‘মাদারি’- একজন বাবার গল্প

মুভি রিভিউ July 28, 2016 1,887
‘মাদারি’- একজন বাবার গল্প

ব্যস্ত কোন শহরের এ পাশ থেকে ও পাশ অব্দি হাজারো-লাখো মানুষের বসবাস। এই মানুষগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ভেদাভেদ থাকলেও একটা জায়গায় এসে এরা সবাই একই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। ‘সাধারণ জনগণ’ বা ‘আম পাবলিক’। হ্যাঁ, সমাজের এতো সব মানুষদের মধ্যে সিংহভাগই হচ্ছে সাধারণ জনগণ। যারা ছোট ছোট স্বপ্ন দেখে খুশি থাকে। যারা দিন শেষে নিজেদের পরিবারের পরিজনদের সাথে রাত্রি যাপন করে সুখী থাকতে চায়। তারা বুঝতে চায় না দেশের বা সমাজের ঘৃণ্য রীতিনীতিগুলো, তারা জানতে চায় না রাঘব-বোয়ালদের হিংস্র চিন্তা-ভাবনাগুলো। তারা দিন শেষে একটু শান্তি চায়, বেঁচে থাকার স্পৃহা চায়। এইতো! তবে তার পরেও কালে-কালে, যুগে-যুগে সমাজের এইসব সাধারণ মানুষদের বলি হতে হয়েছে এবং হচ্ছে ঘৃণ্য এক নীতির সামনে। যে নীতি রাজাদের নীতি, যে নীতির নাম রাজনীতি!


.


ঘৃণ্য রাজনীতির হাতে বলি হওয়া এক বাবা-ছেলের গল্প মাদারি। ২০১২ সালে ভারতের আন্ধেরির মারোলে একটি মেট্রোব্রিজ ভেঙে গিয়েছিল, সেই বাস্তব প্রেক্ষাপটের ওপরেই নির্মিত হয়েছে মাদারি সিনেমাটি। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন নিশিকান্ত কুমুত। পরিচালক তার আগের সিনেমাগুলোর (ফোর্স, দৃশ্যায়ম, রকি হ্যান্ডসাম) মত এই সিনেমাটিতেও তার নিজের দক্ষতা মেলে ধরেছেন। মূল অভিনেতা ইরফান খান ছিলেন বরাবরের মতই অসাধারণ। তার বাস্তবমুখী অভিনয়ে সত্যি সত্যি আরও একবার মুগ্ধ হয়েছি এবং এভাবেই বারংবার মুগ্ধ হতে চাই। শিশু শিল্পী হিসেবে বিশেষ বনশালও ছিলেন চমৎকার। সিনেমাটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে (একজন সিরিয়াস কোপ) জিমি শেরগিলও ছিলেন পারফেক্ট। কেন জানি তাকে এই ধরণের কোপ চরিত্রে আমার একটু বেশি ভালো লাগে। আর হ্যাঁ, সিনেমাটির বেশকিছু ‘ডায়লগ’ বেশ ভালো এবং অর্থবহ ছিল যা এই সিনেমার আরও একটি ভালো দিক বলা যেতে পারে।


.


গল্পের ক্লাইম্যাক্সে এসে আপনাকে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে। যদিও সব জবাবই আপনার জানা, আবার সবকিছু জেনেও যেন অজানা। শূন্য এক হাহাকার বুকে নিয়ে সিনেমাটি শেষ করলেও অবাক হবেন না। হয়তো বাস্তব জীবনটা এমনই অথবা এর চেয়েও কঠিন।


.