ফেসবুকীয় নানা রোগ, এর লক্ষণ এবং প্রতিকার। আপনার কোনটি?

মজার সবকিছু September 6, 2016 1,351
ফেসবুকীয় নানা রোগ, এর লক্ষণ এবং প্রতিকার। আপনার কোনটি?

ফেসবুকের যুগে আমরা সবাই কম-বেশি ফেসবুক ম্যানিয়ায় আক্রান্ত। বিভিন্ন ফেসবুক রোগ এবং এর লক্ষণ সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক--




লাইকোসিস (likosis)

লক্ষণ: চোখের সামনে ছবি কিংবা স্ট্যাটাস আসামাত্রই লাইক বাটন ক্লিক করা। এই রোগের অনেকগুলো ধরণ আছে। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর ধরণটি 'একটিভ লাইকোসিস'। একবার একটিভ লাইকোসিস-এ ধরলে জীবন শেষ।


লাইকোফোবিয়া (likophobia)

লক্ষণ: যত মজার স্ট্যাটাস কিংবা ছবিই হোক, এই রোগে আক্রান্ত রোগী তা কখনোই লাইক দেবে না। মাঝে মাঝে এরা 'আমরা কি পারি না...' ধরনের স্ট্যাটাস দিয়ে প্রচুর লাইকের আশায় বসে থাকে।


গোবেষাইটিস (Gobeshaitis)

লক্ষণ: এরা নিজেদেরকে গবেষকরূপে উপস্থাপন করে থাকেন। তারা দিনের একটি দীর্ঘ সময় ইয়াহু আনসার এবং উইকিহাও'তে কাটান এবং ক্রিকেট, ফুটবল, রাজনীতি, রকেট সায়েন্স, পদার্থ বিজ্ঞান থেকে শুরু করে নারীর মন সবকিছু নিয়ে তারা গবেষণা করেন। গবেষণালব্ধ ফলাফল ফেসবুকে পোস্ট করে জাতিকে উদ্ধার করেন।


শাইফেবুমিয়াসিস (shyfbmiasis)

লক্ষণ: অনেক দিন পর পর ফেসবুকে লগড ইন হবে। দুই সপ্তাহ কিংবা তিন সপ্তাহের অধিক এই সময়কাল হলে বুঝতে হবে রোগী শাইফেবুমিয়াসিসে আক্রান্ত।


চ্যাটোফোবিয়া (chatophobia)

লক্ষণ: এ ধরনের রোগী কখনোই অনলাইন হবে না। যদিও কালেভদ্রে অনলাইন হয়, তা-ও কেউ নক করলেই আবার অফলাইনে চলে যায়।


বিপ্লবাইটিস (Biplobitis)

লক্ষণ: এরা যেকোনো ইস্যুতে বিপ্লব করতে ভালোবাসেন। প্রথমে তারা ইভেন্ট খুলেন তারপর মানবন্ধন করেন। সবশেষে মানবন্ধনের ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়ে লাইক গুনেন।


জংগরেন সিন্ড্রোম (Jonggren Syndrome)

লক্ষণ : জংগি হওয়ার জন্য এরা খুব ভার্নারেবল। এরা বিভিন্ন ছবি টবি আপলোড দেয় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলে - বুকে এক বিন্ধু রক্ত থাকলে লাইক না দিয়ে যাবেন না। এক লাইক = এক নেকি।


জার্নালাইটিস (Journalitis)

লক্ষণ : এদের দুইদিন পরপরই সাংবাদিক চেতনা জেগে উঠে। চেতনা সহ্য করতে না পেরে সাথে সাথে অনলাইন পত্রিকা খুলে ফেলে। তারপর তাদের কাজ একটাই, বিখ্যাত পত্রিকাগুলো থেকে খবর টুলকিফাই করে নিজের সাইটে আপ করা এবং এরপর ফেসবুকে তাদের নিজেদের পত্রিকার লিংক শেয়ার করা। এভাবে তারা জাতির তথ্য পাবার অধিকার নিশ্চিত করে থাকেন।


অনলাইনোমায়াসিস (onlineomiasis)

লক্ষণ: এ ধরনের রোগীকে সব সময় অনলাইনে পাওয়া যায়। হোক তা মোবাইল থেকে অথবা কম্পিউটার।


অ্যাড মেহলাইসিস (admehlysis)

লক্ষণ: এই ধরনের রোগীরা বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টে অথবা ইনবক্সে 'অ্যাড মে, আই এম ব্লক' বিভিন্ন লোকরে কাছে বন্ধৃত্বের আকুল আবেদন জানান।


ট্যাগ সিনড্রোম (tag syndrome)

লক্ষণ: এই রোগাক্রান্ত রোগী দিনে একাধিক ছবি আপলোড করে সবাইকে ট্যাগ দিয়ে থাকে। লাইক পাক বা না পাক, এ নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। তাদের এই ট্যাগ করাতেই আনন্দ।


গ্রুপিং ডিস্ট্রোফি (Grouping Dystrophy)

লক্ষণ: এই রোগীরা অবসর সময়ে গ্রুপ খোলেন এবং গনহারে বন্ধুবান্ধবকে সেই গ্রুপে অ্যাড করেন। কেউ গ্রুপ লিভ দিলে ঘাড় ধরে তাঁকে আবার গ্রুপে ঢুকান। ঐ গ্রুপে তিনি নিজেই পোস্ট দেন, নিজেই লাইক দেন।


স্যাডসিনড্রোম (sadsyndrome)

লক্ষণ: এ ধরনের রোগী সারা দিন ফেসবুকে দুঃখের কবিতা কিংবা আই হেট লাভ টাইপ স্ট্যাটাস দেয়। এই গ্রুপে ১১ বছরের তরুনী থেকে শুরু করে ৬৬ বছরের বৃদ্ধও আছেন। ১১ বছরের তরুনী তাদের অতীতকে ভুলে যেতে চান। অন্যদিকে ৬৬ বছরের বৃদ্ধ বড় হয়ে জীবনটাকে গোছাতে চান।


রিকোয়েস্ট সিনড্রোম (requestsyndrome)

লক্ষণ: এই রোগে আক্রান্ত রোগী যাকে সামনে পায় তাকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে।


কমেন্টটোলারিয়া (commentolaria)

লক্ষণ: এই রোগাক্রান্ত রোগী সব পোস্টেই অসাম, সুপারব, ওয়াও, এগিয়ে যান, একদম আমার মনের কথাই বললেন, সাথে আছি টাইপ কমেন্ট করতে ব্যস্ত থাকেন।


পোস্টলিও (postlio)

লক্ষণ: পোস্টলিও রোগে আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ হচ্ছে, মেয়েদের ওয়ালে কবিতা ও সুন্দর সুন্দর ছবি পোস্ট করা। প্রয়োজনে ডিএসএলআর দিয়ে মেয়েদের ছবি তুলে দিয়ে এরা মেয়ে মহলে জনপ্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে।


ইনবক্সালাইসিস (inboxalisis)

লক্ষণ: এরা যে কোন পোস্ট শুরু করে সাধারণত এই বাক্য দিয়ে, ‌'সেদিন ইনবক্সে আমার একজন ভক্ত জানালো...।' কিন্তু সেই স্ক্রিনশট তারা কখনো প্রকাশ না করলেও দুষ্টু মেয়েরা এদের লেখা মিষ্টু মিষ্টু ইনবক্স প্রায়ই প্রকাশ করে দিয়ে এদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়।


স্ট্যাটিওলাইসিস (statiolysis)

লক্ষণ: এই রোগে আক্রান্ত রোগী দিনে অজস্রবার স্ট্যাটাস আপডেট দিয়ে হোম পেজ ভরিয়ে রাখে। এরা অনেকটা 'যদি তোর স্ট্যাটাসে কেউ লাইক না দেয় তবুও স্ট্যাটাস দাও রে' দ্বারা প্রভাবিত। এদের সাধারণত নিজের স্ট্যাটাসে নিজেকেই লাইক দিতে দেখা যায়।


ডিঅ্যাক্টিবেসিস (deactibasis)

লক্ষণ: এরা প্রেমঘটিত কারণে ঘন ঘন আইডি ডিএক্টিভেট করে। এদের আইডি অ্যাক্টিভেট আর ডিঅ্যাক্টিভেট দেখে প্রেমের সম্পর্ক কেমন চলতে তা অনুমান করা যায়। তবে এরা কখনোই স্বীকার করে না কেন আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট করা। জিজ্ঞেস করলেই বলে, 'ফেসবুক একটা ফালতু জিনিস। এত টাইম কিল করে। বই পড়া হচ্ছিল না, অনেক কাজ পেন্ডিং ছিল সেগুলো করতে পারছি এখন।' সম্পর্ক ঠিক হয়ে গেলে আইডি অ্যাক্টিভেট করে এদের আবার সারাদিন ফেসবুকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।


প্রতিকার: কমপক্ষে সাত দিন ফেসবুক থেকে দূরে থাকা। এবং মস্তিষ্ক রিফ্রেশ করা। এতেও কাজ না হলে প্রতিটি রোগের অ্যান্টি রোগ ফলো করা।


(এর মধ্যে কোন রোগ মিস হয়ে গেলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার ক্রেডিট দিয়ে সেটা যোগ করে দেওয়া হবে।)