শান্তিতে নোবেল যাদের পাওয়া উচিত

মজার সবকিছু December 3, 2016 1,243
শান্তিতে নোবেল যাদের পাওয়া উচিত

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার যেন মুড়ি মুড়কির মতো ব্যাপার! শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো ভূমিকা থাকুক আর না থাকুক, ইচ্ছামতো যে কাউকে তা দিয়ে দেয়া যায়! অথচ পৃথিবীতে এমন অনেক ব্যক্তি কিংবা বস্তু আছে, যারা কিংবা যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে দেশ, জাতি ও মানব সভ্যতাকে পরম শান্তি প্রদান করে চলেছে!


বিটিভি


দেশে যতই অপরাধ, অবরোধ হরতাল অথবা অশান্তিমূলক কর্মকাণ্ড চলুক না কেন, বিটিভি খুললেই আপনি নিশ্চিত শান্তির দেখা পাবেন। আপনি দেখতে না চাইলেও বিটিভি আপনাকে জোর করে হলেও শান্তির জোয়ার দেখাবে। শান্তি এবং উন্নয়নের জোয়ার দেখতে দেখতে শান্তিতে আপনার মন ভেসে যাবে। তাই বিটিভি শান্তিতে নোবেল পাবার শক্তিশালী দাবিদার।


নির্বাচন কমিশন


নির্বাচনের সময় দেশে যতই ভোট কারচুপি, সহিংসতা বা লাঠি খেলা চলুক না কেন, তাদের তথ্য অনুসারে সারা দেশে সব সময়ের জন্য ‘শান্তিপূর্ণ’ ভাবে ভোট গ্রহণ চলতেই থাকে। এত দুর্দান্ত রকমের শান্তি রক্ষা আর কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব হওয়ার কথা না! তাই নির্বাচন কমিশনকে শান্তিতে নোবেল দেয়া সময়ের দাবি।


তারানা হালিম


দেশের শান্তি রক্ষার জন্য এহেন কাজ নেই যা তিনি করেননি। সাময়িকভাবে যাবতীয় ‘অশান্তির উৎস’ ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটঅ্যাপ বন্ধ রাখা থেকে শুরু করে অনিবন্ধিত সিমগুলোও তিনি বাতিল করে দিয়েছেন। সেই বন্ধ সিমগুলো ইদানীং কান চুলকানোর কাজে ব্যবহৃত হয়ে মানুষকে শান্তি দিয়ে যাচ্ছে!


শান্তি রক্ষার্থে প্রয়োজন হলে তিনি চিরদিনের জন্য সারা দেশের মোবাইল সংযোগও বন্ধ করে দিতে পারেন। শান্তির জন্য জানপ্রাণ উজাড় করে মহৎ সব কাজ করে যাওয়া এই মহীয়সী অবশ্যই শান্তিতে নোবেল পাওয়ার দাবিদার!


লুঙ্গি


একজন পুরুষ ফুলপ্যান্ট, হাফপ্যান্ট, শর্টপ্যান্ট যেই প্যান্ট-ই পরুক না কেন, লুঙ্গি পরার মতো মজা সে অন্য কিছুতে পাবে না। লুঙ্গি


অটোমেটিক পুরুষদের এদিক-সেদিক দিয়ে সর্বদা প্রাকৃতিক হাওয়া বাতাস সরবরাহ করে থাকে। যার ফলে পুরুষরা পায় অনাবিল প্রশান্তি। তাই লক্ষ কোটি পুরুষদের শান্তির কথা বিবেচনা করে লুঙ্গিকে শান্তিতে নোবেল দেয়া যেতে পারে।


শান্তির মা


মনে শান্তি না থাকলে অনেকেই বলে থাকেন, ‘শান্তির মা ঘুমায় গেছে’ অথবা ‘শান্তির মা মইরা গেছে’! অর্থাৎ শান্তির মা জেগে থাকলে অথবা জীবিত থাকলে কেউই আর অশান্তিতে থাকবে না। তাই শান্তির মাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে বা কবর থেকে তুলে এনে তাকে শান্তিতে নোবেল দেয়া যেতে পারে।


বাংলা সিনেমার পরিচালক


পুরো বাংলা সিনেমাতে যতই ভুল বোঝাবুঝি, অশান্তি, খুন-খারাবি থাকুক না কেন, সিনেমা শেষ হওয়ার মুহূর্তে সিনেমার পরিচালক নায়ক নায়িকাকে অবশ্যই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে বাধ্য করেন। তাই বাংলা সিনেমার পরিচালকদের শান্তিতে নোবেল না দিলেই নয়!


মার্ক জুকারবার্গ


আধুনিককালে শান্তির অপর নামই যেন ফেসবুক! একটু পর পর ফেসবুকে লগ ইন না করলে মনের শান্তি আর শান্তি থাকে না। স্ট্যাটাস বা ছবিতে শ’-এর ওপর লাইক বা বেশি কমেন্ট পেলে তো মনে হয় জীবনে দুঃখ কষ্ট নাই, সব ঠিকঠাক, ফিটফাট!


সমাজে কত সমস্যা, কত অসঙ্গতি, তারপরও ফেসবুকাররা কি শান্তিতেই না সব ঝামেলা ভুলে আপন মনে ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত থাকে,"অমুক ইজ নট অমুক উইদআউট... টাইপ ফেসবুকের বিভিন্ন অর্থহীন গেম শান্তির সঙ্গে খেলতে পারে!


পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের জন্য এই শান্তির ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গকে শান্তিতে নোবেল না দিলে নোবেলের অবমাননা করা হবে!


কটন বাড


কটন বাড এমন একটি জিনিস, যেটি ব্যবহারের সময় মানুষ চোখ দুটো বুঁজে ভিন্ন এক জগতে চলে যায়। যে জগতে নেই কোনো দুঃখ, নেই কোনো কষ্ট, নেই কোনো যন্ত্রণা। সে জগতে আছে কেবল শান্তি আর শান্তি। তাই ছোট বা চিকন বলে অবহেলা না করে কটন বাডকে শান্তিতে নোবেল দেয়া কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।


নাপিত


যে ব্যক্তি কোনোদিন সেলুনে বসে নাপিতের কাছে থেকে বডি ম্যাসেজ বা মাথা টিপে নেয়নি, সে কোনোদিনও বুঝবে না শান্তি কি জিনিস! তাই কোনো রকম চিন্তাভাবনা না করেই নাপিতদের শান্তিতে নোবেল দিয়ে দেয়া উচিত।


কোলবালিশ


কোলবালিশকে ব্যাচেলরদের শান্তির প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। কেন এমন আখ্যা, তা কেবলমাত্র ব্যাচেলররাই জানে। এই শীতে বউ নেই বলে যেসব ব্যাচেলরদের মনে দুঃখ-কষ্টের শেষ নেই, তাদের মনে কিঞ্চিৎ সুখ-শান্তির পরশ বুলাতে এই কোলবালিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যের শান্তির জন্য নিঃস্বার্থভাবে যুগের পর যুগ নিজেকে সপে দিয়ে আসা এই বস্তুটিকে শান্তিতে নোবেল না দেয়াটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।


তথ্যসূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর