শীতে ত্বকের বাড়তি যত্ন

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস December 17, 2016 963
শীতে ত্বকের বাড়তি যত্ন

আসছি- আসব করতে করতে চলেই এসেছে শীত। আর সাথে করে নিয়ে এসেছে নানারকম সুবিধা-অসুবিধাকেও। শীতকে ভালোবাসেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। সত্যিই তো! শীতের দিনেই তো টাটকা শাক-সব্জি পাওয়া যায়, পাওয়া যায় খেজুরের রস আর লেপের তলার উষ্ণ ওম। কিন্তু এতসব প্রাপ্তির ভেতরেও শীত নিয়ে আসে কিছু উটকো ঝামেলাকে তার সাথে করে। ত্বক ফেটে যাওয়া, চুল রুক্ষ হওয়া, ঠোঁট শুকিয়ে ফেটে যাওয়াসহ আরো হাজারটা অসুবিধে রয়েছে শীতের। আর এসব অসুবিধাকে পাশ কাটাতে না পারার কারণেই শীতকে ঠিকঠাকভাবে যেন উপভোগই করা হয়ে ওঠে না অনেকের। কিন্তু এই শীতে আর সেই ঝামেলাগুলো জ্বালাবে না আপনাকে। ভাবছেন কি করে মুক্ত থাকবেন শীতের এমন বাজে আক্রমণ থেকে? ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যেই দেওয়া হল শীতের রুক্ষতার ভেতরেও নিজেকে সুন্দর আর প্রাণবন্ত করে রাখার উপায়।


শীতের প্রকোপ ছেলে-মেয়ে দুজনের ওপর পড়লেও যেহেতু ছেলেদের ত্বক মেয়েদের তুলনায় অনেকটা বেশি রুক্ষ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ঝামেলায় বেশি পড়েন তারা। বিশেষ করে গোসলের পর শীতের দিনে তাদের ত্বক প্রচন্ড রকমের শুকিয়ে যায়। আর এ সমস্যার সমাধান হিসেবে বাজারে অনেক কোম্পানিই এনেছে উন্নতমানের সব লোশন আর ক্রিম। ঠিক একই কথা প্রযোজ্য মেয়েদের বেলাতেও। মুখ ধোয়ার পর টানটান চামড়ার ধকল অনেকেই কাটাতে পারেন না। আবার ক্রিম মাখলে অতিরিক্ত চিটচিটে হয়ে যায় ত্বক। এসময়ে ছেলে-মেয়ে সবারই খেয়াল রাখা উচিত সঠিক ক্রিম আর লোশন বাছাই করার ক্ষেত্রে। কিন্তু অনেকসময় সঠিক লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করেও ঠিকঠাক প্রাণবন্ত আর স্বাভাবিক ত্বক পাওয়া যায়না সামান্য কিছু ভুলের জন্যে। এই যেমন- মুখ না ধুয়েই ক্রিম লাগানো অথবা খুব গরম পানিতে গোসল করা ইত্যাদি। আর তাই শীতে নিজের ত্বককে যদি করে তুলতে চান সুন্দর ও কোমল তাহলে এক পলকে দেখে নিন নীচের টিপসগুলো...


১. কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে হবে। পানি খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা হওয়া যাবে না।


২. ছেলেদের ক্ষেত্রে শেভ করার পর ক্রিম লাগাতে হবে। এবং ক্রিম লাগানোর আগে সবসময়ই মুখ খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।


৩. রোদে বেশিক্ষণ থাকার দরকার হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। আর ব্রণ আর তৈলাক্ত চামড়ার সমস্যা থাকলে ব্যবহার করতে হবে অয়েল কন্ট্রোল ফেসওয়াশ।


৪. সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহারের সাথে সাথেই বাইরে বের হওয়া যাবে না। খানিক সময় অপেক্ষা করতে হবে। সময় দিতে হবে লোশনকে ত্বকের সাথে মিশে যাওয়ার জন্যে।


৫. শাকসব্জি খুব বেশি খেতে হবে। পানি পান করতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে।


৬. ভেষজ প্যাক লাগানো যেতে পারে ত্বকে। তবে প্যাক লাগাতে না চাইলে টমেটো, কমলালেবু বা শসার মতন জিনিসগুলো লাগানো যেতে পারে।


৭.গোসলের সময় ময়েশ্চারাইজিং সাবান ব্যবহার করতে হবে। এচাড়া রাতে ঘুমাবার আগে ৪ ভাগের এক কাপ দুধে এক চামচ মধু ও এক চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে বিশ মিনিট লাগিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে উজ্জ্বল ও সুন্দর হবে আপনার ত্বক।


৮. কনুইয়ের কাছে অনেক সময় খসখসে ভাবটা বেশি থাকে এবং যেতে চায় না। সেক্ষেত্রে গরম ভাপ দিতে পারেন।


৯. ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধে আছে নানা রকমের লিপজেল। সেগুলো ব্যবহার করুন। দূরে থাকুন ম্যাট লিপস্টিক থেকে। খেয়াল রাখুন ঠোঁটে যেন বেশি ঘষা না লাগে কখনো। তবে এক্ষেত্রে পানির বিকল্প আর কিছু নেই। পান করতে হবে প্রচুর পানি। ঠোঁটে কালো দাগ থাকলে গ্লিসারিন ও লেবুর রস লাগান। কাজে দেবে। আর ঠোঁটকে উজ্জ্বল, নরম আর আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রতিদিন গ্লিসারিন, মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে ৩-৪ মিনিট ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন।


১০. শীতে অনেক সময় শরীরে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি ইত্যাদি উঠে তাকে। সেক্ষেত্রে সবসময়ই নিজেকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। উলের কাপড় পড়ার সময় ভেতরে একটা সুতি গেঞ্জি পরুন। গোসলের সময় হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে নিন লিকুইড অ্যান্টিবায়োটিক।


১১. পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়াটা বেশ বড় ঝক্কির ব্যাপার সবার কাছে। এটি থেকে মুক্তি পেতে গোসলের সময় গোড়ালি প্রতিদিন ডলুন। এতে করে মৃতকোষ আলাদা হয়ে যাবে। ব্যবহার করুন লোশন। আর ঘুমোনোর আগে পায়ে লাগান পেট্রোলিয়াম জেলী। প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে পায়ে লাগাতে পারেন কমলালেবুর খোসা বাটা, বুটের ডাল, কাঁচা হলুদ ও চন্দনের প্যাক।