শীতের রাতে ভূতের সঙ্গে!

দেখা হয় নাই December 27, 2016 2,052
শীতের রাতে ভূতের সঙ্গে!

ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আমাদের মধ্যে যাঁরা রোমাঞ্চপ্রিয় আছেন, তাঁরা কিন্তু মনে মনে ভূতের বাড়ির সন্ধান করেই চলেন। আর তাঁদের জন্যই রয়েছে আনন্দের খবর।


খোদ খুলনা শহরেই আপনি পাবেন ভূতের বাড়িতে শরীর হিম হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি। শীতের রাতে ভূতের সঙ্গে আড্ডা এমন রোমাঞ্চ যাঁরা মিস করতে চান না, তাঁদের এ জন্য যেতে হবে খুলনা শহরের টুটপাড়া কবরখানার পাশেই অবস্থিত আনসার ক্যাম্পে।


কখনো নারীকণ্ঠে হাসির শব্দ, আবার কখনো ছায়ামূর্তি এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়েছে এখানে যাঁরা থেকেছেন। এই বাড়ির ইতিহাস নিয়ে আবার নানা রকম জনশ্রুতি আছে। তবে যতদূর জানা যায়, নাটোরের দীঘাপাতিয়া রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা রাজা দায়ারাম ১৭১৪ সালে খুলনা ও যশোরের অনেক জমি দখল করে নেন।


আর এই রাজা দায়ারামের বোনের মেয়ে ছিলেন শীলা। শীলা অপূর্ব সুন্দরী ছিলেন। শীলা তাঁর মামাবাড়িতে অবস্থানকালে রাজবাড়িতে অনুষ্ঠিত যাত্রা দেখতে গিয়ে অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন এক যাত্রাশিল্পীর। এই যাত্রাশিল্পীর নাম ছিল নিশিকান্ত। গোপনে তাঁরা অভিসারে বের হতেন। এমনই চলতে থাকে। একদিন তাঁরা পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ধরা পড়ে যান দায়ারামের কর্মচারীর কাছে।


বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে দায়ারাম শীলাকে বিয়ে দেন নিধুরাম নামের এক যুবকের সঙ্গে। তাঁদের খুলনায় পাঠিয়ে দেন এবং তাঁদের আশ্রয় হয় এই বাড়িতে।


শীলা এই আঘাত মেনে নিতে পারেননি। নিধুরামকে কখনো স্পর্শও করতে দেননি।


একসময়ে শীলা আত্মহত্যা করেন এবং ঘটনার আকস্মিকতা বোঝার আগেই নিধুরামও আত্মহত্যা করেন। সেখান থেকেই ভৌতিক কার্যক্রমের সূত্রপাত। তবে কেউ কেউ দাবি করেন, বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন জনৈক দীননাথ সিংহ। তিনি ছিলেন কুখ্যাত নীলকর উইলিয়াম রেনির অন্যতম সহযোগী।


পাকিস্তান আমলে জনৈক মোক্তার এ বাড়িতে বসবাস করতে আসেন। তাঁর এক ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাড়িতে মারা যান।


এরপর গোলাম জব্বার নামের এক ডাক্তার এ বাড়িতে বাস করতে এলে তাঁর এক চাকরও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।


সাধারণ লোকের ধারণা, এগুলো সব নাকি ভূতের কারসাজি।


কোথায় থাকবেন

তবে আপনাকে এখানে রাতযাপন করতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে খুলনা রেঞ্জের আনসার ডিপার্টমেন্ট থেকে।


কেননা, এই বাড়ি এখন আনসারের অধীনে। এই বাড়ির পাশেই গড়ে উঠেছে আনসার ক্যাম্প।


কীভাবে যাবেন

খুলনা শহরের প্রাণকেন্দ্র রয়্যাল মোড় থেকে ইজি বাইকে করে পাঁচ টাকা খরচে পৌঁছে যাবেন টুটপাড়া কবরখানার মোড়।


সেখান থেকে যে কাউকে আনসার ক্যাম্পের কথা জিজ্ঞাসা করলেই আপনাকে দেখিয়ে দেবে। আর বর্তমান আনসার ক্যাম্পের পাশেই এই ভূতের বাড়ি। ওখানে ভূতের বাড়ি লেখা একটি নামফলকও দেখতে পাবেন।