রোজা অবস্থায় অন্যের গীবত, ধূমপান ও দাঁত ব্রাশ করলে...

ইসলামিক শিক্ষা June 17, 2016 1,387
রোজা অবস্থায় অন্যের গীবত, ধূমপান ও দাঁত ব্রাশ করলে...

প্রশ্ন: ‘গীবত করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়’ কথাটি কি সঠিক?

উত্তর: রোজা অবস্থায় গীবত করলে রোজা ভাঙে না। তবে রোজার সওয়াব ও গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। গীবত কবিরা গোনাহ। কোরআনে কারিমে এবং হাদিস শরিফে এর ঘৃণ্যতা ও ভয়াবহতার কথা এসেছে। শুধু রোজা নয় সাধারণ সময়ই এটি খুবই নিকৃষ্টতম কাজ ও অভ্যাস।


আর রমজান মাসে রোজা অবস্থায় এর ভয়াবহতা আরও বেশি। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘রোজা হল (জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার) ঢাল, যে পর্যন্ত না তাকে বিদীর্ণ করা হয়। জিজ্ঞাসা করা হলো, কীভাবে রোজা বিদীর্ণ হয়ে যায়? নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মিথ্যা বলার দ্বারা অথবা গীবত করার দ্বারা।


মুফাসসির মুজাহিদ (রহ.) বলেন, দু’টি অভ্যাস এমন রয়েছে, এ দু’টি থেকে যে বেঁচে থাকবে তার রোজা নিরাপদ থাকবে- গীবত ও মিথ্যা।


প্রশ্ন: ধূমপান করলে রোজা নষ্ট হবে কী না?

উত্তর: জ্বী হাঁ, রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত ধূমপান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। এবং কাজা ও কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব হবে।


প্রশ্ন: আগরবাতি ও কয়েলের ধোঁয়া নাকে গেলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি?

উত্তর: আগরবাতি বা কয়েলের ধোঁয়া অনিচ্ছাকৃত নাকে বা গলার ভেতর চলে গেলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে আগরবাতি বা কয়েলের ধোঁয়া ইচ্ছাকৃত নাক দিয়ে টেনে ভিতরে নিলে রোজা ভেঙে যাবে। কিন্তু আগরবাতি বা কয়েলের ধোঁয়া ছাড়া শুধু ঘ্রাণ নিলে রোজা নষ্ট হবে না।


উল্লেখ্য যে, রোজার দিনে আগরবাতি না জ্বালানোই উচিত।


প্রশ্ন: রমজান মাসে অনেক সময় কোনো কোনো রোজাদারকে ভুলে পানাহার করতে দেখা যায়। পানাহারের সময় তাদেরকে বারণ করা বা না করা- আসলে করণীয় কী?

উত্তর: রমজান মাসে কোনো সুস্থ-সবল লোককে ভুলে পানাহার করতে দেখলে- তাকে রোজার কথা স্মরণ করিয়ে দিবে। তবে কোনো দুর্বল বা বৃদ্ধকে ভুলে পানাহার করতে দেখলে রোজার কথা স্মরণ না করানোই উত্তম।


প্রশ্ন: রমজান মাসে রোজা অবস্থায় নারীদের পিরিয়ড শুরু হলে দিনের বাকি সময় কি অনাহার থাকা জরুরি?

উত্তর: না, রোজা অবস্থায় পিরিয়ড শুরু হলে বাকি দিন পানাহার করতে পারবে। তদ্রূপ যতদিন মাসিক চলবে ততদিন রমজানের দিনের বেলায় পানাহার করা জায়েয। তবে অন্যদের সামনে খাবে না। অবশ্য রমজান মাসে দিনের বেলায় মাসিক বন্ধ হলে বাকি দিন পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি।


প্রশ্ন: রোজা অবস্থায় কি দাঁত ব্রাশ করা যাবে? এতে কি রোজা নষ্ট হয়ে যাবে?

উত্তর: রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা মাকরূহ। আর পেস্ট বা মাজন গলার ভেতরে চলে গেলে রোজাই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করা যাবে না। টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে ব্রাশ করতে হলে সাহরির সময় শেষ হওয়ার আগেই করে নিবে।