ফুল - লজ্জাবতী (Mimosa pudica)

পুষ্প কথন July 20, 2016 3,431
ফুল - লজ্জাবতী (Mimosa pudica)

ফুলের নাম- লজ্জাবতী

বৈজ্ঞানিক নাম- Mimosa pudica

পরিবার- Fabaceae


অন্যান্য নাম- লজ্জালু, অঞ্জলিকারিকা, করপত্রাঞ্জলি(হাত জোড় করা পাতা), হিন্দিতে- লাজবন্তি, লাজলু, সংস্কৃতে- সমঙ্গা, ইংরেজিতে- sensitive plant, sleepy plant, touch-me-not নামগুলো উল্লেখযোগ্য।


আদি নিবাস মধ্য আমেরিকার মেক্সিকোতে। তবে বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সবখানেই এ গাছ ছড়িয়ে রয়েছে।আমাদের দেশেও অনেক পরিচিত একটি বুনো গাছ এই লজ্জাবতী।


লজ্জাবতী একটি গুল্ম কিন্তু সে গড়িয়ে গড়িয়ে বাড়ে। গাঁট থেকে শিকড় বের হয়ে মাটি আকঁড়ে ধরে। এছাড়া তার গায়ে আছে ধারালো বাঁকা বাঁকা কাঁটা। লজ্জাবতী গাছ কাঁটার ঝোপ তৈরি করে বলেই হয়ত সাপ এর আশেপাশে থাকে না। লজ্জাবতীর পুষ্পদন্ড ২-৩ ইঞ্চি লম্বা হয়। ফুল গোল, তুলার মতো নরম। ফুলের রঙ গোলাপি বা ফিকে লাল। পাতার গোড়া থেকে অর্থাৎ পত্রবৃন্ত ও লতার সংযোগস্থল থেকে পুষ্পদন্ড বের হয়। বারো মাস ফুল ও ফল হয়। আষাঢ় থেকে পৌষ মাসে ফুল ও ফল বেশি হয়। প্রত্যেক ফলে ৩-৪ টি বীজ থাকে।


লজ্জাবতীর ভেষজ গুণ অনেক। এরা মাটিতে নাইট্রোজেন ফিক্সেশন করতে পারে, তাই জমির উর্বরা শক্তি বাড়াতে এদের ব্যবহার করা যেতে পারে।


একটু ছুয়ে দিলেই পাতা নুয়ে পরে, এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য লজ্জাবতীর গর্ব। লজ্জাবতীর পাতা নুয়ে পড়াকে বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে-


"লজ্জাবতীর পাতার গোড়ার অংশ বেশ ফোলা ও মোটা। এই ফোলা অংশে পাতলা প্রাচীরময় বড় বড় অনেক কোষ আছে। এই কোষগুলো স্বাভাবিকভাবে পানিভর্তি থাকে। ফলে কোষগুলো সোজা ও পাতা ছড়ানো থাকে। হঠাৎ ছোয়া পেলে কোষের ভেতরের পানি পাতলা প্রাচীর অতিক্রম করে পেছনের দিকে সরে যায়, ফলে, কোষগুলো চুপসে যায় এবং পাতা নুয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর চুপসে যাওয়া কোষ আবার পানিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় পাতা ও বোঁটা আগের অবস্থায় চলে আসে।"