“দুঃখিত” না বলে যে পাঁচ কথা বলতে হবে

লাইফ স্টাইল December 15, 2016 1,184
“দুঃখিত” না বলে যে পাঁচ কথা বলতে হবে

সম্প্রতি আমি প্যান্টিন এর একটি বিজ্ঞাপন দেখি যেটি গত জুনে ভাইরাল হয়েছে।


এতে অভিনেত্রীর নিখুঁত এবং সুন্দর চুল লক্ষণীয়ভাবে দৃষ্টিগোচর করার পাশাপাশি এমন অনেক পরিস্থিতির উপস্থাপন করা হয়েছে যেখানে নারীরা অপ্রয়োজনীয়ভাবে “দুঃখিত” বলেন। সব কথপোকথনেই এখন নারীরা এই শব্দটি হরহামেশাই ব্যবহার করেন।


বিজ্ঞাপনটির একের পর এক দৃশ্যে নারীদেরকে তুচ্ছ কারণে দুঃখিত বলতে দেখা যায়।


এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, নারীদের সবসময়ই গভীর অনুশোচনাতাড়িত হওয়া উচিৎ নয়। এখানে রইল এমন কয়েকটি সচরাচর কারণ যেখানে নারীরা দ্রুত দুঃখ প্রকাশ করেন। এসব ক্ষেত্রে “দুঃখিত” না বলে যে কথাগুলো বলা যায়...


১. সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশে

শুধু নারীরা নন অনেকেই “দুঃখিত” শব্দটিকে ব্যবহার করেন সংক্ষেপে সহানুভূতি প্রকাশে। সহকর্মীদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ কর্তব্যপরায়ণতা এবং স্মার্টনেসের লক্ষণ। তবে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা জগতের সব দুর্ঘটনার জন্যই ক্ষমা চাওয়াটা অপ্রয়োজনীয় এবং পরিতাজ্য।


দুঃখিত বলা ছাড়াও সহকর্মীদের সঙ্গে বোঝাপড়া প্রদর্শন এবং আস্থার সম্পর্ক তৈরির নানা বিকল্প উপায় রয়েছে।


উদাহরণত, “আমি দুঃখিত যে যানজটের কারণে আপনার দেরি হয়েছে”, এই কথা না বলে বরং বলুন, “ওই ভয়াবহ যানজটের কারণে আপনার দেরি হয়েছে যা সত্যিই খুব হতাশাজনক”।


২. শুন্যস্থান পূরণ করার জন্য

“উম”, “উহ”, এবং “দুঃখিত” শব্দগুলো অনেক সময় কথপোকথনের মাঝখানের শুন্য স্থান পূরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের ব্যবহার অর্থহীন। দুঃখিত শব্দটিও এমন ব্যবহারে অর্থহীনই থাকে। মূলত কথা আটকে যাওয়ার ফলে আমরা এসব শব্দ ব্যবহার করি।


“আমাদের দরকার… দুঃখিত…, প্রথমেই, অর্থায়ন থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া। ” এভাবে না বলে বরং আমরা বলতে পারি, “আমাদের দরকার, (বিরতি। নীরবতা), প্রথমেই, অর্থায়ন থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া।


৩. বাধা দেওয়া বা ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য

বেশিরভাগ নারীকেই সবসময় অব্যর্থভাবে নম্র-ভদ্র থাকার প্রশিক্ষণ দিয়ে লালন-পালন করা হয়। বিশেষকরে কর্মক্ষেত্রে নম্র-ভদ্র থাকার কথা বলা হয় বেশি। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে দুঃখিত শব্দটি বলতে হবে।


প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি এবং আপনি কী ধরনের বৈঠকে আছেন এবং অন্য যারা উপস্থিত আছে তাদের আচরণের ধরনের ওপর নির্ভর করে এর ব্যবহার করতে হবে। দুঃখ প্রকাশ করে নিজের কথা বললে আপনার মর্যাদা খাটো হবে। যদি অন্যরাও একই রকমভাবে না করে। সুতরাং আগে শুনুন আপনার সহকর্মীরা কীভাবে তাদের অবদানগুলো বৈঠকে উপস্থাপন করছেন। এবং “দুঃখিত” বলা এগিয়ে চলুন যদি তারা কেউ তা না বলেন।


“আমি দুঃখিত মাঝপথে বাধা দেওয়ার জন্য…”, না বলে বরং বলুন, “আমি বলতে চাই/জিজ্ঞেস করতে চাই…” বা “ভালো পয়েন্ট, আমিও যোগ করতে চাই…”


“দুঃখিত, আপনার কী এক মিনিট সময় হবে?” না বলে বরং বলুন, “আমাকে মাফ/ক্ষমা করবেন…”


৪. শান্তি বজায় রাখার জন্য

বেশিরভাগ নারীকেই খুব অল্প বয়স থেকে উষ্ণ, লালন-পালনকারী, অমায়িক হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়। আর আমরা অনেক সময় দুঃখিত শব্দটি ব্যবহার করি সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য। অনেক সময় নতুন করে কথপোকথন শুরু করার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা হয়। বিশেষ করে একটি মুখোমুখি, বিতর্কমূলক এবং অস্বস্তিকর মুহূর্তের পর। তবে, “দুঃখিত” শব্দটি লজ্জা এবং আক্ষেপেরও প্রতিনিধিত্ব করে। এবং এটি আপনাকে দূর্বল হিসেবেও দেখাতে পারে।


সুতরাং, “আমি দুঃখিত, কিন্তু আমি এই কৌশলগত পরিবর্তনটি বুঝতে পারছি না” এভাবে না বলে বরং বলুন, “আমি এ বিষয়ে আপনার কাজের মূল্যায়ন করি, কিন্তু আমি এই কৌশলগত পরিবর্তনটির পেছনের কারণ বুঝতে পারছি না”


“আমি দুঃখিত, যদি এটা আক্রমণাত্মক হয়…”, এভাবে না বলে বরং বলুন, “আমি যা বলতে যাচ্ছি তা হয়তো বিতর্কিত হতে পারে…”


৫. বলতে, এবং প্রকৃতই বুঝাতে, দুঃখিত

প্রচুর সময় আছে যখন কর্মক্ষেত্রে ক্ষমা প্রার্থনা করাটা যথাযথ। তবে শুধু দুঃখিত বললেই চলবে না বরং আপনি কী কারণে দুঃখিত তাও প্রকাশ করতে হবে।


আপনি যদি অনবরত অতিক্ষমাপ্রার্থী হন এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে ক্ষমা প্রার্থনার সংখ্যা কমিয়ে আনতে চান তাহলে প্রতিবার ক্ষমা প্রার্থনার সঙ্গে কারণটিও বলুন। তাহলে দেখবেন আপনার কথায় কথায় ক্ষমা প্রার্থনার অভ্যাস কমে আসবে। কারণসহ আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা অনেক বেশি কার্যকর হয়।