যে কারণে ই’তিকাফে বসবেন

ইসলামিক শিক্ষা June 24, 2016 1,147
যে কারণে ই’তিকাফে বসবেন

রমজান মাসের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর প্রাপ্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য ই’তিকাফ জরুরি বিষয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম আমৃত্যু ই’তিকাফ করতেন। অনেক মুসলমান জানেনই না ই’তিকাফ কাকে বলে? কেন ই’তিকাফে বসতে হয়। ই’তিকাফে বসার পূর্বেই পরিচয় ও কারণ তুলে ধরা হলো-


ই’তিকাফের পরিচয়

ইতিকাফ মানে হলো আঁকড়ে ধরা অর্থাৎ উদ্দেশ্য হাসিলের নিমিত্তে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা ও তার প্রতি মনকে আবদ্ধ রাখা। ইসলামি শরিয়তে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য মসজিদে অবস্থান করাকে ই’তিকাফ বলে।


ইতিকাফে বসার কারণ-

পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণ ও তাদের উম্মতগণ শ’বছর/হাজার বছর হায়াত পেয়েছেন। তারা বছরের পর বছর আল্লাহ ইবাদাত-বন্দেগিতে কাটাতেন। সে হিসেবে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দিয়েছেন সল্প আয়ুষ্কাল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য দান করেছেন মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর। এ লাইলাতুল কদরের একরাতকে কুরআনে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলে ঘোষণা করেছেন। যা রমজানের শেষ দশকের যে কোনো এক রাতকে আল্লাহ তাআলা লাইলাতুল কদর হিসেবে গণ্য করেন।


এ কারণেই মুসলিম উম্মাহ রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ই’তিকাফে বসেন। ই’তিকাফে বসা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তোমরা মসজিদ ইতিকাফে বসো তখন স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো না। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা এর ধারে কাছেও যেয়ো না।’


ইতিকাফে বসার অর্থই হচ্ছে, রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে অবস্থান করা এবং এই দিনগুলোকে আল্লাহর জিকিরের জন্য নির্দিষ্ট করা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ার জীবনে রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করে গেছেন। (বুখারি, মুসলিম)।


হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে যে পরিমাণ কষ্ট করতেন, এত কষ্ট অন্য সময় করতেন না।’ (মুসলিম) তিনি আরও বলেন, ‘শেষ দশক হাজির হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারা রাত জাগতেন, পরিবারের সবাইকে জাগাতেন। খুব কষ্ট করতেন এবং কোমরে কাপড় শক্ত করে বেঁধে নিতেন।’ (বুখারি, মুসলিম)।


পরিশেষে...

আখিরাতের চূড়ান্ত কল্যাণে লাভ, গোনাহ মাফ ও জান্নাত হাসিলের জন্য ইতিকাফের প্রস্তুতি নেয়া প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইতিকাফকালীন সময়ে পরিবারের সকল খরচাদি ও প্রাথমিক সমস্যা সমাধান করে আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে রমজানের শেষ দশ দিন আত্মসমার্পন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।