ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো : স্টিভ জবস

স্মরণীয় উক্তি October 8, 2016 1,391
ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো : স্টিভ জবস

পালক বাবা-মা কাছে বড় হয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার পর বুঝতে পারেন তার পড়াশুনা ঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই লেখাপড়া ছেড়ে এক বন্ধুর সঙ্গে গ্যারেজে বসে শুরু করলেন কম্পিউটার বানানোর কাজ। শুরু হলো এক কিংবদন্তীর পথচলা।


সেই গ্যারেজে তৈরি প্রতিষ্ঠান এক সময় রুপ নিলো টেক জায়ান্ট অ্যাপলে। যে ব্যক্তির হাত ধরে শুরু তাকেই এক সময় প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হলো। পকেট নেই পর্যাপ্ত টাকা, এমন সময় ধরা পড়লো ক্যান্সার।


চিকিৎসক জবাব দিয়ে দিলেন। বললেন, আপনার সময় শেষ। বড় জোর তিনমাস। তবুও নিজের জীবনকে নতুন করে শুরু করেন তিনি। তৈরি করে ডিজনি’র মত প্রতিষ্ঠান। এক সময় ভুল বুঝতে পেরে অ্যাপল প্রধান নিবার্হী হিসেবে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। আবার নতুন করে পথচলা শুরু। আর বাকিটা ইতিহাস। একের পর এক চমকে বিশ্বকে তাকি লাগিযে দিয়েছেন। তিনি আর কেউ নন প্রযুক্তি বিশ্বের নায়ক স্টিভ জবস।




মহান এ প্রযুক্তির যাদুকর নিজে যেমন কাজে ডুবে থেকেছেন, তেমনি অন্যদেরও উৎসাহ যুগিয়েছেন। তার চিন্তাধারা প্রকাশ করেছেন নি:সংকোচে। এগুলো প্রযুক্তি বিশ্বে অমর বাণী হিসেবে সোনার অক্ষরে লেখা রয়েছে। চিন্তাধারা পরিবর্তন করে দিতে পারে এসব উক্তি। স্টিভ জবসের তেমনি ১২টি উক্তি অবিস্মরণীয় চিন্তার সম্মিলন ঘটাতে এ প্রতিবেদন।


১. মহৎ কাজের একমাত্র উপায় তুমি যে কাজ করছো তা ভালোবেসে করা।


২. যদি এখনও তোমার ভালোবাসার কাজ খুঁজে না পাও, তাহলে খুঁজতে থাকো। অন্য কোথাও স্থায়ী হয়ে যেয় না। তোমার মনই তোমাকে বলে দেবে, যখন তুমি তোমার পছন্দের কাজটি খুঁজে পাবে। যে কোন ভালো সম্পর্কের মতোই, তোমার কাজটি যতই তুমি করতে থাকবে, সময় যাবে, ততই ভালো লাগবে।


৩. প্রায় সবকিছুই যেমন- অতি প্রত্যাশা, সব গর্ব, সব লাজলজ্জা ও ব্যর্থতার গ্লানি-মৃত্যুর মুখে হঠাৎ করে সব নেই হয়ে যায়। টিকে থাকে শুধু সেটাই, যা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তোমার কিছু হারানোর আছে—আমার জানা মতে, এ চিন্তা দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে, সব সময় মনে রাখা যে- একদিন তুমি মরে যাবে। তুমি খোলা বইয়ের মতো উন্মুক্ত হয়েই আছ। তাহলে কেন তুমি সেই পথে যাবে না, যে পথে তোমার মন যেতে বলছে তোমাকে?


৪. অ্যাপল থেকে চাকরিচ্যুতির কারণে কাজের প্রতি আমার ভালোবাসা এক বিন্দুও কমেনি। তাই আমি আবার একেবারে গোড়া থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম। প্রথমে মনে না হলেও পরে আবিষ্কার করলাম, অ্যাপল থেকে চাকরিচ্যুতিটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো ঘটনা। সেই সময় আমি প্রবেশ করলাম জীবনের সবচেয়ে সৃজনশীল অংশে।


৫. আমি এটা ভেবেই সন্তুষ্ট, সফল উদ্যোক্তাদের ব্যর্থ উদ্যোক্তাদের থেকে যা আলাদা করেছে, তার অর্ধেকই হলো অধ্যবসায়।


৬. কখনও কখনও জীবন তোমাকে ইটপাটকেল মারবে; কিন্তু বিশ্বাস হারিয়ো না।


৭. ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো।




৮. তোমাদের সময় সীমিত। কাজেই কোনো মতবাদের ফাঁদে পড়ে, অর্থাৎ অন্য কারও চিন্তাভাবনার ফাঁদে পড়ে অন্য কারও জীবনযাপন করে নিজের সময় নষ্ট করো না। যাদের মতবাদে তুমি নিজের জীবন চালাতে চাচ্ছ, তারা কিন্তু অন্যের মতবাদে চলেনি, নিজের মতবাদেই চলেছে। তোমার নিজের ভেতরের কণ্ঠকে অন্যদের শেকলে শৃঙ্খলিত করো না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, নিজের মন ও ইনটুইশনের মাধ্যমে নিজেকে চালানোর সাহস রাখবে।


৯.‘বিশ্বের সেরা ধনী হওয়া আমার কাছে মুখ্য বিষয় নয়, …বরঞ্চ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় নিজেকে যেন বলতে পারি, হ্যাঁ সত্যিই আমি দারুণ কিছু করেছি’।


১০. আপনি কি আপনার বাকি জীবন চিনিযুক্ত পানি বিক্রি করতে চান, নাকি আপনি আমার সাথে আসবেন এবং বিশ্বকে বদলে দেবেন?




১১. আমার বয়স যখন ১৭, তখন আমি একটা উদ্ধৃতি পড়েছিলাম—‘তুমি যদি প্রতিটি দিনকেই তোমার জীবনের শেষ দিন ভাব, তাহলে একদিন তুমি সত্যি সত্যিই সঠিক হবে।’ এ কথাটা আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল এবং সেই থেকে গত ৩৩ বছর আমি প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করি—আজ যদি জীবনের শেষ দিন হতো, তাহলে আমি কি যা যা করতে যাচ্ছি, আজ তা-ই করতাম, নাকি অন্য কিছু করতাম? যখনই এ প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গে কয়েক দিন ‘না’ হতো, আমি বুঝতাম, আমার কিছু একটা পরিবর্তন করতে হবে।


১২. তুমি কখনই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে এক সুতায় বাঁধতে পারবে না। এটা কেবল পেছনে তাকিয়েই সম্ভব। অতএব, তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে, বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো একসময় ভবিষ্যতে গিয়ে একটা অর্থবহ জিনিসে পরিণত হবে। তোমার ভাগ্য, জীবন, কর্ম, কিছু না কিছু একটার ওপর তোমাকে বিশ্বাস রাখতেই হবে। এটা কখনোই আমাকে ব্যর্থ করেনি, বরং উল্টোটা করেছে।