গায়ের পোশাকে উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ

নতুন প্রযুক্তি September 25, 2016 1,518
গায়ের পোশাকে উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ

এমন যদি হয়, আপনার শখের স্মার্ট ফোনটি পকেটেই চার্জ হচ্ছে! যার জ্বালানির যোগান দিচ্ছে আপনার পোশাক। বিষয়টি হাস্যকর মনে হলেও এমনই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।



কয়েক বছর ধরেই শরীরের নড়াচড়াকে কাজে লাগিয়ে পোশাকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সম্প্রতি জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি একদল গবেষক এই বিষয়ে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। এরইমধ্যে তারা এমন এক কাপড় আবিষ্কার করেছেন যা সূর্যের আলো এবং বাতাসের বেগ থেকে জ্বালানি উৎপাদনে সক্ষম।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, একইসঙ্গে দুটি উৎস থেকে জ্বালানি উৎপাদনে সক্ষম কাপড়টি বাজারে এলে ব্যবহারকারীরা বেজায় উপকৃত হবেন। এই কাপড় ব্যবহার করে তাদের স্মার্ট ফোন এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের জ্বালানির যোগান দিতে পারবেন সহজেই।


জর্জিয়া টেক স্কুল অফ ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (Georgia Tech School of Materials Science and Engineering)-এর প্রফেসর ঝং লিন ইয়াং বলছেন, যে কোনো ডিভাইস চার্জের জন্য এই হাইব্রিড কাপড় নতুন যুগের পথ দেখাবে। কেননা সামান্য বাতাস কিংবা সূর্যের আলো থেকেই এই কাপড় প্রয়োজনীয় জ্বালানি উৎপন্ন করতে পারবে।


নতুন এই আবিষ্কার নিয়ে গেত ১২ সেপ্টেম্বর ‘নেচার এনার্জি’ সাময়িকীতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।


ওয়াং’এর দল পলিমার কাপড়ে সোলার সেল এবং সুতায় সহনীয় ট্রাইবোইলেক্ট্রিক ন্যানোজেনারেটর ব্যবহার করেন। এটি তৈরিতে তারা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত একটি কাপড় তৈরির মেশিন ব্যবহার করেন। কাপড়ে ট্রাইবোইলেক্ট্রিক ন্যানোজেনারেটর(Triboelectric nanogenerator) ব্যবহার করায় সামান্য নড়াচড়া থেকেই এটি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নড়াচড়ার পরিমাণ যতো বাড়বে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ততোই বেশি হবে।


এটি শুধু পলিমারেই নয়, যে কোনো কাপড়েই এই পদ্ধতি কাজে লাগানো সম্ভব বলেও মত তাদের। তবে বিশেষ ব্যবস্থা প্রয়োগ করার পরেও কাপড়টি হাল্কা, নরম, বাতাস চলাচল উপযোগী থাকবে বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের।


প্রতিবেদনে ইয়াং বলেন, সাধারণত বাজারে যে ধরনের কাপড় পাওয়া যায় তার বেশিরভাগেই পলিমার সম্পর্কিত উপাদান দেয়া থাকে। অবশ্য এতে উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও তা কিন্তু প্রকৃতিবান্ধব। তবে তাদের আবিস্কৃত কাপড় বাজারে বড় আকারে উৎপাদিত হলে খরচ অনেক কমে আসবে।


এর আগে বিজ্ঞানীরা তাদের উৎপাদিত কাপড়টির একটি অংশ পতাকার ন্যায় উড়িয়ে প্রথমে পরীক্ষা করেন। বিজ্ঞানীরা দেখেন এই কাপড়ের টুকরোটি সত্যি সত্যি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হচ্ছে। তারা বলছেন, পরিধানে ব্যবহার করা ছাড়াও পরিবহনে ব্যবহার করলে আংশিক জ্বালানি চাহিদা এতে মেটানো সম্ভব।


রোদেলা দিনে তো বটেই বাতাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাপড়টি সক্ষম হওয়ায় মেঘলা দিনেও এটি কার্যকর থাকবে। শুধু তাই নয়, কাপড়টি যে কোনো আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই। রোদ কিংবা বৃষ্টিতে কাপড়ের কোনো ক্ষতি হবে না। নষ্টও হবে না।