খাবার সংগ্রহে কাকের দক্ষতা

জানা অজানা September 16, 2016 942
খাবার সংগ্রহে কাকের দক্ষতা

বোকা পাখি হিসেবে পরিচিতি আছে কাকের। লোকে বলে, অন্যের থেকে খাবার লুকিয়ে রাখার জন্য কাক নিজেই চোখ বন্ধ করে কোথাও গুঁজে রাখে। ভাবে, কেউ দেখেনি। কিন্তু পরে নিজে আর তা খুঁজে পায় না।


এমন বোকা পাখি কাকের একটি বিশেষ প্রজাতির রয়েছে অনন্য দক্ষতা। ছোট ছোট কাঠি ও অন্যান্য জিনিস ব্যবহার করে এরা খাবার সংগ্রহ ও বিলিবণ্টন করতে পারে। প্রাণিজগতে এটা এক বিরল দক্ষতা।


যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে এই বিশেষ প্রজাতির কাকের বসবাস। নাম ‘আলালা’। এরা বিলুপ্তপ্রায়। এদের ওপর বিস্তর পরীক্ষা চালিয়েছেন স্কটল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী। তাঁরা গত বুধবার বলেছেন, কাঠির নানা রকম ব্যবহার জানে আলালা। এরা নিপুণ দক্ষতায় লম্বা কাঠি ব্যবহার করে মাংস বা খাবার সংগ্রহ করে। প্রয়োজন অনুযায়ী কখনো সেই কাঠি ছোট করে নেয়। উদ্ভিদের লতাপাতা বা বাকল দিয়ে কাঠি বানিয়েও নিতে পারে।


এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। স্কটল্যান্ডের সেইন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রমবিকাশমূলক বাস্তুসংস্থান বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিয়ান রুটজ বলেন, নিজেদের কাজকর্মের প্রয়োজনে নানা উপকরণ ব্যবহার করাটা প্রাণিজগতে অত্যন্ত বিরল। আলালা হচ্ছে এ রকম দক্ষতাসম্পন্ন দ্বিতীয় কাক প্রজাতি। অপরটির আবাস দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিউ ক্যালেডোনিয়া দ্বীপে। এরা মরা কাঠ ও অন্য গাছের ভেতর থেকে কাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে পোকামাকড় বের করে খায়।


নিউ ক্যালেডোনিয়ান ও হাওয়াইয়ান কাকের মধ্যে একটা ব্যাপারে মিল আছে। উভয়ের ঠোঁট অস্বাভাবিক রকমের সোজা। বিজ্ঞানীরা এই বৈশিষ্ট্যের কারণ খুঁজছেন। আলালাকে বিলুপ্তি থেকে বাঁচানোর চেষ্টাও করছেন তাঁরা।


অসুখবিসুখ, আবাস ধ্বংস প্রভৃতি কারণে এরা হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো বেঁচে আছে এই প্রজাতির ১৩১টি পাখি। হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ড এবং মাউই দ্বীপের দুটি সংরক্ষিত জায়গায় এদের রাখা হয়েছে।


উপকরণ ব্যবহারে মানুষই সবচেয়ে পারদর্শী। এরপরই শিম্পাঞ্জির স্থান। এরা শিকার ও মধু সংগ্রহের কাজে লাঠি বা কাঠি কাজে লাগাতে পারে। আর মিসরের একাধিক প্রজাতির শকুন ও বাজপাখি খাবার ও অন্য পাখির ডিম ভাঙতে পাথর ব্যবহার করে থাকে। এমনকি কিছু বোলতা, কাঁকড়া ও মাকড়সাও উপকরণের ব্যবহার জানে।