পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাস: কাজ শুরু করে ফোন ‘বন্ধ’ হলে

মোবাইল টিপস June 3, 2016 1,868
পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাস: কাজ শুরু করে ফোন ‘বন্ধ’ হলে

মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের আতংক — পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাস — কাজ শুরু করে মোবাইল ফোন ‘বন্ধ’ করার পর থেকে। অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমে এর কোনো প্রভাব না পাওয়া গেলেও এন্ড্রয়েড নির্ভর স্মার্টফোনগুলোর ক্ষেত্রে গোটা প্রাইভেসি ব্যবস্থা এতে ভেঙ্গে যায়। তাই, আপনার এন্ড্রয়েড ফোনে লাইসেন্সড এন্টিভাইরাস ইনস্টল না করা থাকলে নিরাপত্তাজনিত কোনো ইস্যুতে বা ট্র্যাকড হওয়ার শঙ্কা থাকলে এখন থেকে সেটি সুইচ অফ করার সময় অবশ্যই ব্যাটারিটি ফোন থেকে আলাদা করে রাখবেন।


বিভিন্ন ফ্রি অ্যাপ্স-এর সাথে সংযুক্ত হয়ে ফোনে জায়গা করে নেয়া এই ভাইরাস আসলে কখনোই বন্ধ হতে দেয় না আপনার এন্ড্রয়েড ডিভাইসকে। আপনি যখন পাওয়ার বাটন চাপেন, তখন সে কেবল বন্ধ হওয়ার ভান করে! মানে, আপনার মোবাইল ফোনটি বন্ধ হওয়ার সময় যে আচরণ করে, পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাসও ঠিক তাই করে স্ক্রিনের বাতি নিভিয়ে দেয়।


এরপর আপনি ফোন ‘বন্ধ’ আছে ভেবে যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন, তখন পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাস ঘুম থেকে উঠে তার কাজ শুরু করে। যথারীতি ভাইরাসের কাজ মানে তো আর ‘হাউসকিপিং’ না – সে এক ধ্বংসযজ্ঞ!


কী ধরণের ক্ষতি করতে পারে?


আপনি ফোন বন্ধ করলে হ্যাকারের নির্দেশ মোতাবেক পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাস তার প্রোগ্রামে আগে থেকে ঠিক করে দেয়া সার্ভারে প্রথমে পাঠাতে শুরু করে আপনার কল লিস্ট (হ্যাকার চাইলে এর মাধ্যমে তার কাছে স্বয়ংক্রিয় কলও করাতে পারে), কন্টাক্টস, এসএমএস এবং হোয়াটস অ্যাপসহ বিভিন্ন ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেঞ্জারের হিস্ট্রিসমূহ।


শুধু তাই নয়, ম্যালওয়্যারটি আপনার এন্ড্রয়েডের লক প্যাটার্নও মনে রাখতে পারে – ফলে, হ্যাকাররা চাইলে এর মাধ্যমে অবলীলায় যে কোনো সময় ঘেঁটেঘুঁটে দেখতে পারেন আপনার মোবাইলের অন্দরমহলও! মানে বুঝতেই পারছেন আপনি যতই ‘পড়শি যেন না জানে’ বলেন – আপনার ঘরের মানুষই তো তাদের জানিয়ে আসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে!!


এছাড়াও পাওয়ার অফ হাইজ্যাক ভাইরাস সমগোত্রীয় পাওয়ার স্পাই ম্যালওয়্যারের সাহায্যে বন্ধ থাকাকালীন থার্ড পার্টি তথা হ্যাকারকে ঠিকঠাকভাবেই জানাতে পারে আপনার অবস্থান, এমনকি আপনি যদি কখনো জিপিএস ব্যবহার না করেও থাকেন তাতেও তার বেগ পেতে হয় না আপনাকে খুঁজে বের করতে।


সিকিউরিটি কোম্পানিগুলোর মতে ইসরাইলী কিছু প্রযুক্তিবিদের সহায়তায় ইউনিভার্সিটি অব স্ট্যানফোর্ডের ছাত্রদের তৈরি করা এই ভাইরাস কাজ করে নেটওয়ার্ক এক্সেসের সাহায্যে।


সারকথা:


যেহেতু যে কোনো কম্পিউটারের চাইতে মুঠোফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক দুর্বল, তাই অবশ্যই মোবাইল ফোনে ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ইত্যাদি রাখা বা শেয়ার করার আগে অবশ্যই আপনার ফোনে ভালো মানের (যে কোনো) একটি এন্টিভাইরাস ইনস্টল করে নিন।