পৃথিবী কাঁপানো ভূমিকম্পেরা! (পর্ব- ১)

জানা অজানা June 17, 2016 1,657
পৃথিবী কাঁপানো ভূমিকম্পেরা! (পর্ব- ১)

আজকাল মাটিটা সামান্য একটু কেঁপে উঠলেই আমরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ঘর-বাড়ি থেকে রাস্তায় নেমে পড়ি দলে দলে। অবশ্য ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে আমাদের। মাঝে মাঝেই এত ভয়ংকর ভয়ংকর সব ভূমিকম্পের ফলাফল দেখতে পাই আমরা, আর আমাদের ঘর-বাড়িগুলো সেই ছোটখাটো ভূমিকম্পের কাছে এতটাই পলকা যে সামান্য একটু মাটির দুলুনীতে ভয়ে শিউরে ওঠা ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কিছু ভূমিকম্প রয়েছে যেগুলোর কথা শুনলে আপনার মনে হবে সেগুলোর কাছে বর্তমানের এই ভূমিকম্পগুলো তো নেহায়েত দুগ্ধপোষ্য শিশু! একটা ভূমিকম্প ঠিক কতটা বড় আকারে হতে পারে? মানুষের ভাবনার গন্ডী পেরিয়ে পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেওয়া এমনই কিছু সর্ববৃহৎ ভূমিকম্পের কথা বলা হল আজকে।


১. ভালডিভিয়া ভূমিকম্প ( ৯.৫ মাত্রা )

এই ভূমিকম্পটি আজ থেকে বেশকিছু বছর আগে চিলির ভালডিভিয়াতে সংঘটিত হলেও ১৯০০ সালের পর থেকে এখন অব্দি পৃথিবীতে এটাই সবচাইতে বড় ভূমিকম্প বলে মনে করেন ভূপ্রকৃতি বিশেষজ্ঞরা। ১৯৬০ সালে হঠাত্ করেই হওয়া এই ভূমিকম্পে রিক্টর স্কেল ছাড়িয়ে যায় ৯.৫এর ঘর। প্রশান্ত মহাসাগরের চিলির উপকূলের কাছে তৈরি হয়েছিল কম্পনটি। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে যায় ভূমিকম্পের কারণে। এচাড়াও প্রচুর মানুষের মৃত্যু আর আগত হবার ঘটনা তো রয়েছেই। তবে ভালডিভিয়া ভূমিকম্পের সবচাইতে বাজে দিক ছিল এই যে, এটি আসবার সময় একা আসেনি। সাথে নিয়ে এসেছিল সুনামিকেও। ফলে ভূমিকম্প ও পানির প্রবল ঝাপটা- দুটোই একসাথে ক্ষতিগ্রস্থ করে তুলেছিল চিলিসহ, হাওয়ায় আর ক্যালিফোর্নিয়ার মতন স্থানগুলোকে। রিকটর স্কেলের মাত্রা হিসেবে একেই এখনো শতাব্দীর সেরা ও বৃহত্ ভূমিকম্প বলে মনে করে সবাই।


২. আলাস্কার ভূমিকম্প ( ৯.২ মাত্রা )

তুলনামূলকভাবে দেখতে গেলে চিলির ভূমিকম্পের প্রায় কাছাকাছি হলেও ক্ষতি খুব কমই হয়েছে এই ভূমিকম্পের দ্বারা। সুনামিতে কেবল ১২৮ জন মানুষ মারা পড়ে এখানে আর নষ্ট হয় ৩১১ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি। তবে তারপরেও ইতিহাসে এখন অব্দি দ্বিতীয় বৃহত্তম ভূমিকম্প হিসেবে জায়গা দখল করে রয়েছে এটি। ভূমিকম্পটির উত্পত্তিস্থল আলাস্কাতে হলেও এটির প্রভাব পড়ে গোটা কানাডাতেই। এছাড়াও উত্পত্তিস্থলের অনেকটা দূরে হাওয়াইয়েও শুরু হয় খানিকটা আলোড়ন। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, ১৯৬৪ সালে সংঘটিত হওয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ভূমিকম্পটি টানা তিন মিনিট ধরে চলেছিল।


৩. সুমাত্রার ভূমিকম্প ( ৯.১ মাত্রা )

পরিণামের দিক দিয়ে যদি ভূমিকম্পের ভয়াবহতা বিবেচনা করা হয় তাহলে এটা স্বীকার করতেই হবে যে, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ২০০৪ সালে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পটি পৃথিবীতে এখন অব্দি জন্ম নেওয়া ভূমিকম্পগুলোর ভেতরে অন্যতম ভয়াবহ। রিক্টর স্কেলের ৯.১ মাত্রার এই ভূমিকম্পে মারা যায় প্রায় ২২৭,৯০০০ জন মানুষ। সেই সাথে ঘরছাড়া হয়ে আশপাশের ১৪ টি দেশে আশ্রয় নেয় আরো ১.৭ কোটি মানুষ। তবে কেবল ভূমিকম্পই নয়, দুইদিন বাদে হঠাত্ করে মাটির লাভা উত্পন্ন হতে দেখা যায় এ অঞ্চলে। মনে করা হয় ভূমিকম্পের কারণেই হয়তো এমনটা হচ্ছে।