২৬ বছর বয়সে গর্ভধারণ ৭৫ বছরে প্রসব!

ভয়ানক অন্যরকম খবর October 19, 2016 2,143
২৬ বছর বয়সে গর্ভধারণ ৭৫ বছরে প্রসব!

২৬ বছর বয়সে গর্ভবতী হয়েছিলেন জোহরা। প্রসবের মুহূর্ত ঘনিয়ে এলে তিনি অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতর হন। কিন্তু তখন তার প্রসব হয়নি। অবশেষে ৪৬ বছর পর তিনি প্রসব করেন একটি পাথর শিশু। তখন তার বয়স ছিলো ৭৫ বছর

জোহরা আবু তালিব নামে ৯০ বছরের এই নারী মরোক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহরের কাছেই এক গ্রামে পরিবার নিয়ে থাকেন।


সাধারণত ৯ মাস ১০ দিন সন্তান গর্ভে ধারণ করেন নারীরা। তবে কীভাবে এই নারী এত বছর ধরে সন্তান গর্ভে ধারণ করলেন? এ নিয়ে চলছে এখন নতুন গবেষণা।


১৯৫৫ সালে ২৬ বছর বয়সে প্রথম গর্ভবতী হন জোহরা। প্রসবের মুহূর্ত ঘনিয়ে এলে ৪৮ ঘণ্টা ধরে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানে অন্য এক প্রসূতিকে যন্ত্রণাকাতর অবস্থায় মারা যেতে দেখেন তিনি।


এটি দেখে প্রচণ্ড ভয় পান জোহরা। প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই তিনি আবার বাড়ির পথ ধরেন। বাড়ি ফিরে জোহরা টানা কয়েক দিন যন্ত্রণা সহ্য করেন। কিন্তু বাচ্চা গর্ভেই থেকে যায়। আস্তে আস্তে তার ব্যথা কমে যায় এবং গর্ভে বাচ্চার নড়াচড়াও বন্ধ হয়ে যায়।


এটিই ছিলো তার প্রথম সন্তানধারণ। এরপর আর কখনো তিনি মা হতে পরেননি। সন্তান না হওয়ায় তিনটি বাচ্চা দত্তক নেন তিনি। পালক সন্তানরা জোহরাকে নিজের মায়ের মতোই দেখেন। পালক সন্তানদের তিনি বিয়েও দেন। তার নাতিপুতিও রয়েছে। সন্তান ও নাতিপুতি নিয়ে বেশ ভালোই কাটছিলো জোহরার সংসার।


৭৫ বছর বয়সে নতুন করে আবার তার পেটের ব্যথা শুরু হয়। ২০০১ সালে পালক পুত্ররা তাকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। প্রফেসর তাইবি ওয়াজ্জানি জোহরার চিকিৎসা শুরু করেন। ওয়াজ্জানি জোহরার বড় পেট দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি ভেবেছিলেন জরায়ুতে টিউমার হবে হয়তো।


আর এর জন্য তিনি জোহরাকে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে বলেন। কিন্তু আলট্রাসনোগ্রাফি করার পরও বড় কোনো অসুখ ধরা পড়েনি।


তখন প্রফেসর ওয়াজ্জানি জোহরাকে এমআরআই করতে বলেন। এমআরআই করার পর বোঝা গেলো আসল ব্যাপারটি। আর এতেই জানা গেলো জোহরার জীবনের এক লুকানো অধ্যায়।


প্রফেসর তাইবি ওয়াজ্জানি জোহরাকে নিয়ে অনেক বড় সমস্যায় পড়েন। তিনি ভাবছিলেন কেমন করে জোহরার ৪৬ বছর ধরে পেটে ধরে রাখা জমাট বাচ্চাটি অপারেশন করবেন। কারণ ভ্রণটির ওজন ছিল ৩.৫০ কিলোগ্রাম এবং এর দৈর্ঘ্য ছিল ৪২ সেন্টিমিটার।


দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা অপরেশনের পর জোহরার পেট থেকে পাথরের মতো শক্ত মৃত বাচ্চাটি বের করতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা।


পরে তারা শিশুটিকে 'পাথরের শিশু' বলে আখ্যায়িত করেন।