মিথ্যা কসমের ধরন ও পরবর্তী করণীয়!

ইসলামিক শিক্ষা July 20, 2016 1,867
মিথ্যা কসমের ধরন ও পরবর্তী করণীয়!

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অসংখ্য জায়গায় বিভিন্ন বিষয়ে কসম করেছেন। এ কসমের রয়েছে অনেক শরয়ী বিধান। অন্যায়ভাবে কসম করা অনেক মারাত্মক অপরাধ। মানুষ অনেক সময়ই ইচ্ছাকৃতভাবে কথায় কথায় কসম করে থাকে। এ কসমের কুফল মারাত্মক।


কুরআন এবং হাদিসে কসমের কুফল সম্পর্কে অনেক সতর্কবাণী এসেছে। সংক্ষেপে কসম সম্পর্কিত কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:


কসম কি?

কসম শব্দটি ইয়ামিন শব্দের সমার্থক। শাব্দিক অর্থ শক্তি`। ইসলামি পরিভাষায় ‌কসম` এমন এক শক্তিশালী বন্ধনকে বুঝায়, যার দ্বারা কসমকারী ব্যক্তি কোনো কাজ করা বা না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে থাকে।


কসমরে ধরন-

এ কসমের ভালো ও মন্দ দুটি দিকই রয়েছে। ইসলামি চিন্তাবিদগণ অন্যায়ভাবে করা কসমকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন।


১. গামুস

অতীত বা বর্তমান সময়ের কোনো বিষয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা কসম করা। এ ধরনের কসম করা কবিরা গোনাহ।


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‌যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।


এ কসমের বিধান-

এ জাতীয় কসমের কোনো কাফফারা নেই। তবে এ কসমের কবিরা গোনাহ থেকে নিষ্কৃতি লাভের একমাত্র উপায় হলো আল্লাহ তাআলার দরবারে তাওবা ও ইস্তিগফার করা। অবশ্য অনেকে কাফফার দেয়ার বিষয়েও মতামত দিয়েছেন।


২. মুনআ`ক্বিদাহ

ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার ওপর কসম করা। যদি কসম ভঙ্গ করে তাহলে কাফফারা দিতে হবে।


এ কসমের বিধান-

এ কসমের বিধান আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‌আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কর।


অতএব, এর (এ কসমের) কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।


অথবা, তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে। যে ব্যক্তি (এ গুলো আদায়ে) সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোজা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। (সুরা মায়িদা : আয়াত ৮৯)


৩. লাগব :

কসমকারী ব্যক্তি অতীত বা বর্তমানের কোনো একটি বিষয়ে নিজের ধারণা অনুযায়ী কসম করেছে; অথচ বিষয়টি বাস্তবে তার ধারণা অনুযায়ী নয়। অর্থাৎ যে বিষয়ে কসম করেছে তা মিথ্যা।


এ কসমের বিধান

সকল ইমামদের মতে, এ কসমের কোনো কাফফারা নেই। আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাআলা কসমকারীকে পাকড়াও করবেন না।


পরিশেষে...

উল্লেখিত তিন ধরনের কসম করা অনুচিত। তাই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে কসম করতে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ কসমের কারণেই মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী হবে।


আবার কাফফারাও দিতে হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল প্রকার অন্যায়, বাতিল ও মিথ্যা কসম করা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।