ভালবাসার এক অর্পূব বন্ধনের অসাধারন মুভি”Hachiko: A Dog’s Story (2009)”

মুভি রিভিউ July 28, 2016 979
ভালবাসার এক অর্পূব বন্ধনের অসাধারন মুভি”Hachiko: A Dog’s Story (2009)”

বেডরিজে পরিবার নিয়ে থাকেন প্রোফেসর পার্কার উইলসন। একদিন কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে তিনি দেখতে পান, একটা মালিকবিহীন কুকুরছানা(হাচিকো) উদ্দেশ্যহীন ভাবে রেলস্টেশনে হেঁটে বেড়াচ্ছে। কুকুরছানার ফুটফুটে চেহারা দেখে স্বভাবতই তার মায়া হয়, প্যাকিং বক্সে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। উদ্দেশ্য, দিনের আলো ফুটলে উপযুক্ত মালিকের সন্ধান করে তার হাতে তুলে দেয়া।


দিন গড়ায়, কেউ আর কুকুরের মালিকানা দাবী করেনা। দাবী করার কথাও না, আসল মালিক ততদিনে দেশ ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছে। ততদিনে পার্কার পরিবারের সবার সাথে হাচিকোর সম্পর্কও আরো গাঢ় হয়েছে, সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, মালিকের খোঁজ আর করা হবেনা। পার্কার পরিবারের গ্যারেজে নতুন সদস্য হিসেবে আশ্রয় পায় সে।


প্রফেসর পার্কার একদিন তার এক জাপানী বন্ধুর কাছে নিয়ে যায় হাচিকোকে। সেই জাপানী বন্ধুই কুকুরটির নামকরণ করেন “হাচিকো”, জাপানী ভাষায় যার অর্থ “আট”। আটকে জাপানে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

পরিবারের সবার মধ্যে প্রফেসর পার্কার উইলসনের সাথে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো হাচিকোর। প্রতিদিন সকালে সে প্রফেসরকে রেলস্টেশনে এগিয়ে দিয়ে আসে। আবার, বিকেলবেলা প্রফেসরের ট্রেন আসার একটু আগে আগে গিয়ে রেলস্টেশনের চত্বরে বসে থাকে। প্রফেসর ট্রেন থেকে নামলে তার সাথে একত্রে বাড়ি ফেরে। এভাবে, রেলস্টেশনের পরিচিত মুখ হয়ে যায় হাচিকো। সবাই তাকে এক নামে চেনে। রেলস্টেশনের কফিশপের মালিক থেকে স্টেশনের সিকিউরিটি গার্ড, সবার কাছে ভীষণ পরিচিত সে।


এভাবেই কেটে যায় অনেকটা সময়। একদিন, ক্লাস চলাকালীন সময়ে, হার্ট এ্যাটাক করে মারা যান প্রফেসর পার্কার উইলসন। হাচিকো সেদিনও বরাবরের মত পড়ন্ত বিকেলে যায় প্রফেসরকে আনতে। ট্রেন থেকে সবাই নামে, প্রফেসর নামেনা। সারা রাত রেলস্টেশনে বসে থাকে সে। অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে, স্টেশনের দিকে, পরিচিত মুখের আশায়। পরিচিত মুখ আর আসেনা।

এভাবে কেটে যায় দশটা বছর। ততদিনে, পার্কার পরিবারের অনেক অদলবদল হয়েছে। প্রফেসর পার্কারের মেয়ের বিয়ে হয়েছে। প্রফেসর পার্কারের স্ত্রী বেডরিজের বাড়ি বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে গিয়েছেন। দশ বছর পরে তিনি ফিরেছেন, স্বামীর সমাধিস্থল দেখতে। ট্রেন থেকে নামতেই তিনি দেখলেন, হাচিকো রেলস্টেশনের নির্দিষ্ট জায়গায় বসে প্রিয় মানুষের মুখটা দেখার জন্যে উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে আছে, চেহারায় স্পষ্ট বয়সের ছাপ। বৃদ্ধ হাচিকো বসে আছে প্রিয়জনের আশায়, পরিবারের লোকজন হয়তো প্রফেসরকে ভুলে গিয়েছে, হাচিকো ভোলেনি, সেজন্যেই তার নিরলস অপেক্ষা। এভাবেই একদিন, অপেক্ষা করতে করতে রেলস্টেশনের তার নির্দিষ্ট জায়গায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে সে।