শেয়াল ও সিংহ - আদিবাসী লোককথা

ঈশপের গল্প June 22, 2016 4,791
শেয়াল ও সিংহ - আদিবাসী লোককথা

অনেক কাল আগে একবার গরম কালে পাহাড়ি এলাকায় সব ঝরনা শুকিয়ে গেল। কাঠফাটা রোদ, গরম হাওয়া। তার ওপরে তেষ্টা মেটাবার জল নেই। সে এক ভীষণ কষ্টের দিন। পশুরা জিভ বের করে হাঁপাচ্ছে, তেষ্টায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। এবার বোধহয় তেষ্টার জ্বালায় সবাই মারা পড়বে।


দুঃখের দিনে সবাই শত্ৰুতা ভুলে যায়। পশুদেরও তাই হল। তারা হিংসা ভুলে গেল। সবাই পাহাড়ের ছায়ায় বসে পরামর্শ করল। কি করা যায়। বাঁচতে তো হবে। একটা উপায় দেখতে হয়। সবাই মিলে জলের খোঁজে চলল। হাল ছাড়লে চলবে কেন?

খুঁজতে খুঁজতে শেষকালে একটা ঝারনা পাওয়া গেল। শেওলা আর ছোট ছোট পাথরে তার মুখ ছোট হয়ে এসেছে। সেই ছোট্ট মুখ থেকে ঝিরঝির করে জল গড়িয়ে পড়ছে পাহাড়ের গা বেয়ে। তবু সবাই আনন্দে লাফিয়ে উঠল। বাঁচার আশা জাগল।

পশুর রাজা সিংহ বলল, “সবাই লেগে পড়ো। গর্তের মুখ বড় করতে হবে। পাহাড়ের পাথর যত শক্তই হোক ঝরনার মুখ অনেক বড় করতে হবে। দেহের ব্যথাবেদনা ভুলে সবাই কাজে লেগে পড়ো। একথা বলেই সিংহ নিজেই থাবা বসাল। কয়েকটা নুড়ি খসে পড়ল। সিংহের থাবার নখে ব্যথা করছে, তবু সে থামল না।


সবাই কাজে লেগে গেল। ঝরঝর করে মাটি পড়ছে, পাথর পড়ছে। ঝরনার জল বাড়ছে। কাজ থেমে নেই।

সেই দলে ছিল এক শেয়াল। সে কুঁড়ের বাদশা। কোন কাজ করতে চায় না। ঝরনা খোড়ার কোন কাজই সে করল না। ছায়ায় শুয়ে রইল। ভাবল, জল তো বেরোক, তারপরে দেখি কে আমায় জল খাওয়া ঠেকায়।


সূর্য পাহাড়ের কোলে ঢলে পড়ল। আঁধার হয়ে এল। সবাই গুহায় ফিরে গেল। ঠিক হল, পরদিন খুব ভোরে সবাই এখানে চলে আসবে।


পরের দিন খুব ভোরে সবাই চলে এল। সিংহ এল সবার আগে। আর শেয়াল এল সবার পরে। রোদ উঠবার অনেক পরে। সবাই এসেই কাজে লেগে গেল। শেয়াল তেমনি শুয়েই রইল।


এর মধ্যে হয়েছে কি, একটা কাঠবেড়াল সিংহকে বলে দিয়েছে—শেয়াল শুধু শুয়েই আছে। এতক্ষণে সিংহের নজর পড়ল। ভীষণ গর্জন করে সিংহ তেড়ে আসছে।


বিপদ বুঝেই পেছনের দুই পায়ের মধ্যে লেজ গুটিয়ে শেয়াল কোথায় যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।

হঠাৎ পশুরা চিৎকার করে নাচতে লাগল, পশুরাজ, তরতর করে জল পড়ছে। মিষ্টি জল। সাদা ফেনায় উপচে-পড়া জল। পশুরাজও নাচতে লাগল। তারা জলের মধ্যে হুটোপাটি খাচ্ছে। অনেক দিন পরে দেহ ঠান্ডা হল।


হঠাৎ সিংহ গম্ভীর হয়ে বলল, ‘শোনো, সবাই অনেক কষ্ট করেছে, তাই ঝরনার এমন জল দিচ্ছে। কিন্তু একজন কিছুই করে নি। তাকে সবাই চিনেছে। তাকে এই ঝরনার এক ফোটা জলও খেতে দেব না। তোমারাও দেবে না।


কিন্তু পশুরাজ, ওটা ভীষণ শয়তান। অনেক কায়দা জানে। খুব বুদ্ধি। আমরা কি পারব ওকে ঠেকাতে?

‘বেশ, তাহলে আমিই ঝরনা পাহারা দেব। আজ থেকে আমি ঝরনার পাশে ওই গুহাতেই থাকব। দেখি, কেমন করে ও জল খেতে পায়। তেষ্টায় বুকের ছাতি ফেটে ও মরবে। ভেজা গায়ে সিংহ জোরে জোরে কথাগুলো বলল, পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে তার কথা অনেক দূর ছড়িয়ে পড়ল।


সবাই গুহায় ফিরে যাচ্ছে। পেছন থেকে তারা সিংহের কথা শুনতে পল—‘অনেক দিন শেয়ালের মাংস খাইনি। যদি ও জল খেতে আসে, তবে এবার বোধহয় শেয়ালের মাংস খেতে হবে। ছাড়াছাড়ি নেই।

পশুরা একথা শুনে খুব খুশি হল । খুব আনন্দ হল তাদের। যাক, নিশ্চিত্ত হওয়া গেল। বড্ড বেড়েছে শেয়াল। কুঁড়ের বাদশা কোথাকার। এবার মজাটা বুঝবে। সিংহের প্রতিজ্ঞা।


বেশ কয়েকদিন কেটে গেল। শেয়াল ঝরনার পথ মাড়ায়নি। আশেপাশে কোথাও তাকে দেখা যায়নি। সবাই ভাবল, শেয়াল ভয়ে এই এলাকা ছেড়ে দূরে কোথাও পালিয়েছে। কেউ কেউ ভাবল, তেষ্টায় বুঝি শেয়াল মরেই গিয়েছে।

কিন্তু এসব কিছুই হয়নি। একদিন দেখা গেল শেয়াল ঝরনার একটু দূরে বসে রয়েছে। সিংহ গুহার মুখে বসে সব দেখছে। ভাবছে, শেয়াল ঝরনায় জলে মুখ দিলেই ঝাঁপিয়ে পড়ব। কিন্তু না, শেয়াল ঝরনার দিকে চেয়েও দেখছে না। জল খাওয়ার কোন ইচ্ছেই তার নেই।


সিংহ দেখল, শেয়াল কালোমতো কি একটা জিনিস থেকে কি যেন খাচ্ছে আর আপনমনে হাসছে। অবাক কাণ্ড! কি খাচ্ছে শেয়াল? সিংহ আস্তে আস্তে গুহা থেকে বেরিয়ে এল। শেয়ালের পাশে বসল। শেয়াল ফিরেও দেখল না। আপন মনে খেয়ে চলেছে।


হঠাৎ সিংহের দিকে চেয়ে শেয়াল বলল, পশুরাজ, ওসব বাজে জলটল খাওয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই। আমি এখন থেকে মধু খেয়ে থাকব। এই মধু খাচ্ছি। অপূর্ব, আঃ কি স্বাদ ! কোথায় লাগে ঝরনার ওই বিচ্ছিরি জল? থাকগে এসব কথা।


সিংহের জিভে জল এল। কিন্তু লজ্জায় কিছু বলতে পারল না। শেয়াল আরামে আধবোজা চোখে খাচ্ছে আর হাসছে। সিংহ আর পারল না। শেষকালে বলেই ফেলল, তা শেয়াল, একটু মধু দেবে নাকি?


মৌচাক থেকে এক ফোটা মধু নিয়ে শেয়াল সিংহকে দিল। আঃ, কি সুন্দর খেতে। কোনদিন খাইনি এমন মধু। কি মিষ্টি ! সিংহ বলেই ফেলল, “বন্ধু, এত অল্প দিলে। দাও না একটু বেশি করে।


শেয়াল লেজ নেড়ে গলা পরিষ্কার করে বলল, “হাঁ এটা ঠিক, অনেকটা না খেলে পুরো স্বাদ পাওয়া যায় না। এ মধুর যে কি স্বাদ তা জানতে হলে মুখ ভর্তি করে খেতে হবে। ঠিক কথাই বলেছেন।’


‘তাহলে, শেয়াল তুমি কি....... !’ জিভ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল সিংহের।

‘হাঁ পশুরাজ, আমি মোটেই কৃপণ নই। দেব বৈকি! আপনি চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন, আমি মৌচাক থেকে মধু আপনার মুখে ঢেলে দি!’


সিংহ চারটে থাবা তুলে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ল। হা-করা মুখ, দাঁতগুলো বেরিয়ে আছে। আনন্দে থাবা চারটে কাঁপছে, নখগুলো এধার-ওধার নড়ছে। কাছে গিয়ে শেয়ালের মুখ শুকিয়ে গেল। কাচুমাচু হয়ে বলল, পশুরাজ, আমার ভয় করছে, বুকে উঠে মধু ঢালতে গিয়ে যদি নখের খোচা লাগে? তাহলেই হয়েছে। তার চেয়ে এক কাজ করি। আপনার থাবাগুলো ভালোভাবে বেঁধে দি। তাহলে আর ভয় থাকবে না, কেমন?


‘যা করবে তাড়াতাড়ি করো। বেশিক্ষণ দেরি করতে পারছি না। শেয়াল দৌড়ে গেল পাহাড়ের কোলে। বুনো লতা ছিড়ে আনল। বেশ শক্ত করে সিংহের থাবা চারটে বেঁধে ফেলল। সিংহ আর থাবা নাড়াতে পারছে না।

ফিক করে হেসে শেয়াল ঝরনার দিকে হাঁটা দিল। প্রাণভরে মিষ্টি ঠান্ডা জল খেল। উঠে এল ঝরনা থেকে। সিংহের পাশ দিয়ে শেয়াল বাড়ির পথে হাঁটা দিল। ফিরেও দেখল না সিংহকে ।


হঠাৎ সিংহ চিৎকার করে কেঁদে উঠল, ‘ও শেয়াল, যাচ্ছ কোথায়? আমায় ফেলে যেয়ো না, দোহাই তোমার। এমন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলে সব পশুপাখি আমায় ঠাট্টা করবে। পশুরাজকে এমন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলে সব পশুপাখি আমায় ঠাট্টা কারবে। পশুদের ওপরে আমার প্রভুত্বই চলে যাবে, আমি রাজা হয়ে মুখ দেখাব কেমন করে? আমার বাঁধন খুলে দাও। তুমি যত খুশি যখন খুশি ঝরনার জল খেয়ো। কেউ নিষেধ করবো না। আমি কথা দিচ্ছি। তোমার পায়ে পড়ি, তুমি যেয়ো না |

আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে শেয়াল ভাবল—আমি যদি সিংহের বাঁধন খুলে না দি, তবে কেউ না কেউ খুলে দেবেই। এখুনি পশুরা হয়তো চলে আসবে। আর তখন পশুরাজ কি আমায় ছেড়ে দেবে? প্রতিশোধ সে নেবেই, গোটা জঙ্গল পাহাড় খুঁজে ফিরবে। আর তখন আমাকে..... । উঃ, কি সাংঘাতিক ব্যাপার! তার চেয়ে ওকে বিশ্বাস করাই ভালো। এতে বাঁচলেও বাঁচতে পারি। কিন্তু বাঁধন খুলে না দিলে কেউ বাঁচাতে পারবে না।


এইসব সাতপাঁচ ভেবে শেয়াল ফিরে এল। সিংহের থাবা থেকে লতাগুলো খুলে ফেলল। বাঁধন খুলে ফেলল। বাঁধন খুলে ফেলেই মৌচাক এগিয়ে দিল সিংহের সামনে। না, সিংহ শেয়ালকে কিছু বলল না। মধু খেল। তারপরে সব পশুকে বলে দিল, এখন থেকে শেয়াল সবার মতো নিশ্চিন্তে ঝরনার জল খাবে। কেউ যেন কিছু না বলে। পশুরা মেনে নিল আদেশ। সেদিন থেকে শেয়াল হল সিংহের বন্ধু।


শেয়াল আর সিংহ তো বন্ধু হল। সিংহ বাধ্য হয়ে শেয়ালকে বন্ধু করল। নইলে, শেয়াল যদি তার বোকামির কথা অন্য পশুদের বলে দেয় ! কি লজ্জা !


এদিকে শেয়াল বুঝল, সিংহের সঙ্গে এই বন্ধুত্ব বেশিদিন টিকবে না। হাজার হলেও পশুরাজ তো ! কখন কিরকম মেজাজ থাকবে কে বলতে পারে। আগে থেকেই সাবধান হওয়া ভালো।


এইসব চিন্তা করে শেয়াল পাহাড়ের উঁচু চূড়ায় এক গুহায় থাকতে লাগল। ছেলেদের আর বউকে নিয়ে গেল উঁচু গুহায়। এখন, ওই গুহায় উঠতে হলে পাহাড়ি গাছের লতা বেয়ে উঠতে হত। শেয়াল সেই লতা কেটে দিল। আর গুহায় রেখে দিল সেই লতা। ছেলেমেয়ে কিংবা বউ কেউ পাহাড়ের চূড়া থেকে নামত না। শুধু নামত শেয়াল। শেয়াল-বউ লতা ঝুলিয়ে দিত, তাই বেয়ে শেয়াল নামত। আবার লতা তুলে নিত। শেয়াল শিকার নিয়ে ফিরে এলে বউ আবার লতা নামিয়ে দিত। খুব নিরাপদ আস্তানা। এমনি করে দিন যায়। হাজার হলেও সিংহ হল পশুরাজ। মেজাজই অন্যরকম। দিনে দিনে সিংহ সেই আগের বোকামির ঘটনা ভুলে গেল। এবার শেয়াল পড়ল বিপদে।


দুজনে একসঙ্গে শিকার করত। কিন্তু শিকারের ভালো ভালো মাংস সিংহ নিয়ে নিত, শেয়ালের জন্য পড়ে থাকত হাড়গোড়। তাছাড়া বেশি অংশই নিয়ে নিত সিংহ। সিংহের দাঁত আর থাবার দিকে তাকিয়ে শেয়াল কিছু বলত না।

শেয়াল ভাবত মজা তো মন্দ নয়। আমি প্রাণের মায়া ছেড়ে কত কষ্টে শিকারের হদিস এনে দি, পথ দেখিয়ে নিয়ে যাই ওকে। আর উনি কি করেন? একটু পেছনে সরে এসে বিদ্যুতের মতো লাফ দেন, শিকার ছটফট করে, মরে যায়। ব্যাস, আর কোন কাজ নেই। অথচ শিকারের প্রায় সবটাই ও নিয়ে নেয়। আর সহ্য করা যায় না। কিন্তু করিই বা কি। যা দাঁত আর নখ ! একবার আদর করলেই......।


শেয়াল ভাবে আর ভাবে। কুল-কিনারা পায় না। এখন আবার আর এক ফ্যাসাদ। সিংহকে শিকারের খোঁজও দিতে হয় না। ঘুরে-ফিরে বেড়াতে হয় না। তাই সে দিনে দিনে ভীষণ কুড়ে হয়ে উঠল। শিকারের মাংস সিংহ বয়ে নিয়ে গুহায় যেত না। সেটাও পৌঁছে দিতে হত শেয়ালকে। শেয়াল বুঝল, এতদিনে সত্যিই সে সিংহের "ক্রীতদাস’ হয়ে গিয়েছে। 'ক্রীতদাস”—এই কথাটা মনে আসতেই শেয়াল ঠিক করে ফেলল এবার তাকে কি করতে হবে। অনেক হয়েছে, আর নয়।


একদিন তারা একটা বুনো বাচ্চা ঘোড়া শিকার করেছে। সিংহ ঘোড়ার রক্ত চেটে শেয়ালকে বলল, ‘খুব কচি মাংস। সবটাই আমার গুহায় পৌঁছে দাও। পরে গুহায় এসো। আমাদের খাওয়ার পরে যদি কিছু বাঁচে নিয়ে যেয়ো। একথা বলেই সিংহ দুলকি চালে গুহার পথে হাঁটা দিল।


আর নয়, এবার অন্য পথ ধরতে হবে। বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছে। এই না ভেবে শেয়াল সমস্ত মাংস কেটে কেটে উঁচুতে তুলল। খুব ধকল গেল। কিন্তু মনে খুব আনন্দ। সিংহের কথায় আর চলছিনা, ওকে মানবো না। দেখি না কি হয়।


রাত ভোর হয়ে এল। শেয়াল সিংহের গুহায় ফিরল না। খিদেতে, অপমানে, রাগে সিংহ চিৎকার করতে করতে গুহা থেকে বেরিয়ে এল। শেয়ালের পায়ের গন্ধ শুকে শুকে পাহাড়ের অনেক উঁচুতে উঠল। ওপরেই শেয়ালের গুহা। কিন্তু মসৃণ পাথর, ওখানে ওঠা যাবে না।


সিংহ কিছুক্ষণ ভাবল। তারপর বলল, “শেয়াল, বন্ধু, তোমার সঙ্গে কিছু কথা আছে। আমি তো তোমার অনেককালের বন্ধু। তাই, লতাটা ফেলে দাও। ওপরে উঠব। ভয় নেই বন্ধু?


শেয়ালের বউয়ের দাঁতকপাটি লেগে গেল। ছেলেমেয়ে গুহার কোণে গিয়ে ঠকঠক করে কাঁপছে। লেজ ঢুকে গিয়েছে পেছনের দু'পায়ের মধ্যে। সে এক কাণ্ড।


শেয়াল কিন্তু ঠোঁটের কোণে হাসছে। গলা বাড়িয়ে বলল, পশুরাজ, কি সৌভাগ্য। আপনি এসেছেন আমার গুহায়! কি আনন্দ! এখানে আজকের খাবার খেতে হবে কিন্তু! আপনি হলেন আমাদের রাজা। আমি লতা নামিয়ে দিচ্ছি। আস্তে আস্তে উঠুন। কি সৌভাগ্য আমার।


শেয়াল লতা নামিয়ে দিচ্ছে। বউ নিষেধ করতে গেল, কিন্তু দাঁতে দাঁতে এমন ঠকঠক হচ্ছে যে সে কথাই বলতে পারল না। ছেলেমেয়েরা আরও সিটিয়ে গেল।


সিংহ লতা বেয়ে উঠছে। ওপরে, আরও ওপরে। মাঝখানে সিংহ ঝুলছে, দেহ ভারী, তাড়াতাড়ি ওঠা যায় না। হঠাৎ ..... পটাং করে আওয়াজ হল। লতা গেল ছিঁড়ে। পাহাড়ের একেবারে নীচে ধপাস করে একটা আওয়াজ হল। একটু গোঙানি। তারপর সব চুপচাপ।

শেয়াল বউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘লতটা খুব পলকা। তাই না? ওটা আগেই এনে গুহায় রেখে দিয়েছিলাম।

শেয়ালের চোখে-মুখে হাসি ঝরে পড়ছে।