শীতের বিষণ্নতা কাটাতে ছয়টি গবেষণালব্ধ উপায়!

লাইফ স্টাইল December 7, 2016 713
শীতের বিষণ্নতা কাটাতে ছয়টি গবেষণালব্ধ উপায়!

শীত তার সকল আনুষঙ্গিক নৈরাশ্য নিয়ে ধেয়ে আসছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমরা মৌসুমী মেজাজ মন্দা মোকাবেলায় সক্ষম নই।


এমনকি শীতের তীব্রতার সঙ্গে আমাদের দেহের এন্ডোরফিন, ডোপামিন, সেরোটোনিন এবং অক্সিটোসিন নিঃসরণের সমন্বয় সাধনের বেশ কিছু প্রমাণিত কৌশল রয়েছে। এই হরমোনগুলো মস্তিষ্কের রাসায়নিক হিসেব পরিচিত যেগুলো সুখ-শান্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ।


১. ইতিবাচক চিন্তার চর্চা করুন

শীতের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার সবচেয়ে ভালো উপায় কি এটিই? সুখি চিন্তা করুন। ইতিবাচক মনোভঙ্গি মস্তিষ্কের এই রাসায়নিকগুলোর উন্নতি সাধন করে। সুতরাং আমার এক নাম্বার পরামর্শ হলো ইতিবাচক মনোভঙ্গিকে একজন লোকের বিশেষ দক্ষতা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে এবং এ বিষয়ে কাজ করতে হবে।


অন্য কথায়: ইতিবাচকতাকে একটি বিশেষ ব্যক্তিত্ব প্রবণতা হিসেব গণ্য করবেন না, যা আপনার মধ্যে আছে বা নেই। বরং একে একটি দক্ষতা হিসেবে ভাবুন যা আপনিও অর্জন করতে সক্ষম।


২. নিঃসঙ্গতা এড়িয়ে চলুন

শীতকালে আপনার হয়তো শুধু বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করবে এবং কোনো মানুষের সংস্পর্শে আসতে ইচ্ছে করবে না। অথচ আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এর চেয়ে বেশি ক্ষতিকর কোনো কাজ হতে পারে না।


সুতরাং ঘরে গুটিসুটি মেরে বসে বা শুয়ে না থেকে বরং বাইরে বের হয়ে লোকের সঙ্গে মেলামেশা করুন। সামাজিক মেলামেশা না করাটা আপনার জন্য ধুমপানের মতোই মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।


সবচেয়ে ভালো হয় সমাজসেবামূলক কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে যোগ দিন। পরপোকারী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করলে মস্তিষ্কের সুখ সংক্রান্ত রাসায়নিকগুলোর মধ্যে ভারসাম্য স্থাপিত হবে।


৩. সঠিক খাবার খান

এমন কোনো একটি অতিক্ষমতাধর খাবার নেই যা আপনার মেজাজের মন্দা দূর করতে পারবে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আপনাকে অবশ্যই ভালো রাখবে।


এমন কিছু বিশেষ খাবার রয়েছে যেগুলো বিশেষ করে মস্তিষ্কের রাসায়নিকগুলোর জন্য অনুকূল। এ ধরনের খাদ্যগুলো হলো, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ব্লুবেরি, পাতা কপি এবং ডালিম।


তবে আমি বরং একটি বিশেষ খাবার গ্রহণের বদলে সার্বিকভাবে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেব। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণ ফলমূল, শাকসবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন যুক্ত করুন।


শীতকালে ভালো খাবার খাওয়ার ফলে আপনার মেজাজ মর্জি দুই উপায়ে ভালো হবে।


প্রথমত, এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আপনার পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়াগুলোকেও ভালো রাখবে। আর এসব ব্যাকটেরিয়া প্রায়ই মস্তিষ্কের রাসায়নিক নিঃসরণের গতি প্রকৃতিতে বদল ঘটিয়ে মেজাজ মর্জিকে প্রভাবিত করে।


৪. সত্যিকার রোদ পোহান

সাধারণত বেশি বেশি রোদ এবং সূয্যের আলো গ্রহণ করলে আমাদের মেজাজ মর্জি ভালো থাকে।


এমনটি প্রকৃতপক্ষে মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যাদের মেজাজ মর্জিরও পরিবর্তন ঘটে তাদের চিকিৎসায় ডাক্তাররা প্রায়ই লাইট থেরাপি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।


তবে কেউ যদি ভেবে থাকেন সূর্যের আলো থেকে যেহেতু ভিটামিন উৎপাদিত হয় সেহেতু ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলেই চলবে। এমন ভাবাটা মারাত্মক ভুল হবে।


৫. নিয়মিত যৌন মিলন করুন

যৌন তৎপরতার মস্তিস্কের রাসায়নিকগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিশেষকরে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণের সঙ্গে যৌনতার সরাসরি সংযোগ রয়েছে।


অক্সিটোসিন হরমোন সামাজিক বন্ধনে উৎসাহিত করে। সুতরাং যখন ঘরে আটকে থাকবেন তখন একটি ঘন্টা সময় ব্যায় করার সবচেয়ে উত্তম উপায় হলো যৌন মিলন করা।


৬. ঘাম ঝরান

শরীর চর্চার মাধ্যমে ঘাম ঝরান। এতে মস্তিষ্কে ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টিকারী এন্ডোরফিন নিঃসরিত হবে। আর এতে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।


সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার