মন ছুয়ে যাওয়ার সিনেমা “Life Is Beautiful (1997)..!!

মুভি রিভিউ August 3, 2016 3,013
মন ছুয়ে যাওয়ার সিনেমা “Life Is Beautiful (1997)..!!

মন ছুয়ে যাওয়া এক সিনেমার নাম Life Is Beautiful যার অর্থ দাড়ায় জীবন সুন্দর। আমি এই সিনেমার মাধ্যমে দেখেছি প্রেম, আশাবাদ, সাহস এবং মনের শক্তির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত, দেখেছি নিজের ভালবাসার মানুষ গুলোকে ভাল রাখার এক অনবদ্য ইচ্ছাশক্তি, দেখেছি মানুষের নিরেট অনুভূতির সংজ্ঞা এবং চমত্কার এক পিতা ও পুত্রের সম্পর্ক। যে গুলোর সৌন্দর্য লেখনীর মাধ্যমে ক্যাপচার করা সম্ভব না। এখানেই সিনেমার নামের সার্থকতা যেখানে জীবন কে সার্থক ও অর্থবহুল দেখানো হয়েছে।






╚» লাইফ ইজ বিউটিফুল (১৯৯৭) «╝

জনরাঃ কমেডি। রুমান্স । ড্রামা

আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.৬/১০

পরিচালকঃ রোবার্টো বিনিনী ( also Writer and lead actor)

দেশঃ ইটালি




গল্পের গভীরতাকে পরিমাপ করলে কৌতুক আর আবেগের দারুণ মিশ্রণের নাম “লাইফ ইজ বিউটিফুল”। সিনেমার প্রথমার্ধে আপনি যেমন হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাবেন তেমনি সিনেমার দ্বিতীয়ার্ধে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়বেন। মুভিটির গল্প সম্পর্কে বেসিক ধারনা দিতে গেলে গেলে ২টি অংশে ভেঙে বলতে হবেঃ




➨প্রথমার্ধঃ

জুইশ-ইটালিয়ান এক ছন্নছাড়া যুবক “গুইডো” শহরে যান তার চাচার কাছে কাজের জন্য। যাওয়ার পথে দেখা হয় “ডোরা” নামে এক স্কুল শিক্ষিকার সাথে। ডোরাকে প্রথম দেখায় ভালো লেগে যায় গুইডোর। তারপর ঘটতে থাকে একের পর এক হাস্যরসাত্মক কাণ্ডকারখানা।

মুভির শুরুর ঘটনা গুলো আরো বিস্তারিত লেখা যেত কিন্তু তাতে মুভির আসল মজা নষ্ট হয়ে যাবে।





➨দ্বিতীয়ার্ধঃ

মুভির সেকেন্ড পার্টে দেখা যায় গুইডো স্ত্রী আর এক ছেলে সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে। কিন্তু বিধাতা বড় বাম ,ইতালির রাজনৈতিক পরিবেশ ঘোলা হতে লাগলো। জার্মান সৈন্যরা জুইশদের ধরে নিয়ে “কনসেইন্ট্রেশন ক্যাম্প” তথা অসামরিক বন্দি-শিবিররে পাঠাতে লাগলো।

ছেলের জন্মদিনের দিন গুইডোসহ তার ছেলে এবং চাচাকে জার্মান সৈন্যরা ধরে নিয়ে যায় কনসেইন্ট্রেশন ক্যাম্প। সাথে তার স্ত্রীও স্ব-ইচ্ছাই চলে যায় তাদের সাথে এই বিষাদময় কেম্পে। যাবার পথে তার ছেলে যখন প্রশ্ন করে “বাবা আমরা কোথায় যাচ্ছি?” গুইডো তার ছেলের কাছে বিভিন্ন হাস্যরসাত্মক ঘটনার মাধ্যমে তাদের বর্তমান অবস্তার সত্যতা গোপন করে কল্পনার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করতে থাকে। তারপর শুরু হয় তাদের ক্যাম্পে টিকে থাকার লড়াই।




✦সিনেমার পরিচালক,অন্যতম স্ক্রিপ্টরাইটার ও লীড এক্টর রোবার্টো বিনিনীর বিশেষভাবে প্রশংসা না করলে রিভিউ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। নজরকারা অভিনয়ে পুরো সিনেমাকে প্রানবন্ত করে রেখেছেন। তাছাড়া একাধারে তিনটি কাজ একসাথে সুন্দরভাবে করে যাওয়ার ফলাফল সরূপ পেয়েছেন অস্কারে বেস্ট এক্টরের পুরুস্কার ও বাকি দুটো ক্যাটাগরিতে নমিনেশন।

সিনেমাটি ৭১তম একাডেমী এ্যাওয়ার্ডে (অস্কার) বেস্ট ফরেন ফিল্ম, বেস্ট এক্টর এবং বেস্ট মিউজিকে পুরস্কার পায়, তাছাড়া অস্কারে আরো চারটি ক্যাটাগরিতে সিনেমাটি নমিনেটেড ছিল।



রোবার্টো বিনিনী অস্কার পুরুস্কার গ্রহনের সময়


তাছাড়া গুইডোর স্ত্রী ও ছেলের চরিত্রে অভিনয় করা দুই অভিনয়শিল্পীও তাদের দারুণ পার্ফমেন্স দেখিয়েছেন। আরেকটি তথ্য হচ্ছে সিনেমায় রোবার্টো বিনিনীর স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করা ‘ডোরা” তার বাস্তব জীবনেরও স্ত্রী।


মুভিটি একাধারে কমেডি, রোমান্স এবং বাবা-ছেলের ভালোবাসার এক দারুন প্রদর্শন। ইতিমধ্যে সিনেমাটি দেখে না থাকলে নিঃসন্দেহে দেখে ফেলুন, কথা দিচ্ছি আপনার সময়ের অপচয় হবেনা।