোন আনছে না? তবে এই প্রশ্নের উত্তরে নীরব ছিলো গুগল।


ম্যাক, লিনাক্স, উইন্ডোজে বন্ধ ‘ক্রোম অ্যাপ’

ক্রোম অ্যাপ বিভিন্ন ম্যাক, লিনাক্স, উইন্ডোজে ব্যবহারের সুবিধা থাকলেও চলতি বছর তা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে গুগল। তবে সরাসরি বন্ধ না করে ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। ঘোষিত সময় অনুযায়ী ২০১৬ সালের শেষে ক্রোম অ্যাপের নতুন ভার্সনটি আর পাওয়া যাবে না উইন্ডোজ, ম্যাক আর লিনাক্সে। এরপর ২০১৭ সালের মাঝের দিকে ‘ক্রোম ওয়েব স্টোর’ ওই তিনটি প্লাটফর্মে অ্যাপটি আর দেখাবেনা। সবশেষে ২০১৮ সালের শুরুতে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চাইলে তা একেবারে করা যাবে না।


কেন এই সুবিধা বন্ধ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে গুগল জানিয়েছিলো, গুগল বলছে খুব অল্প সংখ্যক মানুষই ক্রোম অ্যাপ ব্যবহার করে।


বোঝাই যাচ্ছে এই সুবিধা গ্রাহক টানতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই বন্ধ করা হচ্ছে।


মাই ট্র্যাকস

গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে এপ্রিল মাসে ‘মাই ট্র্যাকস’ নামে ট্র্যাকিং অ্যাপটি বন্ধের ঘোষনা দেয়া। জিপিএস সুবিধা সমৃদ্ধ এই অ্যাপটি ২০০৯ সালে তৈরি করেছিলো গুগল। তবে ধীরে ধীরে গ্রাহক হারাতে শুরু করে এই অ্যাপটি। তবে এই অ্যাপটি বন্ধ করে দিলেও গুগল ফিট অ্যাপ পাওয়া যাবে মাই ট্র্যাকসের সব সুবিধা।




গুগল কম্পেয়ার

মাচের ২৩ সালে গুগল কম্পেয়ার সেবাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কেননা ২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই সেবাটি নিয়ে আসে গুগল। তবে গুগলের প্রত্যাশা ছিলো বেশি। কিন্তু সেই প্রত্যাশার সাথে তাল মিলিয়ে গ্রাহক ধরতে রাখেত পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তাই ব্যবহারকারী কম ও জনপ্রিয়তা না পাওয়ার কারণে এই সেবাটি বন্ধ করে দেয়া হয়।


প্যানোরোমিয়

প্যানোরোমিয় হলো লোকেশন ভিত্তিক ছবি শেয়ারিং টুলস। যা গুগল ২০০৭ সালে কিনেছিলো এবং তা ২০১৬ সালের নভেম্বরে সেবা বন্ধ করে দেয়।