মনকে প্রশান্তি দিতে ঘুরে আসুন 'মৈনট ঘাট' থেকে!

দেখা হয় নাই September 4, 2016 1,124
মনকে প্রশান্তি দিতে ঘুরে আসুন 'মৈনট ঘাট' থেকে!

প্রত্যেকটি মানুষই মনকে একটু প্রশান্তি দিতে দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে চান। কিন্তু সময়ের কারণে ও ব্যস্ততার কারণে সেটি সম্ভব হয় না।


অনেকের আবার ঘুরতে বেরিয়ে পড়বার আগে কত কিছু চিন্তা করতে হয়! সময়, পর্যাপ্ত অর্থ এবং ভালো ভ্রমণ সঙ্গী নিয়ে একটা চিন্তা থেকেই যায়। ঢাকার আশেপাশে যতগুলো দর্শণীয় স্থান রয়েছে তার সবগুলো হয়তো আপনি এতদিনে দেখে ফেলেছেন। হাতে পর্যাপ্ত অর্থ ও সময় নেই দূরে কোথাও ঘুরতে যাবার, অথচ নিজেকে প্রাণবন্ত করার জন্য একটু নান্দনিক এবং মনোরম পরিবেশের প্রয়োজন। তাই হন্যে হয়ে খুঁজছেন ঢাকার আশে পাশেই কোনো মনোরম পরিবেশ।


ঢাকার খুব কাছেই পদ্মা নদীর উত্তাল ঢেউ দেখতে আর নৌকা ভ্রমনে যেতে পারেন নবাবগঞ্জের দোহার উপজেলার মৈনট ঘাটে। এখানে আসলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবেন পদ্মার অপরূপ উত্তাল জলরাশি দেখে। বিস্তীর্ণ জলরাশি আর নদীর বুকে জেলেদের সারি সারি নৌকা দেখলে মনে হবে আপনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আছেন।


এ জায়গা এখনো সবার কাছে পরিচিত না হওয়ায় অনেক ভ্রমনপিপাসু মানুষই বঞ্চিত হচ্ছে এই সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে। খুব ভোরবেলা আসলে পাবেন সারারাত জেলেদের ধরা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বাজার। চাইলে এখান থেকে সস্তায় মাছ কিনতেও পারবেন।


মৈনট ঘাটের সৌন্দর্য উপভোগ করার শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে বর্ষাকাল। পদ্মার পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দেখার মজাই আলাদা।


ছুটির দিনগুলোতে আশেপাশের স্থানীয় লোকজন পদ্মার বুকে স্পীডবোট আর ট্রলার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। দূরদুরান্ত থেকেও টুরিস্ট আসতে শুরু করেছে।


এখানে শুধুমাত্র সৈকত দেখে ফিরে যেতে হবে এমনটা নয়। এর পাশাপাশি আপনি দেখে যেতে পারবেন নবাবগঞ্জের জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, আনসার ক্যাম্প, খেলারাম দাতার বাড়িসহ আরো কিছু দর্শনীয় স্থান।


কীভাবে আসবেন:

ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে আসার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়টি হচ্ছে গুলিস্তানের গোলাপ শাহের মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা যমুনা পরিবহনে বাস। ৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাট। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন।


মৈনট থেকে ঢাকার উদ্দেশে শেষ বাসটি ছেড়ে যায় সন্ধ্যা ৬টায়। যারা প্রাইভেট কার অথবা বাইক নিয়ে আসতে চাচ্ছেন, তারা এই বাসের রুটটাকে ব্যবহার করতে পারেন। আসতে সুবিধা হবে।


কোথায় থাকবেন:

ট্যুরিস্টদের থাকার জন্য মৈনট ঘাটের আশপাশে কোনো হোটেল, রিসোর্ট, বোর্ডিং এখনও তৈরি করা হয়নি। স্থানীয় কোনো বাসিন্দার বাড়ি ম্যানেজ করতে না পারলে দিনে এসে দিনেই ফিরে যেতে হবে।


কোথায় খাবেন:

তাজা ইলিশ! শুনেই জিহ্বায় জল এসে গেছে তাই না, বেশির ভাগ মানুষেরই ইচ্ছা থাকে পদ্মার তীরে বসে পদ্মার ইলিশ খাওয়ার। মৈনট ঘাটে মাত্র দুটি ভাতের হোটেল আছে।


একটি আতাহার চৌধুরীর হোটেল অপরটি জুলহাস ভূঁইয়ার আর কার্তিকপুর বাজারে শিকদার ফাস্টফুড নামক একটা খাবারের দোকান আছে। ঢাকা হোটেলসহ আরো কিছু ভাতের হোটেলও আছে। কার্তিকপুরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি অনেকে বিদেশেও পাঠায়।


নিরঞ্জন মিষ্টান্নভাণ্ডার, মুসলিম সুইটস, রণজিৎ মিষ্টান্নভাণ্ডারসহ আরো কিছু মিষ্টির দোকান আছে।


বাড়তি সতর্কতা :

সাঁতার না জানলে গোসল করার সময় পদ্মার বেশি গভীরে না যাওয়াই ভালো। সিগারেট অথবা খাবারের প্যাকেট, পানির বোতল অথবা যেকোনো প্রকার ময়লা যেখানে সেখানে ফেলবেন না। প্রকৃতিকে রক্ষা করা আপনার আমার সবার দায়িত্ব। তাই যেকোন ধরনের পাখি শিকার করা থেকেও নিজেকে বিরত রাখুন।