বেতন আলোচনায় যে কথাগুলো বলা উচিত নয়

লাইফ স্টাইল December 23, 2016 888
বেতন আলোচনায় যে কথাগুলো বলা উচিত নয়

বর্তমানে চাকরি যেন একটি সোনার হরিণ। চাকরির বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, বেতন নির্ধারণ।


বর্তমানে বেশিরভাগ চাকরির বেতন নির্ধারিত থাকে না। মূলত ইন্টারভিউ টেবিলেই বেশিরভাগ চাকরির বেতন নির্ধারিত হয়ে থাকে। ইন্টারভিউ টেবিলে চাকরিদাতা এবং চাকরি প্রার্থী ছোট্ট একটি আলোচনার মাধ্যমে বেতন নির্ধারণ করে থাকেন।


এক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীর চেষ্টা থাকে আলোচনার মাধ্যমে তার বেতনটা কতটা বেশি উচ্চতায় উঠানো যায়। আবার চাকরিদাতার অভিপ্রায় থাকে কত কম বেতনে কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে তারা বেছে নিতে পারেন।


তাই ইন্টারভিউ টেবিলে হওয়া বেতন নিয়ে আলোচনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মূলত এটি একটি শিল্প। এ শিল্পে যে যত বেশি পারদর্শী দিনশেষে তারাই জয়ী হয়।


তবে বেতন নিয়ে আলোচনারও কিছু নিয়ম-নীতি আছে, যা একজন চাকরি প্রার্থীর জন্য মেনে চলাটা অত্যাবশ্যকীয়। বেতন নিয়ে আলোচনায় যে ২২টি কথা চাকরি প্রার্থীদের কখনোই বলা উচিত হয়, তা নিয়েই এ প্রতিবেদন। আজকে প্রথম পর্বে থাকছে ১০টি।


১. ‘আমি রাজি’ (প্রথম অফারেই)

মনে রাখবেন এটি একটি আলোচনা যেখানে মূলত দুই পক্ষ বেতন নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাবেন। রায়ান কান নামের একজন ক্যারিয়ার কোচ বলেন, ‘বেতনের প্রথম প্রস্তাবেই হ্যাঁ বলে আরো আলোচনার পথটিকে বন্ধ করে দিবেন না, যেখানে সুযোগ রয়েছে আরো আলোচনা করার।


২. ‘আমি এত প্রত্যাশা করছি’

কখনো বেতনের প্রথম সংখ্যাটি যেন আপনার মুখ থেকে বের না হয়। কখনই বলবেন না আমি এত প্রত্যাশা করছি। এটা একটা ভয়ানক কৌশল।


কান বলেন, সবচেয়ে ভালো কৌশল হল নিয়োগকর্তার মুখ থেকেই প্রথম বেতনের সংখ্যা বের হতে দেওয়া। এতে আপনি জানতে পারবেন তারা আপনাকে কত বেতন প্রস্তাব করল এবং এতে আপনিও সেখানে থেকে দরাদরি করে আপনার বেতনটা বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পাবেন।


৩. ‘যে বেতনের কথা বলেছেন সেটা কি ফিক্সড?’

কখনই এটা বলবেন না বা এমন কোনো কথা বলবেন না, যাতে নিয়োগকর্তা আঘাত পান এমনকি যদিওবা আপনার কাছে মনে হচ্ছে যে, যে বেতন তারা প্রস্তাব করেছেন তা হাস্যকর। সফল প্রার্থীরা এক্ষেত্রে তা মোকাবেলা করে থাকে।


৪. ‘আমার কাছে আরো অনেক লাভজনক অফার আছে’

এমনকি আপনার কাছে সত্যিই এরকম কোনো অফার থেকে থাকলেও ইন্টারভিউ টেবিলে বেতন নিয়ে আলোচনায় তা ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এতে নিয়োগকর্তা আপনাকে অফারটি ব্যাখ্যা করতে অনুরোধ জানাতে পারেন এবং তখন যদি প্রমাণিত হয় যে আপনি শুধু শুধু ধমকি দিয়েছেন তখন মুখ রক্ষা করাই কঠিন হবে।


৫. ‘না’

প্রথমেই ‘না’ বলবেন না। আলোচনায় আপনাকে নমনীয় হতে হবে এবং পাল্টা প্রস্তাব প্রদান করতে হবে যখন দেখবেন যে কোনো প্রস্তাব আপনার চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কিন্তু কখনই প্রথমে ‘না’ শব্দটি বলবেন না। কান বলেন, না বলার মাধ্যমে মূলত আপনি দ্রুত আপনার হাতে থাকা অফারটি দেয়ার দরজাই বন্ধ করে দিচ্ছেন।


৬. ‘এটাই আমার শেষ প্রস্তাব’

এই বাক্যাংশটি হুমকির মতো শোনায় এবং এটি সাধারণত আলোচনার পথটাই বন্ধ করে দেয়। এইচআর বিশেষজ্ঞ স্টিভ কেইন বলেন, আপনি যদি এরকম কোনো চাহিদার কথা বলেন যা নিয়োগকর্তা দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয় তাহলে আলোচনার পথটাই বন্ধ হয়ে যাবে।


৭. ‘আমি জানি এই কথাটি হয়ত শুনে একটু উচ্চাভিলাষী মনে হতে পারে, কিন্তু...’

আপনার কথাটি যতটাই যুক্তিপূর্ণ হোক না কেন কখনই এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে কোনো অনুরোধ করা ঠিক নয়।


৮. ‘আমি বেতন জিজ্ঞাসা করাটা অপছন্দ করি, কিন্তু...’

এটা ঠিক যে, আরো বেশি অর্থের জন্য জিজ্ঞাসা করাটা সহজ কোনো পদ্ধতি নাও হতে পারে। কিন্তু ‘এটা বলতে আমি অপছন্দ করি’- এটি একটি ফ্ল্যাট আউট মিথ্যা কথা। এছাড়াও এটি আলোচনা বন্ধ করার জন্য সত্যিই একটি ভয়ঙ্কর উপায়।


৯. ‘আমার প্রয়োজন...’

আপনার কখনোই এরকম বলা ঠিক হবে না যে, আমার এত টাকা প্রয়োজন কারণ আমার খরচ বেশি বা ঋণ রয়েছে। টেলর বলেন, ইন্টারভিউ টেবিলে ব্যক্তিগত বিষয় আনবেন না, এটি আপনার মেধা ও কাজের সম্পর্ক।


১০. ‘আমি শুনেছি আপনি অন্য একজকে এত অফার করেছেন এবং আমি কঠোর পরিশ্রমী’

কখনই বেতন নিয়ে আলোচনায় এরকম কোনো গল্প জুড়ে দিবেন না, স্পষ্টভাবে অন্যদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করবেন না। এটি একটি অপেশাদারী আচরণ এবং শুধু অসফল মানুষ তা ব্যবহার করে।