অ্যাপলের নতুন ম্যাকবুক প্রো: হালকা ও দ্রুত, তবে সবার জন্য নয়

কম্পিউটার রিভিউ November 16, 2016 1,213
অ্যাপলের নতুন ম্যাকবুক প্রো: হালকা ও দ্রুত, তবে সবার জন্য নয়

যখন অ্যাপল তার নতুন ম্যাকবুক প্রো ল্যাপটপের সঙ্গে পরিচয় ঘটায় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের, তখন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অ্যাডাম লেভেনথাল দারুণ আগ্রহী ছিলেন। নতুন ম্যাকবুক সম্পর্কে তার মতামত এখানে তুলে ধরেছেন তিনি।


নতুন ল্যাপট হিসাবে ম্যাকবুক প্রো অন্যগুলোর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এর একটি অংশ হতে পারে এর নতুন মডেল। যারা দীর্ঘদিন ধরে পেশাদারী কাজে ম্যাকবুক ব্যবহার করছেন তারা বুঝতে পারবেন। এবার এই সংস্করণে কিছু বড় পরিবর্তন আনার কারণে পুরনো ব্যবহারকারীরা কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছেন।


নতুন সংস্করণে ম্যাকবুক প্রো-তে একটিমাত্রা কানেকশন পোর্ট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আগের মডেলগুলোতে কয়েক ধরনের ছিল। ফলে মানুষকে বাড়তি অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিবোর্ড অ্যাপল দুই সারির ফিজিক্যাল কি দিয়েছে। এখানে দেওয়া হয়েছে ভার্চুয়াল টাচ স্ট্রিপ যার নাম টাচ বার।


তবে সুবিধা আছে। নতুন ল্যাপটপটি দ্রুতগতির এবং অনেক হালকা-পাতলা। ব্যাটারি ১০ ঘণ্টা চলে। টাচ বারের ভার্চুয়াল বাটনগুলো অ্যাপ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এর দাম পড়ছে ১৫০০-২৮০০ ডলারের মধ্যে। যদিও এটি অনেক পেশাদার ব্যক্তির জন্য কাজের, কিন্তু এটি যে কিনতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।


ইউএসবি-সি : নতুনটাতে ইউএসবি-সি পোর্ট ব্যবহার করা হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এটি পুরনো পোর্টের স্থান দখল করবে। ম্যাকবুক প্রো-তে এটাই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বলেই মনে হয়েছে। আগের মডেলে ইউএসবি-এ এবং এইচডিএমআই পোর্ট ছিল। তাই নতুনটার ক্ষেত্রে সব কাজে ইউএসবি-সি পোর্টের ওপরই নির্ভর করতে হবে। অবশ্য ইউিএসবি-সি এর মাধ্যমে অ্যাপল ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।


টাচ বার : এর মাধ্যমে অ্যাপল কিছু পুরনো কি বাদ দিতে চাইছে। টাচ বারে একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরও দেওয়া হয়েছে। টাচ বারে লাইব্রেরির ফটো দেখানো হয় থাম্বনেল আকারে। কোনো ফটো এডিট করতে তাকে বাছাই করতে হবে এখান থেকে। সাফারি ব্রাউজার ব্যবহার করলে টাচ বারের মাধ্যমে একাধিক ট্যাব বেছে নিতে পারবেন। এস্কেপ কি এখন টাচ বারের ভার্চুয়াল বাটন হিসাবে বিরাজ করবে। অনেকে এটি ব্যবহার করেন না। কিন্তু কোডারদের জন্য ফিজিক্যাল এস্কেপ কি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


গতি ও মেমোরি : এই মডেলে সর্বোচ্চ ১৬ গিগাবাইট র‌্যাম ব্যবহার করা যাবে। আগের মডেলেও এমনটাই ছিল। এ ছাড়া একই ধরনের প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। তবে আগের মডেলের চেয়ে অনেক দ্রুত নতুনটি। ২০১২ সালে বের হওয়া ১৫ ইঞ্চির মডেলের চেয়ে নতুনটি ১৭ শতাংশ বেশি দ্রুত কাজ করে। গ্রাফিক প্রসেসর আগেরটির চেয়ে দ্বিগুন শক্তিশালী।


তবে যাদের আরো বেশি গতি দরকার, তাদের জন্য র‌্যামের সীমবদ্ধতা সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যত বেশি র‌্যাম হবে তত বেশি অ্যাপ দ্রুতগতিতে ব্যবহার করতে পারবেন আপনি। তাই অনেকের জন্য আরো বেশি র‌্যাম জরুরি হতে পারে।


পেশাদার ম্যাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে দুটো দল তৈরি হবে নতুন ম্যাকবুক প্রো'য়ের কারণে। যারা সাধারণ ব্যবহারকারী তাদের জন্য নতুন একটি ল্যাপটপের প্রতি আগ্রহ আসবে। তাদের জন্য ফেসবুক ব্যবহার বা ব্রাউজিং ইত্যাদি কাজের জন্য ক্রোমবুকই যথেষ্ট। নতুনটি অনেক পেশাদার ব্যবহারকারীর জন্য দারুণ কাজের হয়ে উঠবে। তব ব্যবহার শুরু করলে এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠতে হয়তো সময় লেগে যাবে।


তবে সব মিলিয়ে বলা যায়, ল্যাপটপটি দারুণ শক্তিশালী, উচ্চ রেজ্যুলেশনের পর্দা আর ভালো মানের কিবোর্ড। নতুন টাচ বারটি একটু ভিন্ন অনুভূতি দেবে। তবে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তো কথাই। আশা করা যায়, এটি হবে দারুণ উপভোগ্য। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস