ভালোবাসার ব্রান্ড এ্যাম্বাসেডর কেনো বলা হয় লাভবার্ড কেঃ ভালোবাসায় ভরপুর যাদের জীবন

জানা অজানা September 9, 2016 3,297
ভালোবাসার ব্রান্ড এ্যাম্বাসেডর কেনো বলা হয় লাভবার্ড কেঃ ভালোবাসায় ভরপুর যাদের জীবন

ভালোবাসা নামক আত্মিক বন্ধনে আবদ্ধ প্রেমিকযুগলকে প্রায়ই লাভ বার্ড বলা হয়ে থাকে। এটা কিন্তু এমনেই বলা হয় না। অনেকগুলো কারনও আছে এর পিছনে। অনেকে মনেকরে ভালোবাসা দিবস ও রোমান্টিক ভালোবাসা প্রকাশের প্রতিক হিসেবে লাভ বার্ড কে বিবেচনা করা হয়। তাই মজা করে বলাই যেতে পারে লাভবার্ড হল ভালোবাসার “ব্যান্ড এ্যাম্বাসেডর”। চলুন জেনে আসা যাক “লাভবার্ড” সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য।


লাভবার্ড এর প্রজাতিক নাম “আগাপোরনিস”। গ্রিক ভাষায় আগাপেইন হলো (Agapein) “to love” ও ওর্নিস (Ornis) হলো ল্যাটিন শব্দ “বার্ড”। সাড়া পৃথিবীতে এই প্রজাতির পাখিটি লাভ বার্ড নামে পরিচিত। এদের গড় আয়ুঃ ২০ বছর। এরা ৫-৭ ইঞ্ছি বা ১৩ থেকে ১৭ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এদের আদিনিবাস আফ্রিকা এবং মাদাগাস্কার।


সারা পৃথিবীতে নয় জাতের লাভ বার্ড দেখা যায়, এর মধ্যে আট জাতের মূল আবাসস্থল আফ্রিকা এবং একটি জাতের মূল আবাসস্থল মাদাগাস্কার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় প্রজাতি হচ্ছে “Beloved Peach-Faced Lovebird”। এরা সাধারণত ১০-১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।


লাভ বার্ড যদিও তোতা পাখি প্রজাতির,কিন্তু তারা মানুষের কথা অনুকরন করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু লাভ বার্ড প্রজাতির মায়েরা বাচ্চাদেরকে ছোটবেলায় এই কথা অনুকরন যেন না করে বাচ্চাদের সেই রকম শিক্ষা দেয়, কেননা যদি তারা অন্য প্রানীর ভাষা অনুকরন করে তাহলে তাদের যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই বলা যেতেই পারে লাভ বার্ড প্রজাতির মায়েরা হল সচেতন মা।


লাভবার্ড এর যদি একটি সঙ্গি মারা যায় বা পাল থেকে আলাদা হয়ে যায়,তবে বাকি জন এমন খেয়ালি আচরণ করে যেন সে হতাশায় ভুগছে। এরা একা থাকতে একদম পছন্দ করেনা, বন্দি মানুষের মত অসহায় আচরণ করে থাকে। মুলত লাভবার্ড হল হতাশায় ভোগা পাখি।


আজকাল রেস্টুরেন্ট এ প্রায়ই দেখা যায় প্রেমিকযুগল একে অপরের মুখে খাবার তুলে খাওয়াচ্ছে। একটি দীর্ঘ বিচ্ছেদের সমাপ্তির পর লাভবার্ডরা তেমনি মানুষের মত একে অপরের মুখে খাবার তুলে খাওয়ায় যেন তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক আবার আগের মত হয় কিংবা তার চেয়েও বেশি সুন্দর হয়। এজন্য লাভবার্ডকে রোমান্টিক পাখি বলা হয়ে থাকে।


এরা সাধারনত কাউন, চিনা, বারজা, তিসি, সূর্যমুখী ফুলের বিচি, কুসুম ফুলের বিচি, সরিষা, ধান, বিভিন্ন ধরনের ফল, কচি ঘাসের পাতা ও সবজি ও বিভিন্ন ফল খেতে পছন্দ করলেও বিভিন্ন ফাস্টফুড বিশেষ করে চকলেট খেতে পছন্দ করে। অনেকে তাই তো বলে থাকে লাভবার্ড মানুষের মত ডায়েট করে থাকে।


একটি পাখি দিনে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ গ্রাম খাবার গ্রহণ করে। আবহাওয়া অনকুলে থাকলে ও পর্যাপ্ত পরিমাণ যত্ন নিলে লাভ বার্ড প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর বৎসরে সাধারনত ৪ বার ডিম দেয়।


তোতা পাখির প্রজাতির মধ্যে পড়লেও এরা তোতাপাখির চেয়ে অধিক জনপ্রিয়। কেননা তোতাপাখির চেয়ে এরা আকারে ছোট এবং এদের সৌন্দর্যও অধিক। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এদেরকে খুব অল্প জায়গাতেই লালন পালন করা সম্ভব। আমাদের দেশে সহজেই লালন পালন করা যায় বিধায় ও দেখতে খুব সুন্দর ও সামাজিক পাখি বলে অনেকেই বাসায় পালন করেন থাকে।


মানুষের মত অনেক প্রাণীর মধ্যেই এই প্রেম ভালোবাসা বিদ্যমান। তবে লাভবার্ড এর কিছু মজার মজার বৈশিষ্ট্যের জন্য এটা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সবার কাছে। তাই লাভবার্ড পাখি ভালোবাসার বার্তা বয়ে নিয়ে চলুক ভালোবাসার অন্যতম প্রতিক হিসেবে। ভালোবাসার জয়গান হোক সবক্ষেত্রেই।