মানবজীবনে টানাটানি চক্র

মজার সবকিছু November 16, 2016 1,353
মানবজীবনে টানাটানি চক্র

-জন্মগ্রহণের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ : জন্মের পরপরই কোলে নেন নার্স। তারপর শুরু হয় টানাটানি। বাবা কোলে টানে, মা কোলে টানে, পাড়া-প্রতিবেশী টানে, আত্মীয়-স্বজন টানে_ মোট কথা টানাটানি চলতেই থাকে।


-বয়স যখন স্কুলে ভর্তি হওয়ার : স্কুলে ভর্তি হতেই একগাদা বই নিয়ে টানাটানি। পিঠ কুঁজো হয়ে যায়, তবুও বইয়ের ওজন কমে না। টানতেই হয়। স্কুলে ভর্তি হওয়া নিয়েও টানাটানি চলে এক দফা। বাবা বলে এই স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেব। মা বলে ওই স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেব। মহামুশকিল!


-বয়স যখন উঠতি : প্রেম নিয়ে টানাটানি। আজ রিনাকে ভালো লাগে, কাল ভালো লাগে টিনাকে। কাকে রেখে কার সঙ্গে প্রেম করব? এভাবেই টানাটানি করতে করতে পার হয়ে যায় কলেজ লাইফ। কতইবা আর টানা যায়। অনেকে আছে, টেনশনে সিগারেট টান দেয়।


-বয়স যখন চাকরির : চাকরির পত্রিকা নিয়ে টানাটানি। দৈনিক পত্রিকার চাকরির পাতা নিয়ে টানাটানি। চাকরি একটা চাই। কিন্তু চাকরি কেমনে পাই? চাকরির ইন্টারভিউ নিয়েও টানাটানি। পা টানতে টানতে আজ এই ইন্টারভিউ তো কাল ওই ইন্টারভিউ। পায়ের স্যান্ডেল ক্ষয় হোক, চাকরি একটা চাই।


-বয়স যখন বিয়ের : বিয়ে করা নিয়ে টানাটানি। বাবার পছন্দ একটা তো মায়ের পছন্দ এক রকম। এর মাঝে নিজের পছন্দের কথা বলাই হলো না। আজ এই মেয়ে দেখা, কাল ওই মেয়ে দেখা। এভাবে পাত্রী টানাটানি করতে করতেই একসময় হয়ে যায় বিয়ে।


-যখন মাঝ বয়স : মাঝ বয়স মানে সংসারের ঘানি টানার সময়। সংসারে এটা নেই, ওটা নেই। ছেলেমেয়ের স্কুলের খরচ। কোন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবে সেই চিন্তা। বউয়ের আবদার মেটানো, ছেলেমেয়েদের আবদার_ সোজা বাংলায় জীবন শ্যাষ!


-বয়স যখন শেষের দিকে : সব তো শেষ হয়ে গেছে ছেলেমেয়েদের মানুষ করতেই। শরীরটা নিয়েও ছেলেমেয়েদের টানাটানি। বড় ছেলে তার বাড়িতে টানে, ছোট ছেলে তার বাসায়। মেয়েও কম যায় না। সেও টানে, 'বাবা আমার কাছে থাক।' ওদিকে নাতি-নাতনিকেও টানতে হয়। ঘোড়া হয়ে নাতি-নাতনিকে পিঠে নিয়ে টানতে হয়।


-জীবন যখন যায় যায় : শেষ বয়সে শরীরটা নানান রকম রোগের গোডাউন হয়ে যায়। আজ এই হাসপাতাল তো কাল অন্য হাসপাতাল। দেশের ডাক্তার ব্যর্থ হলে এবার বিদেশ যাও। তাতেও যদি শেষ রক্ষা না হয় তাহলে বিধাতা টান দিয়ে নিয়ে যায় ওপারে।