ছুটিতে ঘুরে আসুন সুভলং ঝরনা থেকে

দেখা হয় নাই June 9, 2016 1,259
ছুটিতে ঘুরে আসুন সুভলং ঝরনা থেকে

পাহাড়-হ্রদের নিবিড় নৈকট্যে আপনার মনে জাগিয়ে তুলবে ভিন্ন এক অনুভূতি। প্রতি বছর বর্ষা এলেই জেগে উঠে পাহাড়ের খাদে লুকিয়ে থাকা সুভলংয়ের ঝরনাগুলো।


পার্বত্য রাঙামাটির বিস্তৃত পাহাড় রাশিতে অসংখ্য ঝরনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এদের মধ্যে সুভলংয়ের ঝরনাগুলো যে কারো মন কাড়বে। এখানে প্রায় ৭/৮টি ঝরনা আছে। তবে বড় ঝরনা একটিই, যা সুভলং ঝরনা নামে খ্যাত।


মৌসুমী এসব ঝরনার আয়ুষ্কাল ৩ থেকে ৪ মাস। মূলত: বর্ষাকালজুড়েই প্রবাহিত হয় এসব ঝরনাধারা।


প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক সুভলং ঝরনায় অবগাহন করতে আসেন। অনেক পর্যটক রাঙামাটি এসেও সুভলং ঝরনা না দেখেই ফিরে যান পর্যাপ্ত তথ্যেও অভাবে। পর্যটন করপোরেশন এ ব্যপারে কোনো তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা না করায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগেই এই ঝরনায় বেড়াতে হয় অনেককে। তবে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঝনরাকে 'শিলার ডাক' নাম দিয়ে এই স্থানটিতে কিছু উন্নয়ন কাজ হয়েছে।


রাঙামাটি শহর থেকে সুভলং ঝরনার অপরূপ রূপ অবগাহন করতে আসা পিউ, তমা, এ্যানী ও তৃষা এ চার বন্ধু বলেন, প্রকৃতির এই ঝরনাধারা দেখতে আমরা প্রতিবছরই রাঙামাটি শহর থেকে ছুটে আসি। ঝরনার পানি যখন গায়ে স্পর্শ করে তখন মনের মধ্যে এক অজানা অনুভূতি জাগে।


ঢাকা থেকে সুভলং এ বেড়াতে আসা পর্যটক জয়ন্ত ও তার সহধর্মিনী জানান, রঙামাটিতে আমাদের এ প্রথম বেড়াতে আসা। সুভলং ঝরনার এই রূপ দেখে আমরা মুগ্ধ।


রাঙামাটি শহর থেকে লঞ্চ অথবা ভাড়া করা ট্রলারে সুভলং আসতে পারেন। শহরের রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ২টা পর্যন্ত লঞ্চ ছেড়ে যায় বিভিন্ন উপজেলার উদ্দেশ্যে। এর মধ্যে লংগদু, বাঘাইছড়ি, জুরাইছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যেকোন লঞ্চে উঠলেই সুভলং পৌঁছে যেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে আবারও নৌকা ভাড়া করে ঝরনাস্থলে আসতে হবে।


সবচেয়ে ভালো হয় যদি দলবেঁধে এসে রিজার্ভবাজার, তবলছড়ি, বনরুপা অথবা পর্যটন কমপ্লেক্স থেকে ট্রলার ভাড়া করা যায়। এতে ইচ্ছেমতো ঝরনাস্থলে সময় কাটানো যাবে। ট্রলার ভাড়া দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। এটা নির্ভর করবে যাত্রীসংখ্যা এবং ট্রলারের আকৃতির ওপর। স্পিড বোট ভাড়া করেও ঝরনাস্থলে যাওয়া যায়। ভাড়া প্রতি ঘণ্টায় ১৫০০ টাকা। সময় লাগবে ২০ থেকে ২৫ মিনিট।


সুভলং এলাকায় কোনো থাকার ব্যবস্থা নেই। সুতরাং আপনাকে দিনে দিনেই ফিরে আসতে হবে। তাছাড়া ওখানে ভালো কোনো খাবার হোটেলও নেই। তাই খাবার আপনারা সঙ্গে নিয়ে নিলেই ভালো।


সুভলং ঝরনার প্রায় কাছাকাছি অবস্থিত ২২০০ ফুট উঁচু ‘সুভলং পাহাড়’। পাহাড় শীর্ষে রয়েছে সেনাক্যাম্প ও টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার। পাহাড়ে উঠার জন্য চমৎকার সিঁড়ি কাটা আছে।


অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের জন্য পাহাড়চূড়া থেকে চারপাশের মনোরম দৃশ্যাবলি আপনার ভেতরে লুকিয়ে থাকা কবিত্বকে জাগিয়ে তুলবে নিশ্চিত।