অকারনে জুমআ’র নামায না পড়া প্রসঙ্গে কুরআন-হাদিসে সুস্পষ্ট সতর্কতা ও শাস্তির ঘোষণাগুলো জানেন কী ?

ইসলামিক শিক্ষা December 2, 2016 1,489
অকারনে জুমআ’র নামায না পড়া প্রসঙ্গে কুরআন-হাদিসে সুস্পষ্ট সতর্কতা ও শাস্তির ঘোষণাগুলো জানেন কী ?

ইয়াওমুল জুমআ’ বা শুক্রবার। অসহায়-দরীদ্র মুসলমানের জন্য ‘হজের দিন’, ‘ঈদের দিন’। ঈমানদার মুসলমানের ঈমান বৃদ্ধির দিন। সর্বোপরি মুসলমানদের কাছে সপ্তাহের সেরা দিন শুক্রবার। আনন্দ- উৎসবের সঙ্গেই ছোট থেকে বড় সবাই জুমআ’র নামাজ আদায় করতে মসজিদে হাজির হয় এদিন ।


জুমআর নামাজ আমাদের সামনে সপ্তাহে একবারই হাজির হয়। এ দিনের ফজিলত অনেক। জুমআর নামাজ থেকে বিরত থাকা, তাই কোনো মুসলমানের উচিত নয়। জুমআর দিনকে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ব্যতিত জুমআ’র নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ।


চার শ্রেণির লোক হল-


ক. ক্রীতদাস;

খ. স্ত্রীলোক;

গ. অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক;

ঘ.মুসাফির এবং রোগাক্রান্ত ব্যক্তি।


(আবু দাউদ)।


জুমআ`র নামাজ না পড়ার পরিণাম-

সুতরাং বিনা ওজরে যে বা যারা জুমআর নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকবে, তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ পরিণাম। যা তুলে ধরা হলো-


ক. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমআ বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (তিরমিযী,আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)।


খ. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জুমআ ত্যাগকারী লোকেরা হয় নিজেদের এই খারাপ কাজ হতে বিরত থাকুক। (অর্থাৎ জুমআর নামাজ আদায় করুক), নতুবা আল্লাহ তাআলা তাদের এই গোনাহের শাস্তিতে তাদের অন্তরের ওপর মোহর করে দেবেন। পরে তারা আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।


গ. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা এই রকম- যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমআ পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পিছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।




অতপর অনন্তর যারা আল্লাহ বিধান অমান্য করে জুমআর নামাজের ব্যাপারে অলসতা ও অবহেলা করে খেলতামাশা দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য কঠিন হুশিয়ারি স্বরূপ তৎপরবর্তী আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন-


‘তারা যখন কোনো ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে; তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। (হে রাসুল) আপনি বলে দিন, আল্লাহর কাছে যা আছে (ছাওয়াব ও নৈকট্য লাভে), তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।’ (সুরা জামআ : আয়াত ১১)


তাছাড়া বিশ্বনবি আয়াত নাজিলের পরও তাদের সতর্ক করতে হাদিসে উল্লেখ করেছেন, হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর নামাজ হতে বিমুখ থাকে এবং খেলাধুলা ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকবে আল্লাহ তাআলা তার থেকে বিমুখ থাকবেন। আল্লাহ স্বয়ং সমৃদ্ধ এবং অধিক প্রশংসিত। (দারাকুতনি)


হাদিসে বর্নিত আছে, বিনা ওজরে (যথাযোগ্য কারন ) যে বা যারা জুমআর নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকবে, তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ পরিণাম।


ক. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমআ বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (তিরমিযী,আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)।


খ. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জুমআ ত্যাগকারী লোকেরা হয় নিজেদের এই খারাপ কাজ হতে বিরত থাকুক। (অর্থাৎ জুমআর নামা আদায় করুক), নতুবা আল্লাহ তাআলা তাদের এই গোনাহের শাস্তিতে তাদের অন্তরের ওপর মোহর করে দেবেন। পরে তারা আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।


গ. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা এই রকম- যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমআ পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পিছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।


পরিশেষে…

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিন দুনিয়ার সকল প্রকার কাজ-কর্ম, খেল-তামাশা, ক্রীড়াকৌতুক, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিহার করে নামাজের প্রতি মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে সরাসরি জুমআ পরিত্যাগকারীকে অভিসম্পাত করা হয়েছে।


তাই আল্লাহর অভিশাপ ও উত্তম রিযিক থেকে বঞ্চিত না হতে উম্মতে মুহাম্মাদির সব সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ জুমআর প্রতি গুরুত্বরোপ করা জরুরি। আল্লাহর ঘোষণা তিনি জুমআ পালনকারীদের জন্য রেখেছেন সর্বোত্তম রিযিক।


সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাঁর বিধান পালনে মুসলিম উম্মাহকে যথা সময়ে জুমআর নামাজ আদায়ের প্রতি যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণ দান করুন। আমিন।