সিনেমা হলে ফোরডিএক্স প্রযুক্তি

নতুন প্রযুক্তি August 31, 2016 1,207
সিনেমা হলে ফোরডিএক্স প্রযুক্তি

আমাদের দেশের কিছু কিছু ছোট ক্যাফে আছে যারা ফাইভডি কিংবা এইটডি মুভি প্রদর্শন করে! যেখানে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে ফাইভডি এখনো পা রাখেনি সেখানে আমাদের মতো দেশে এইটডি!


তাহলে ঘটনা খুলেই বলি, কিছু এলাকায় ফাইভডি বা এইটডি মুভির নামে কিছু নির্দিষ্ট ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করা হয়, যেখানে দৃশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আপনি যে সিটে বসছেন সেটাকে মাঝে সাঝে কাঁপানো হয়। তবে বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়ায় যে ধরনের মুভি দেখানো হয়, তা অনেকটাই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে।


যা হোক, উন্নত দেশগুলোতে বর্তমানে থ্রিডি সিনেমা হলগুলোকে আরো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে সিনেমা ব্যবসায়ীরা। তারা চাইছেন এসব হলে যে সিনেমা দেখানো হবে তা যেন আরো প্রাণবন্ত ভাবে সিনেমামোদিদের কাছে তুলে ধরা যায়। এজন্য থ্রিডি প্রযুক্তির পরিবর্তে তারা ঝুকছে ফোরডিএক্স প্রযুক্তি ব্যবহারে।


কারণ যেভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তার ছড়ি ঘুরাচ্ছে তাতে সামনে মানুষ হেডফোনের পরিবর্তে ভিআর নিয়েই ঘুরবে আর ভিডিওতে নিজেকে আবিস্কারের নেশায় দেখবে ভার্চুয়াল মুভি। তাই সিনেমা হলগুলোও প্রস্তুত হচ্ছে সেই চ্যালেঞ্জ নিতে। আপনাকে এমন এক অভিজ্ঞতা দিতে চায় যাতে করে আপনাকে আরো বেশি করে মুভির জগতে যুক্ত করা যায়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মতো আপনাকে হয়তো সিনেমার ভিডিও দৃশ্যে (ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতেও অবশ্য এখনই নিজেকে দেখা যাচ্ছে না, সম্প্রতি মার্জড রিয়েলিটি মানুষের হাতকে ভার্চুয়াল জগতে নিতে সক্ষম হয়েছে) একেবারে রিয়েলি যুক্ত করতে পারবেনা তবে সেরকম একটা আবহ কিন্তু তারা দেয়ার চেষ্টা করছে।


ফলে বৃষ্টির দৃশ্য আপনি চাইলে বৃষ্টিতে ভিজেই উপভোগ করতে পারবেন আপনার প্রিয়তমাকে নিয়ে। তাছাড়া কোনো দৃশ্যে যদি নায়িকা স্বল্প বসনে বরফের ওপর নাচতে পারে আপনি তাহলে কেন বরফ ঝড়ে বসে তা উপভোগ করতে পারবেন না?


ফোরডিএক্সে বরফের দৃশ্য দেখানোর সময় বরফ ঝড় উপভোগ্য করতে সিনেমা হলেই শুরু হবে বরফ ঝড়। আর বিভিন্ন গাড়ির দৃশ্য কিংবা আলো আধারির চিত্রায়ন সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলতে যুক্ত হবে অত্যাধুনিক আলোক সম্পাতের ব্যবস্থা। অর্থাৎ সিনেমার দৃশ্যের বাইরেও কিছু অতিরিক্ত আলোর এফেক্ট আপনার কাছে সেই দৃশ্যকে আরো বাস্তবিক করে তুলবে।


আর সিনেমার সিটগুলো বলাইবাহুল্য অটোমেটিকভাবে দৃশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আপনাকে নাড়িয়ে যাবে যাতে আপনি হলের বাইরে গেলেও সেই সিনেমার স্মৃতি রোমন্থন আপনাকে নাড়িয়ে দিতে পারে। এখন দেখার বিষয় বাস্তবিকভাবে এগুলো কতটা গ্রহণযোগ্য হয়।


কেননা কথায় আছে না অতি সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্ট, অতি এফেক্ট না আবার সিনেমার ট্রাডিশনাল মজা নষ্ট করে ফেলে। তাই এটার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে দর্শকদের চাহিদার ওপর। তাছাড়া এ ধরনের হল বানাতে খরচও অনেক, ফলে বেড়ে যাবে সিনেমার টিকিটের মূল্য। তখন কিন্তু দর্শকদের হল বিমুখ হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিতে পারে। তবে আপাত দৃষ্টিতে ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে ফোরডিএক্স নিয়ে অনেককেই আশাবাদী হতে দেখা গেছে। বর্তমানে বিশ্বের ৪১টি দেশে ২৬৮টি সিনেমা হলে ৩৪ হাজারেরও বেশি ফোরডিএক্স প্রযুক্তির আসন রয়েছে।