সন্তানকে সঞ্চয়ী করে তুলুন কিছু কৌশলে

লাইফ স্টাইল January 5, 2017 1,097
সন্তানকে সঞ্চয়ী করে তুলুন কিছু কৌশলে

শিশুদের আবদারের শেষ নেই। আজকে এটা তো কালকে সেটা। আর সন্তানের আবদার পূরণ করতে বাবা মায়ের চেষ্টার অন্ত থাকে না। প্রত্যেক বাবা মা চান তার সন্তানের কোনো ইচ্ছা অপূর্ণ না রাখতে। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কী, আপনার সন্তানের সব ইচ্ছা পূরণের ব্যাপারটি আপনার সন্তানের জন্য ভালো হচ্ছে না মন্দ? শিশুকাল সময়টি হলো শেখার বয়স। এই সময় আপনি সন্তানকে যা শিক্ষা দেবেন সে সেটির শিক্ষাই সে পাবে। আপনার এই সব চাওয়া পূরণ তাকে অপব্যয়ী করে তুলছে। আপনার সন্তানের কাছে অর্থের মূল্য কমে যাচ্ছে। তাই ছোটবেলা থেকে সন্তানকে মিতব্যয়ী হতে শেখান, শেখান অর্থ ব্যবস্থাপনা। এই কাজটি কীভাবে করবেন তার সহজ কিছু উপায় পাবেন এই ফিচার থেকে।


১। সঞ্চয়ী হতে শিক্ষা দিন

টাকা জমানোর শিক্ষাটি ছোট থেকে দেওয়া শুরু করুন। সেক্ষেত্রে মাটির ব্যাংকে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। তবে মাটির ব্যাংকের চেয়ে কাঁচের বয়াম বেশি কার্যকর। কত টাকা জামানো হলো, বয়াম ভরতে আর কতো টাকা লাগবে তার হিসাব কাঁচের বয়ামে রাখা সহজ। মাটির ব্যাংকে টাকার পরিমাণ দেখা যায় না। কাঁচের জারে টাকা সরাসরি দেখা যাওয়ার কারণে শিশুরা টাকা জমানোর ব্যাপারে আরো বেশি উৎসাহ পাবে।


২। অর্থের মূল্যের সম্পর্কে জানান

আপনার সন্তান জানে না টাকা কোথা থেকে আসছে। তারা মনে করে আপনার কাছে অনেক টাকা আছে কিংবা ব্যাংকে গেলে টাকা পাওয়া যাবে। তাকে জানান আপনি কাজ করে টাকা আয় করেছেন। ব্যাংকে গেলে টাকা পাওয়া যাবে না।


৩। বাজেট করা শেখান

আপনি যখন বাজেট তৈরি করছেন তখন আপনার সন্তানকে পাশে রাখুন। বাজেট কী এবং কেন তৈরি করছেন সেটি তাকে বলুন। কোন কোন খাতে টাকা ব্যয় করছেন, কোনটি প্রয়োজনীয় কোনটি অপ্রয়োজনীয় সেটি সম্পর্কে ধারণা দিন। এতে করে আপনার সন্তানের কাছে সামগ্রিক অর্থ ব্যবস্থাপনা বিষয়টি বোঝা সহজ হবে। এরপর আপনি তাকে কিছু টাকা দিয়ে দেখতে পারেন সে বাজেট করে চলতে কতটুকু সক্ষম হচ্ছে।


৪। উদাহরণ তৈরি করুন

শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। আপনি যা করছেন তারা তা অনুকরণ করে। তাই আপনি যখন সঞ্চয় করছেন তাকে সেটি জানিয়ে বুঝিয়ে দিন এর গুরুত্ব কতখানি। বিদ্যুৎ বিল, ক্রেডিট কার্ডের বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদি সময়মতো পরিশোধ করুন। পরে পরিশোধ করবেন বলে ফেলে রাখবেন না, মনে রাখবেন আপনি যা করবেন তা থেকেই আপনার সন্তান শিক্ষা গ্রহণ করবে। প্রতিদিন বাইরে খেতে না গিয়ে ঘরে তৈরি করতে পারেন সন্তানের পছন্দের খাবারটি।


৫। মাসিক খরচের পরিবর্তে কমিশন দিন

মাসিক খরচ পরিবর্তে কমিশন দিন। ঘরের ছোট ছোট কাজ যেমন নিজের ঘর পরিষ্কার করা, পড়ার টেবিল গোছানো ইত্যাদি কাজের জন্য টাকা দিন। এতে সে বুঝতে পারবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে হয়, অর্থ এমনি এমনি আসে না।


৬। পাওয়ার সাথে সাথে খরচ নয়

অর্থ শুধু সঞ্চয় করলে হয় না, সেটি সঠিকভাবে খরচ করা শিক্ষাটিও দিতে হবে। সন্তানকে বোঝান অর্থের গুরুত্ব। টাকা জমানোর সাথে সাথে তা খরচ না করে, একটি বাজেট তৈরি করে বুঝে শুনে খরচ করা শিক্ষা দিন। তাকে বলুন আগে পরিকল্পনা তারপর খরচ।


অর্থ সঞ্চয়ের পাশাপাশি তা দান করার শিক্ষা দিন। টাকা জমানো হলে তার থেকে কিছু অংশ গরীবদের দেওয়ার অভ্যাসটিও এখনই তৈরি করুন।