মুভি রিভিউঃ Hate Story 3 (ভাবখানা এমন যেন লাইফ ইজ অল অ্যাবাউট সেক্স)

মুভি রিভিউ August 6, 2016 1,672
মুভি রিভিউঃ Hate Story 3 (ভাবখানা এমন যেন লাইফ ইজ অল অ্যাবাউট সেক্স)

গত বছরের ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ছবিটি। তেরো কোটি রুপি বাজেটের ছবিটি মুক্তির প্রথম দিনেই নয় কোটি সত্তর লাখ রুপি আয় করে নেয়। সপ্তাহ শেষে ছবিটির আয় দাঁড়ায় পঁয়ত্রিশ কোটি বিশ লক্ষ রুপি। কি আছে এই ছবিতে ? কিছুই নেই। না আছে ভালো কাহিনী, না ভালো অভিনয়। ছবিটি শুধুই কারণে অকারণে যৌনাচার দিয়ে ভরপুর।




ছবির কাহিনী আবর্তিত হয় খ্যাতিমান বিজনেস ম্যাগনেট আদিত্য দিওয়ান (শরমন জোশী) এবং তার স্ত্রী শ্রিয়া দিওয়ানের (জেরিন খান) হাসপাতাল উদ্বোধন দিয়ে যা আদিত্যর মৃত বড় ভাই বিক্রম দিওয়ানের নামে করা হয়। সেখানেই সৌরভ সিংহানিয়া (করণ সিংহ গ্রোভার) নামের একজন প্রভাবশালী আদিত্যকে দামী গাড়ি গিফট করে এবং লাঞ্চের জন্য দাওয়াত দেয়। আদিত্য এবং শ্রিয়া সেই দাওয়াতে উপস্থিত হয় এবং সৌরভ আদিত্যকে প্রস্তাব দেয় যে সে আদিত্যকে বিজনেসের জন্য যত দরকার টাকা দিবে কিন্তু তার জন্য সে শ্রিয়াকে এক রাতের জন্য নিজের কাছে চায়। আদিত্য এতে রাজী হয় না এবং সৌরভ তার প্রতিশোধ নিতে আদিত্যর কোমল পানীয়র ফ্যাক্টরিতে ক্ষতিকর ক্যামিকেল মিশিয়ে দেয় যার ফলে পরবর্তীতে যারা ঐ পানিয় পান করে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আদিত্য সৌরভের কুকর্ম জানার পর তার অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কায়াকে(ডেইজি শাহ) পাঠায় সৌরভের ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য জোগাড় করার জন্য। এখানের একটা কাহিনী আমি বুঝলাম না। কায়া সৌরভের কাছে যায় এবং তার একজন ভালো বন্ধু হতে চায়। কিন্তু সেই বন্ধুত্ব একটু সময়ের ব্যবধানে বিছানা অবধি কিভাবে চলে যায় তা আমার বোধগম্য হল না। যাই হোক, একটা সময় সৌরভ কায়াকে খুন করে। চুম্বন করতে করতে হঠাৎ করে কায়ার কণ্ঠনালিতে চাপ দিতেই কায়া মারা যায়। এখানেও একটা ফোঁকর আছে। কণ্ঠনালিতে চাপ দিল আর মারা গেল এইটা কেমন কথা? মারার জন্য একটু সময় নিয়ে তো চাপটা দিতে হবে! পরবর্তীতে কায়ার মৃত্যুর দায়ভার আদিত্যর ওপর গিয়ে পড়ে আর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। নিজের স্বামীকে নির্দোষ সাব্যস্ত করতে শ্রিয়া সৌরভের শরণাপন্ন হয় আর তখনি সৌরভের সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হয় শ্রিয়া। তখনই শ্রিয়া আবিষ্কার করে সৌরভের পিঠের উল্কিটা ঠিক আদিত্যর মৃত বড় ভাই বিক্রমের মত ঠিক একই জায়গায়। এখান থেকেই কাহিনী চলে যায় ফ্ল্যাশ ব্যাকে। সেখানে দেখা যায় বিক্রমের সাথে শ্রিয়ার সম্পর্ক থাকে কিন্তু অন্যদিকে সে আদিত্যকেও ভালবাসে। আদিত্য ষড়যন্ত্র করে বিক্রমকে মেরে ফেলে এবং এই কাজে শ্রিয়া তাকে সাহায্য করে। বিক্রমের মৃত্যুর পর সকল সম্পদের মালিক হয় আদিত্য, সেই সাথে বোনাস হিসেবে পেয়ে যায় শ্রিয়াকে। কিন্তু পরবর্তীতে অন্য রূপে বিক্রমকে ফিরে আসতে দেখে অবাক হয় শ্রিয়া। নিজের ভুল শিকার করে বিক্রমের কাছে আসতে চায়। ছবির একেবারে শেষে দেখা যায় সৌরভ আসলে বিক্রম নয়, বিক্রমের বন্ধু। আদিত্যর ষড়যন্ত্রে বিক্রম মারা না গেলেও দুই পা হারায় সে। বন্ধুর এই বেহাল দশা দেখে সৌরভ হাজির হয় আদিত্য আর শ্রিয়ার জীবনে। তাদের পৌঁছে দেয় একদম অন্তিম মুহূর্তে।




এই ছিল এত আলোচিত ছবিটির কাহিনী সংক্ষেপ। কাহিনী অনেক সময় যুতসই না হলেও অভিনেতা অভিনেত্রীদের অভিনয় অনেক সময় মন কেড়ে নেয়। এই ছবিতে সেটাও পেলাম না। ছবির দুই কেন্দ্রীয় অভিনেত্রী জেরিন খান এবং ডেইজি শাহ অভিনয়ের অ ও জানে বলে মনে হল না। তারা বিছানার দৃশে যতটা সাবলীল ভাবে অভিনয় করেছে অন্য দৃশ্যগুলোতে অভিনয়ের কিছুই পেলাম না। শরমন জোশির অভিনয়ও জুতসই লাগলো না। থ্রি ইডিয়টস মুভির এই অভিনেতার কাছ থেকে এতটা খারাপ অভিনয় আশা করিনি।




ভাট পরিবারের পরিচালিত কিংবা প্রযোজিত সব ছবিতেই নগ্নতাকে প্রধান ইস্যু করে দেখানো হয়। আরে ভাই এইগুলো দেখাবেন ভালো কথা। কিন্তু সেই সাথে ছবির গল্পটাও তো ভালো করতে হবে না কি! কারণ ছাড়া গান শুরু করে দিবেন, অন্তরঙ্গ দৃশ্য জুড়ে দিবেন, অসঙ্গতিপূর্ণ সিকুয়েন্স মিলাবার চেষ্টা করবেন এর চেয়ে তো আমাদের বাংলাদেশী ছবিগুলোই ভালো।